তিলক-হার্দিকের ঝড় থামিয়ে ওয়াংখেড়েতে জিতল বেঙ্গালুরু

ছবি: ১৫ বলে ৪২ রানের ইনিংস খেলেও মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সকে জেতাতে পারেননি হার্দিক পান্ডিয়া, বিসিসিআই

ওভারপ্রতি মুম্বাইয়ের চাই ১৫.৩৭ রান। এমন সমীকরণের সময় ব্যাটিংয়ে এসে জশ হেজেলউডের ওভারে দুই ছক্কার সঙ্গে দুটো চারও মারলেন হার্দিক। পরের ওভারে ক্রুনাল পান্ডিয়াকে মেরেছেন টানা দুই বলে দুই ছক্কায়। শেষ পর্যন্ত বল হাতে ২ উইকেট নেয়া অধিনায়ক হার্দিক ব্যাট হাতে খেলেছেন ১৫ বলে ৪২ রানের অবিশ্বাস্য ইনিংস। তিলকের সঙ্গে গড়েছেন ৩৪ বলে ৮৯ রানের জুটি। তাদের দুজনের এমন ব্যাটিংয়ের পরও ঘরের মাঠে জয় পাওয়া হয়নি মুম্বাইয়ের।
মুম্বাইয়ের হারের দিনে হার্দিককে ১২ লাখ রুপি জরিমানা
৩০ মার্চ ২৫
শেষ তিন ওভারে তিলক, হার্দিক, মিচেল স্যান্টনার, দীপক চাহার ও নামান ধীরের উইকেট হারিয়ে স্বাগতিকরা থেমেছে ২০৯ রানে। মুম্বাইকে ১২ রানে হারিয়ে জয়ে ফিরেছে রজত পাতিদারের বেঙ্গালুরু। ২০১৫ সালের পর এবারই প্রথম ওয়াংখেড়েতে মুম্বাইকে হারাল তারা। আইপিএলের চলতি মৌসুমে চার ম্যাচের তিনটিতে জিতলেন বিরাট কোহলিা। বিপরীতে পাঁচ ম্যাচের মাত্র একটিতে জয় পেয়েছে হার্দিক-রোহিত শর্মাদের মুম্বাই।
ওয়াংখেড়েতে ২২১ রান তাড়ায় ভুবনেশ্বর কুমারকে ছক্কা মেরে শুরু করা রোহিত পরের ওভারে ইয়াশ দয়ালকে মেরেছিলেন টানা দুই চার। যদিও চোট কাটিয়ে দলে ফেরা ডানহাতি ওপেনার ব্যাট হাতে আবারও ব্যর্থ হয়েছেন। ইমপ্যাক্ট সাব হিসেবে খেলতে নেমে আউট হয়েছেন ১৭ রানে। দয়ালের ফুলার লেংথ ডেলিভারিতে ইনসাইড এজ হয়ে বোল্ড হতে হয়েছে রোহিতকে। আরেক ওপেনার রায়ান রিকেলটনও সুবিধা করে উঠতে পারেননি।

জশ হেজেলউডের লেংথে পড়ে বেরিয়ে যাওয়া ডেলিভারিতে লেগ বিফোর উইকেট হয়েছেন সাউথ আফ্রিকান এই ব্যাটার। রিকেলটন ফিরেছেন রোহিতের সমান ১৭ রান করেই। দ্রুতই দুই উইকেট হারানোর পর জুটি গড়ে তোলার চেষ্টা করেন সূর্যকুমার ও উইল জ্যাকস। যদিও ক্রুনাল পান্ডিয়া ও সুয়াশ শর্মার আঁটসাঁট বোলিংয়ের বিপক্ষে দ্রুত রান তুলতে পারছিলেন না তাদের দুজনের কেউই। ক্রুনালের বুদ্ধিদীপ্ত বোলিংয়ের ফাঁদে পড়ে ফিরতে হয় জ্যাকস।
বেঙ্গালুরুতে গুজরাটকে জেতালেন সিরাজ
২ এপ্রিল ২৫
বাঁহাতি স্পিনারের আচমকা গতিময় বাউন্সারে পুল করতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগ কোহলির হাতে ক্যাচ দিয়েছেন ১৮ বলে ২২ রান করা ইংলিশ ব্যাটার। সূর্যকুমারও প্রত্যাশা মিটিয়ে ব্যাটিং করতে পারেননি। দু’বার জীবন পেলেও ২৮ রানের বেশি করতে পারেননি তিনি। পেসার দয়ালের স্লোয়ার ডেলিভারিতে এক্সট্রা কভারের উপর দিয়ে খেলার চেষ্টায় টাইমিংয়ে গড়বড় করে মিড অফে লিয়াম লিভিংস্টোনকে ক্যাচ দিয়েছেন। ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই ঝড়ো ব্যাটিং করতে থাকেন হার্দিক।
বেঙ্গালুরুর বোলারদের উপর রীতিমতো তাণ্ডব চালাতে থাকেন ডানহাতি এই ব্যাটার। অধিনায়ককে দারুণভাবে সঙ্গ দিতে থাকেন তিলক। চার-ছক্কার বৃষ্টিতে ২৬ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি। যদিও পঞ্চাশ ছোঁয়ার পর ৫৬ রানের ইনিংস খেলে আউট হয়েছেন তিলক। ইনিংসের ১৯তম ওভারে হেজেলউডের ইয়র্কারে ছক্কা মারতে গিয়ে ফিরেছেন ৪২ রান করা হার্দিক। শেষ ওভারে তিন উইকেট নিয়েছেন ক্রুনাল। সবমিলিয়ে বাঁহাতি স্পিনারের শিকার ৪ উইকেট। এ ছাড়া হেজেলউড ও দয়াল দুটি করে উইকেট পেয়েছেন।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে ইনিংসের প্রথম ওভারেই ফিল সল্টের উইকেট হারায় বেঙ্গালুরু। ট্রেন্ট বোল্টের দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে ফিরেছেন ইংলিশ ওপেনার। দ্বিতীয় উইকেটে দারুণ এক জুটি গড়ে তোলেন কোহলি ও দেবদূত পাডিকাল। তারা দুজনে মিলে ৫২ বলে ৯১ রান যোগ করেন। পাডিকালের বিদায়ে ভাঙে তাদের দুজনের জুটি। সাবলীল ব্যাটিংয়ে ২৯ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন কোহলি।
যদিও পঞ্চাশ ছোঁয়ার পর ৪২ বলে ৬৭ রানের ইনিংস খেলে ফিরতে হয় তাকে। কোহলি ফিরলেও রান তোলার গতি থামেনি বেঙ্গালুরুর। অধিনায়ক রজতের দুইশ স্ট্রাইক রেটের ৩২ বলে ৬৪ রানের ইনিংসের সঙ্গে শেষের দিকে জিতেশ শর্মার ১৯ বলে ৪০ রানের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ২২১ রানের পুঁজি পায় তারা। মুম্বাইয়ের হয়ে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন বোল্ট ও হার্দিক।