টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে যেতে কার কী করতে হবে
ছবি: সংগৃহীত
অন্য দিকে বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফির আলোচনার ভিড়ে যেন আড়ালে পড়ে গিয়েছিল সাউথ আফ্রিকার সম্ভাবনা। ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ২০২৩-২৫ চক্রের পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠে পুরো খেলাই যেন বদলে দিয়েছে তারা। আগামী জুনে লর্ডসে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে খেলবে কারা? ভারত-অস্ট্রেলিয়া, ভারত-সাউথ আফ্রিকা নাকি অস্ট্রেলিয়া-সাউথ আফ্রিকা। এমন প্রশ্নের উত্তর পেতে অপেক্ষা করতে হবে আরও ক’টাদিন।
দেখে নেয়া যাক টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠতে কোন দলকে কী করতে হবে—
সাউথ আফ্রিকা— ৬৩.৩৩ শতাংশ, ২ ম্যাচ বাকি
ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কাকে হোয়াইটওয়াশ করে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠেছে সাউথ আফ্রিকা। বর্তমান চক্রে এখনও দুটি ম্যাচ বাকি তাদের। চলতি মাসের শেষের দিকে ঘরের মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজটি খেলবে তারা। দুই টেস্টের সিরিজে একটি জয় পেলেই ৬১.১১ শতাংশ পয়েন্ট নিয়ে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে জায়গা করে নেবে সাউথ আফ্রিকা। অস্ট্রেলিয়া কিংবা ভারতের যেকোন একটি দলের প্রোটিয়াদের ছাড়িয়ে যাওয়া সম্ভব। যদি দুটি টেস্টই ড্র হয় তাহলে সাউথ আফ্রিকার পয়েন্ট হবে ৫৮.৩৩ শতাংশ।
ভারত যদি অস্ট্রেলিয়াকে ৩-২ ব্যবধানে হারায় এবং শ্রীলঙ্কা সফরে গিয়ে অস্ট্রেলিয়া যদি দুই টেস্টেই জয় পায় তাহলে সাউথ আফ্রিকার ফাইনাল খেলার স্বপ্ন ভেস্তে যাবে। কারণ তখন অস্ট্রেলিয়ার ৬০.৫৩ শতাংশ এবং ভারতের পয়েন্ট হবে ৫৮.৭৭ শতাংশ হবে। সাউথ আফ্রিকা যদি ১-০ ব্যবধানে সিরিজ হারে তখন তাকিয়ে থাকতে হবে অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের দিকে। অস্ট্রেলিয়া যদি তাদের বাকি পাঁচ টেস্টে দুটির বেশি জয় না পায় কিংবা ভারত যদি একটির বেশি জয় এবং ড্র করতে না পারে তাহলে আশা বেঁচে থাকবে প্রোটিয়াদের।
অস্ট্রেলিয়া— ৬০.৭১ শতাংশ, ৫ ম্যাচ বাকি
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠতে ভারতের বিপক্ষে শেষ তিন টেস্টের দুটিতে জয় পেতে হবে অস্ট্রেলিয়া। এমনটা হলে শ্রীলঙ্কা সফরে গিয়ে অজিরা দুই টেস্টের সিরিজে হারলেও ফাইনাল খেলতে বাঁধা হবে না। কারণ তখন তাদের পয়েন্ট হবে ৫৫.২৬ শতাংশ। যা ভারতের ৫৩.৫১ এবং শ্রীলঙ্কার ৫৩.৮৫ শতাংশের চেয়ে বেশি। তখন অস্ট্রেলিয়ার উপরে থাকবে কেবল সাউথ আফ্রিকা। অস্ট্রেলিয়া যদি ২-৩ ব্যবধানে সিরিজ হারে তখন ভারতের পয়েন্ট হবে ৫৮.৭৭ শতাংশ।
তখন ভারতকে পেছনে ফেলতে শ্রীলঙ্কা সফরে দুই টেস্টেই জিততে হবে অজিদের। অন্যথায় সাউথ আফ্রিকা ও পাকিস্তান সিরিজের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে তাদের। প্রোটিয়ারা যদি পাকিস্তানের সঙ্গে একটির বেশি ম্যাচে ড্র করতে না পারা সেই আশায় থাকতে হবে। এমনটা হলে ৫৫.৫৬ শতাংশ পয়েন্ট হবে সাউথ আফ্রিকার। তখন শ্রীলঙ্কা একটি জয় এবং একটি ম্যাচে ড্র করলেই ফাইনালে উঠে যাবেন প্যাট কামিন্সরা।
ভারত— ৫৭.২৯ শতাংশ, ৩ ম্যাচ বাকি
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শেষ তিন ম্যাচের দুটিতে জয় এবং একটি ম্যাচ ড্র করতে পারলেই টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠবে ভারত। কারণ তখন তাদের পয়েন্ট হবে ৬০.৫৩ শতাংশ। ফলে তখন অন্তত পয়েন্ট টেবিলের দুইয়ে থাকা নিশ্চিত হবে রোহিত-কোহলিদের। এমনটা হলে অস্ট্রেলিয়া যদি শ্রীলঙ্কাতে গিয়ে ২-০ ব্যবধানে সিরিজও জিতে তবুও তাদের পয়েন্ট হবে ৫৭.০২ শতাংশ। যা সাউথ আফ্রিকা ও ভারতের চেয়ে কম।
ভারত যদি ৩-২ ব্যবধানে সিরিজ জিতে তাহলে ৫৮.৭৭ শতাংশ পয়েন্ট নিয়ে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের এবারের চক্র শেষ করবে। তখনও অস্ট্রেলিয়া ভারতের চেয়ে কম পয়েন্ট নিয়ে শেষ করতে পারে। যদি না তা শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে একটির বেশি ম্যাচ জিততে না পারে। কিন্তু ভারত যদি ৩-২ ব্যবধানে সিরিজ হারে তখন তাদের পয়েন্ট হবে ৫৩.৫১ শতাংশ। তখন শ্রীলঙ্কা, সাউথ আফ্রিকা এবং অস্ট্রেলিয়া সবাই তাদের ছাড়িয়ে যাবে। এমন অবস্থায় কেবল তখনই তারা ফাইনালে উঠতে পারবে যদি সাউথ আফ্রিকা দুই ম্যাচেই হারে এবং অস্ট্রেলিয়া ১-০ ব্যবধানে সিরিজ হারে।
শ্রীলঙ্কা— ৪৫.৪৫ শতাংশ, ২ ম্যাচ বাকি
শ্রীলঙ্কা যদি ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়াকে হোয়াইটওয়াশও করে তবুও তারা ৫৩.৮৫ শতাংশ পয়েন্ট নিয়ে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের এবারের চক্র শেষ করবে। ফলে তখন তাদের অন্যদের ফলাফলের উপর নির্ভর করতে হবে। ভারত, সাউথ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়া তাদের সবার শ্রীলঙ্কাকে ছাড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ আছে। ভারত যদি একটি ম্যাচে জয় পায় এবং অন্য একটি ম্যাচ ড্র করে তাহলে লঙ্কানদের চেয়ে কম পয়েন্ট নিয়ে শেষ করবে। অস্ট্রেলিয়ার ক্ষেত্রে সেটা ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জয় এবং দুই ম্যাচ ড্র। আর সাউথ আফ্রিকা যদি পাকিস্তানের কাছে দুই টেস্টেই হারে তাহলে তারা শ্রীলঙ্কার পেছনে থাকবে।
সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে দুই টেস্টের সিরিজে জিতলেও টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে খেলবে এমন সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। বাবর আজম, শান মাসুদ, শাহীন শাহ আফ্রিদিদের কেবল কাগজে-কলমেই সম্ভাবনা আছে। এদিকে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের দৌড় থেকে আগেই ছিকে গেছে নিউজিল্যান্ড, ইংল্যান্ড, বাংলাদেশ এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ।