উসমান খাওয়াজার সঙ্গে ওপেনিং করা ব্যাটারদের একের পর এক ব্যর্থতায় ভারতের বিপক্ষে শেষ দুই টেস্টের জন্য ডাকা হয় কনস্টাসকে। মেলবোর্নে সিরিজের চতুর্থ টেস্টে অভিষেকও হয় তাঁর। তরুণ ব্যাটার হিসেবে অন্য সবার মতোই শুরুটা হয়েছিল ডানহাতি ব্যাটারের। অভিষেকেই বুমরাহর সামনে পড়ে যাওয়ায় ডানহাতি পেসারের চ্যালেঞ্জটা সামলানোটা কঠিন হয়ে পড়ে। ভারতীয় পেসারের করা প্রথম ওভারে কনস্টাস দিয়েছেন মেডেন।
বুমরাহর পরের ওভারে অবশ্য দুই রান নিতে পেরেছিলেন। তৃতীয় ওভারে আবার মেডেন দেন অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার। অর্থাৎ বুমরাহর বিপক্ষে খেলা প্রথম ১৮ বলে নিতে পেরেছিলেন মাত্র ২ রান। তবে বুমরাহর চতুর্থ ওভারে ঝড় তোলেন তিনি। ডানহাতি পেসারের সেই ওভারে ২ চার ও ছক্কায় নিয়েছেন ১৪ রান। একটু পর আরও আগ্রাসী হয়ে ১৮ রান নেন কনস্টাস। ওমন ব্যাটিংয়ে অভিষেকেই পেয়ে যান হাফ সেঞ্চুরি।
বুমরার বিপক্ষে স্কুপ, রিভার্স স্কুপ ও র্যাম্প শটে সবাই নজর কেড়েছিলেন কনস্টাস। অভিষেকে বাজিমাত করলেও পরের তিন ইনিংসে ছিলেন একেবারে ব্যর্থ। তিন ইনিংস মিলিয়ে করতে পেরেছিলেন ৫৩ রান। রিকি পন্টিং ওই সময় মন্তব্য করেছিলেন এমন বেপোরোয়া শট খেলে টেস্টে ওপেনার হিসেবে বেশিদিন টিকতে পারবেন না। শেষ পর্যন্ত হয়েছেও তাই। ওয়ার্নার মনে করেন, বুমরাহকে সামলানোর মন্ত্র সবার সঙ্গে ব্যবহার করার ফলেই এমন দশা হয়েছে কনস্টাসের। ইংল্যান্ডের বুমরাহ মতো কেউ না থাকায় ভয়ের কিছু দেখছেন না তিনি।
অস্ট্রেলিয়ার সাবেক ওপেনারের বিশ্বাস, কনস্টাস অনেক দূরে যাবে। এ প্রসঙ্গে ওয়ার্নার বলেন, ‘ওদের (ইংল্যান্ড) তো জাসপ্রিত বুমরাহ নেই, কাজের তার দুর্ভাবনার কোনো ব্যাপার নেই। দারুণ কিছু ফাস্ট বোলার ওদেরও আছে, তবে সে সেসব সামলাতে পারবে। গত বছর, আমার মনে হয়েছে উপলক্ষ তাকে পেয়ে বসেছিল। তার মাথায় এটা ঢুকে গিয়েছিল যে, বুমরাহকে খেলার একমাত্র পথ এটিই (আক্রমণ করা) এবং পরে অন্য বোলারদেরও সেভাবে খেলে ফেলেছে।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘অন্য বোলারদের সামনে নিজের খেলা বদলানোর প্রয়োজন ছিল না তার। সে স্রেফ উইকেটে টিকে থেকে নিজের স্বাভাবিক ব্যাটিং করতে পারত। সে যদি এই কাজটা করতে পারে এবং বিভিন্ন ধাপের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে, আমার মনে হয়, অনেক দূর যাবে সে।’
অস্ট্রেলিয়ার হয়ে এখনো পর্যন্ত ৫ টেস্ট খেলেছেন কনস্টাস। অভিষেকে হাফ সেঞ্চুরি পাওয়ার পরের ৯ ইনিংসে পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস নেই একটিও। সর্বোচ্চ ইনিংসটি ২৫ রানের, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। দুইটি ডাকও আছে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনারের। ওয়ার্নার অবসর নেয়ার পর থেকেই খাওয়াজার সঙ্গে নতুন নতুন ওপেনার খেলানোর চেষ্টা করছে অস্ট্রেলিয়া। নাথান ম্যাকসুয়েনি ব্যর্থ হয়ে বাদ পড়েছেন সবশেষ বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফিতেই।
পরবর্তী সময়ে কনস্টাস, স্টিভ স্মিথ, মার্নাস ল্যাবুশেন কিংবা ট্রাভিস হেডকেও ব্যবহার করা হয়েছে। অ্যাশেজের আগে আবারও নতুন করে ভাবতে হচ্ছে খাওয়াজার সঙ্গী নিয়ে। ওয়ার্নার অবশ্য কনস্টাসকেই সুযোগ দেয়ার পক্ষে। অস্ট্রেলিয়ার সাবেক ওপেনার মনে করেন, কনস্টাস যা করতে পারেন সেটা এখনো পুরোপুরি সবাই দেখেনি। ওয়ার্নারের ধারণা, চাপের কারণেই এমন দশা হয়েছে কনস্টাসের। সেই সঙ্গে তিনি এও জানান, তরুণ এই ওপেনার মারকুটে ব্যাটিংয়ের সঙ্গে ইনিংস গড়তেও জানেন।
এ প্রসঙ্গে ওয়ার্নার বলেন, ‘আমি চাইব, তারা (নির্বাচক কমিটি) যেন স্যামকে (কনস্টাস) ধরে রাখে এবং তাকে সুযোগ দেয়। অস্ট্রেলিয়া ‘এ’ দলের হয়ে সেঞ্চুরি করেছে সে। সেখানে দারুণ খেলেছে। স্যাম কনস্টাস আসলে যা করতে পারে বলে আমরা জানি, আমার মনে হয় না তা এখনও আমরা পুরোপুরি দেখেছি। গত বছর… সে সম্ভবত উপলক্ষের বিশালত্বে চাপা পড়েছিল এবং তার সামান্য কিছু ঝলক কেবল আমরা দেখেছি। কিন্তু আমি তাকে নানা সময়ে দেখেছি ইনিংস গড়ে তুলতে, দেখেছি দারুণ কিছু ইনিংস খেলতে এবং সেসব কিছুই তাকে করতে দেখতে চাই আমি।’