মেলবোর্ন টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৪৫.২ ওভারে অলআউট হয়ে গেছে অস্ট্রেলিয়া। ঘরের মাঠে অ্যাশেজে এর চেয়ে কম ওভারে অস্ট্রেলিয়া গুটিয়ে গেছে মাত্র দু'বার। দুটিই এই মেলবোর্নে, একবার ১৯০২ সালে, আরেকবার ২০১০ সালে। এবারের ইনিংসে স্টিভ স্মিথের দল করতে পেরেছে মাত্র ১৫২ রান।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের পর থেকেই মাঠের বাইরে ছিলেন প্যাট কামিন্স। পিঠের চোটের কারণে অ্যাশেজে খেলতে পারেননি পার্থ ও ব্রিসবেন টেস্টে। তবে অ্যাডিলেডে ফেরেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক। চোট কাটিয়ে ফেরার ম্যাচে দুই ইনিংসেই তিনটি করে উইকেট নিয়েছেন কামিন্স। দুই ইনিংসেই ইংল্যান্ডের জো রুটকে ফিরিয়েছেন তিনি। দুই ম্যাচ বাকি থাকতেই সিরিজ জিতে নেয়ায় শরীর বিবেচনায় বক্সিং ডে টেস্টে খেলবেন না ডানহাতি এই পেসার।
অস্ট্রেলিয়া সফরে ইংল্যান্ডের জন্য আরেকটি বড় ধাক্কা হয়ে এসেছে জফরা আর্চারের চোট। ইংল্যান্ডের এই পেস বোলার সাইড স্ট্রেইনের কারণে চলমান অ্যাশেজ সিরিজের বাকি অংশ থেকে ছিটকে গেছেন। এর ফলে বক্সিং ডেতে মেলবোর্নে চতুর্থ টেস্ট এবং নতুন বছরে সিডনিতে পঞ্চম টেস্টে খেলতে পারবেন না তিনি।
অস্ট্রেলিয়ায় অ্যাশেজ সিরিজ হাতছাড়া হওয়ার পর ইংল্যান্ড দলের কোচ ব্রেন্ডন ম্যাককালামের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। প্রথম তিন টেস্টেই হার মানায় সমালোচনার মুখে পড়েছে ইংলিশরা। কোচ পরিবর্তনের কথাও শোনা গেলেও ম্যাককালাম স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি দায়িত্ব চালিয়ে যেতে আগ্রহী।
অ্যাশেজ সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার কাছে আগেভাগেই হেরে যাওয়ায় বিষয়টিকে হালকাভাবে দেখছে না ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি)। দুই টেস্ট বাকি থাকতেই সিরিজ খুইয়েছে বেন স্টোকসের দল। এমন ব্যর্থতার পেছনে শৃঙ্খলাজনিত কোনো সমস্যা আছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দায়িত্ব দেয়া হয়েছে ইংল্যান্ড দলের ম্যানেজিং ডিরেক্টর রব কি'কে।
চলতি অ্যাশেজ সিরিজ থেকে ছিটকে গেছেন প্যাট কামিন্স। অ্যাডিলেড টেস্টের পর অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক যে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, সেটিই এবার নিশ্চিত হলো। কামিন্সের স্ট্রেস সমস্যার কারণে তাকে নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যের ঝুঁকি নিতে রাজি নয় অস্ট্রেলিয়ার নির্বাচক ও মেডিক্যাল টিম। ফলে মেলবোর্ন বক্সিং ডে টেস্টসহ সিরিজের বাকি ম্যাচগুলোতে তাকে আর দেখা যাবে না।
অ্যাডিলেড টেস্ট শেষে যে আভাস দিয়েছিলেন প্যাট কামিন্স, সেটিই এবার বাস্তব হলো। মেলবোর্নে বক্সিং ডে টেস্টে খেলছেন না অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক। পিঠের চোট থেকে ফিরলেও সিরিজের ফল নির্ধারিত হয়ে যাওয়ায় তাকে বিশ্রাম দেয়া হয়েছে। একই টেস্টে থাকছেন না নাথান লায়নও। হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে পড়ে তিনি ছিটকে গেছেন বছর শেষের এই ম্যাচ থেকে।
ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম (ডিআরএস) নিয়ে আলোচনা সমালোচনা অনেক দিনের। চলতি অ্যাশেজেও স্নিকো মিটারের ভুল চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে টেকনোলোজিও শেষ কথা নয়। অস্ট্রেলিয়ার তারকা পেসার মিচেল স্টার্ক ডিআরএস নিয়ে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
চোট থেকে সেরে উঠতে না পারায় পার্থে অ্যাশেজের প্রথম টেস্টে খেলতে পারেননি প্যাট কামিন্স। ব্রিসবেন টেস্টেও দর্শক হিসেবে ছিলেন ডানহাতি এই পেসার। তবে অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট অধিনায়ক চোট কাটিয়ে ফেরেন অ্যাডিলেডে। গত জুলাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ খেলার পর থেকেই বাইরে ছিলেন কামিন্স। অ্যাশেজে তৃতীয় টেস্টে ফিরেই অবশ্য বল হাতে আলো ছড়িয়েছেন তিনি।
মেলবোর্ন স্টার্সের বিপক্ষে দুই উইকেট নিলেও বল হাতে খরুচে ছিলেন রিশাদ হোসেন। তবে মেলবোর্ন রেনেগেডসের বিপক্ষে বোলিংয়ে আলো ছড়ালেন বাংলাদেশের তারকা লেগ স্পিনার। প্রথম তিন ওভারে মিতব্যয়ী বোলিং করলেও উইকেটশূন্য ছিলেন তিনি। তবে নিজের শেষ ওভারে বোলিংয়ে এসে ফিরিয়েছেন জেক ফ্রেজার-ম্যাকগার্ককে।
অ্যাডিলেড ওভালে ৮২ রানের জয়ে মাত্র ১১ দিনের মধ্যেই এবারের অ্যাশেজ সিরিজ নিশ্চিত করেছে অস্ট্রেলিয়া। টস জিতে আগে ব্যাট করে স্বাগতিকরা তোলে ৩৭১ রান। জবাবে ইংল্যান্ড ২৮৬ রানে অলআউট হয়ে প্রথম ইনিংসেই পিছিয়ে পড়ে। দ্বিতীয় ইনিংসে নিজেদের মাটিতে ট্রাভিস হেডের বিধ্বংসী ১৭০ রানের ইনিংসে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি অস্ট্রেলিয়ার হাতে চলে যায়।
তৃতীয় টেস্টে ইংল্যান্ড শেষবারের মতো লড়াইয়ে ফিরেছিল, কিন্তু বড়দিনের আগে কোনো অলৌকিক গল্প লেখা হলো না। শেষ দিনের দুপুর পর্যন্ত টেনে নেয়া লোয়ার অর্ডারের সাহসী প্রতিরোধ সত্ত্বেও অস্ট্রেলিয়া ঠান্ডা মাথায় ম্যাচ শেষ করে দেয়। ক্যাচ ধরা থেকে শুরু করে ম্যাচের চাপ সামলানো, সবকিছুতেই তারা ছিল নিখুঁত। সিরিজের মাত্র ১১তম দিনেই টানা তৃতীয় জয়ে ২০২৫-২৬ অ্যাশেজ নিজেদের করে নেয় স্বাগতিকরা।