আসন্ন বিপিএলে ফিক্সিং দমাতে এবার কঠোর অবস্থান নিয়েছে বিসিবি। বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে নিজেদের পরিকল্পনা জানিয়েছেন বিসিবির ইন্টিগ্রিটি ইউনিটের প্রধান অ্যালেক্স মার্শাল। তিনি জানিয়েছেন ৯০০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন তারা পেশাদারিত্ব ও গোপনীয়তার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছেন। তদন্ত এখনও চলমান রয়েছে।
গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, 'গত মাসে বিপিএল ফিক্সিং তদন্তের স্বাধীন কমিটির কাছ থেকে ৯০০ পৃষ্ঠার একটি তদন্ত প্রতিবেদন পেয়েছি। সেখানে ৬০ জন সাক্ষী এবং অভিযুক্তের নাম ছিল। আমি আমার নতুন ইন্টেগ্রিটি ইউনিটকে নিয়ে সেই রিপোর্ট পর্যবেক্ষণ করছি। পুরো ইন্টেগ্রিটি ইউনিটটাই বিসিবির মধ্য থেকে নতুন করে গঠন করা হয়েছে। এখানে আমার দুটি মূলনীতি থাকবে- পেশাদারিত্ব এবং গোপনীয়তা।'
ফ্র্যাঞ্চাইজি এবং ক্রিকেটারদের কঠোর নিয়মের মধ্যে আনার হুঁশিয়ারি দিয়ে মার্শাল বলেন, 'পিএমও এরিয়াতে (প্লেয়ার এবং ম্যাচ অফিশিয়াল এরিয়া) কোনো ধরনের মোবাইল ফোন এবং স্মার্টওয়াচ ব্যবহার করা যাবে না। যে মুহূর্তে মাঠে ঢুকবে খেলোয়াড় এবং টিম ম্যানেজমেন্টের সদস্যরা, সেই থেকে ম্যাচের শেষ বল পর্যন্ত কেউ কোনো ডিভাইস ব্যবহার করতে পারবে না। ডাক্তার, টিম ম্যানেজার এবং মিডিয়া ম্যানেজাররা নিজেদের জরুরী প্রয়োজনে ফোন ব্যবহার করতে পারবে।'
তিনি আরও যোগ করেন, 'পিএমওএ এক্রেডিটেশন পাওয়া ব্যক্তিবর্গ ব্যতীত কেউ সেখানে প্রবেশ করতে পারবে না। সেক্ষেত্রে তিনি যত শক্তিশালী এবং ক্ষমতাবান ব্যক্তিই হোক না কেন। পিএমওএ এক্রেডিটেশন পাওয়া কেউ যদি ভেতরে থেকে বাইরে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাতক্ষণিকভাবে তার এক্রেডিটেশন বাতিল করা হবে।'
বিপিএলের গত আসর চলাকালে ফোন ব্যাবহার হয়েছিল, এমন প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন মার্শাল। এর ফলে ম্যাচের সময় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বাইরে পাচার হয়েছে বলেও ধারণা মার্শালের। ফলে এবার আর একই কাজ হতে দেবে না বিসিবি। তাই কঠোর অবস্থানে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ইন্টিগ্রিটি ইউনিটের প্রধান।
তিনি বলেন, 'বিপিএলের তদন্ত রিপোর্টে আমি দেখেছি এর আগে পিএমওএতে মোবাইল ফোন ব্যবহার হয়েছে, যেটা আইসিসির অ্যান্টি করাপশন কোডের বিরোধী আচরণ। এর মাধ্যমে ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বাইরে পাচার হয়ে থাকতে পারে। এবারের আসরে পিএমওএ শক্তভাবে মানা হবে৷'
ক্রিকেটারদের অনুরোধ করে মার্শাল আরও বলেন, 'খেলোয়াড়রা কোনো ধরনের অসৎ কাজের প্রস্তাব পেলে তাতক্ষণিকভাবে ইন্টেগ্রিটি ইউনিটকে জানাবে। সে এটা তার পরিবার, সতীর্থ, মিডিয়া, টিম ম্যানেজমেন্ট কিংবা কারো সঙ্গে আলোচনা করবে না। ম্যাচ সংক্রান্ত কোনো ধরনের ইনসাইড ইনফর্মেশন কেউ শেয়ার করতে পারবে না।'
তিনি এ ক্ষেত্রে পূর্ব অভিজ্ঞতা কাজে লাগাবে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন। মার্শাল বলেন, 'যদি কারো বিরুদ্ধে অ্যান্টি করাপশন কোড ভাঙার চেষ্টা করে বাজিকরদের সে সিগন্যাল দেবে৷ আমি এ ধরনের প্রায় সব সংকেতের সঙ্গে পরিচিত। এগুলো কঠোরভাবে দমন করা হবে। বিসিবি ইন্টেগ্রিটি ইউনিট, ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিক, টিম ম্যানেজমেন্ট, মিডিয়া- সবার এক্ষেত্রে সমান দায়িত্ব রয়েছে।'