অভিজ্ঞতার দোহাই দিয়ে বাঁচাব না, তরুণদের নিয়ে সালাহউদ্দিন
ছবি: ক্রিকফ্রেঞ্জি
সবশেষ ভারত সফরে টি-টোয়েন্টি ও টেস্ট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন সাকিব আল হাসান। দেশের মাটিতে সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে নিজের শেষ টেস্ট খেলতে চাইলেও শেষ পর্যন্ত সেটা পারেননি। তবে বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়কের চাওয়া আগামী চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলে ওয়ানডে ক্রিকেট ছেড়ে দেয়া। তবে সাম্প্রতিক পরিস্থিতি, পারফরম্যান্স আর রাজনীতির বেড়াজালে সাকিব আন্তজার্তিক ক্যারিয়ার তাই শেষের পথে।
পঞ্চপাণ্ডব হিসেবে বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসা পাওয়া পাঁচ জনের মাঝে খেলছেন কেবল মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও মুশফিকুর রহিম। তারা দুজনও ঠিক কতদিন খেলবেন সেটার নিশ্চয়তা নেই। তাদের প্রস্থানে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার কমছে বাংলাদেশ। তরুণরা সুযোগ পেলেও সবাই প্রত্যাশিত পারফরম্যান্সে নিজেদের জায়গা ধরে রাখতে পারছেন না। ফলে প্রায়শই কথা উঠছে সিনিয়র ক্রিকেটাররাই ভালো ছিলেন।
অনেকের ধারণা, অভিজ্ঞতার অভাবে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে নিজেদের মেলে ধরতে পারছেন না তরুণ না। মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন অবশ্য অভিজ্ঞতার দোহাই দিয়ে তরুণদের বাঁচাতে চান না। বাংলাদেশের সিনিয়র সহকারী কোচ এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ব্যাটিং কোচের দায়িত্ব পাওয়া সালাহউদ্দিন মনে করেন, জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়া মানে দেশের সেরা ১১ ক্রিকেটারের একজন। ফলে অভিজ্ঞতার দোহাই না দিয়ে আপনাকে এখানে পারফর্ম করতেই হবে।
এ প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘এটা স্বাভাবিক। কারণ যারা ছিল তারা দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ ক্রিকেটে খেলেছে। পরবর্তী ব্যাকআপগুলো হয়ত আমরা তৈরি করিনি সেটা নিয়ে আমি আর টানাহেঁচড়া করতে চাই না তৈরি হয় নাই কেন। কিন্তু আপনি যখন বাংলাদেশ দলে খেলবেন তখন অভিজ্ঞতার কথাটাই বইলেন না কখনও।’
‘এটা আমার অনুরোধ কারণ যখনই আপনি জাতীয় দলে খেলতে এসেছেন তখন আপনি বাংলাদেশের সেরা ১১ জন ক্রিকেটারের মাঝে একজন। সুতরাং আপনাকে এখানে আমি অভিজ্ঞতার দোহাই দিয়ে আপনাকে বাঁচাব না। দুই ম্যাচ হোক, তিন ম্যাচ হোক তাকে সেটা ডেলিভারি করতেই হবে। এখানে অভিজ্ঞতার দোহাই দেয়াটা আসলে ঠিক হবে না।’
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে কোচিং করানোর সময় বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের কাণ্ডজ্ঞান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন সালাহউদ্দিন। বর্তমানে জাতীয় দলের ব্যাটিং কোচ হিসেবে ওয়েস্ট ইন্ডিজে দেশি ক্রিকেটারদের সঙ্গেই কাজ করছেন তিনি। যেখানে হাতে ধরে সবাইকে শেখানোর চেষ্টা করছেন সদ্যই জাতীয় দলের কোচিং স্টাফে যুক্ত হওয়া এই কোচ। সালাহউদ্দিন মনে করেন, কোচদের সব পরামর্শ মাথায় না নিয়ে নিজেরা সিদ্ধান্ত নিতে পারলে ভালো ক্রিকেটার হতে পারবেন তারা। তাতে বাংলাদেশের জন্যও ভালো হবে বলে বিশ্বাস তাঁর।
সালাহউদ্দিন বলেন, ‘ভালো-মন্দের সিদ্ধান্তটা ছেলেদের নেয়া উচিত। আমি সবসময় ছেলেদের বলি আমরা কোচরা তো অনেক কথা বলব, অনেক পরামর্শ দিব যেটা তোমার ভালো লাগবে, যেটা তোমার সঙ্গে যাবে সেটাই তোমার নেয়া উচিত। তাহলেই হয়ত তুমি ম্যাচিউড খেলোয়াড় হবে। মানসিক দিক যেটা বলে আমি মনে করি আমাদের ছেলেরা যদি নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিতে পারে সবকিছু আসলে কোচরা বলে দেবে তা না। তারা নিজেরাই যদি নিতে (সিদ্ধান্ত) পারে তাহলে তাদের জন্যই অনেক ভালো হবে।’
‘এখন উইকেট যদি কালকে খারাপ হয় তাহলে সেটা আমরা বাইরে থেকে বলে দিলে তো হবে না। সে তখন সিদ্ধান্ত নেবে আমি তখন কিভাবে খেলব। এই উইকেটে কত রান করা উচিত। এই জিনিসগুলো যদি আরেকটু উন্নতি করতে পারে তাহলে আমার মনে হয় তারা অনেক ম্যাচিউড খেলোয়াড় হবে। মানসিকভাবে এই দিকটা যদি ভালো করতে পারে তাহলে আমরাও অনেক ভালো দল হবো ভবিষ্যতে।’