চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের শুরুটা হয়েছিল দুঃস্বপ্নের মতো। পাওয়ার প্লে শেষের আগেই পুরো বাংলাদেশকে হতাশ করে ড্রেসিং রুমে ফিরলেন সৌম্য সরকার, নাজমুল হোসেন শান্ত, মেহেদী হাসান মিরাজ, তানজিদ হাসান তামিম ও মুশফিকুর রহমান। লড়াই করতে যেখানে অন্তত ২৬০-২৮০ রান প্রয়োজন সেখানে ৩৫ রান তুলতেই ৫ উইকেট নেই বাংলাদেশের।
এমন শুরুর পর বাংলাদেশকে স্বপ্ন দেখিয়েছেন, লড়াইয়ে খানিকটা ফিরিয়ে জাকের আলী অনিক ও তাওহীদ হৃদয় জুটি। তাদের দুজনের ১৫৪ রানের রেকর্ড জুটিতেই শেষ পর্যন্ত ২২৮ রানের পুঁজি পায় বাংলাদেশ। দুবাইয়ে উইকেট হলেও সেই রান তাড়া করা কঠিন হওয়ার কথা ছিল না ভারতের জন্য। অথচ শুভমান গিলের সেঞ্চুরির পরও ভারত জিতেছে ৪৬.৩ ওভার খেলে। পাওয়ার প্লেতে এক উইকেট হারিয়ে ৬৯ রান তুললেও রিশাদ হোসেন ও মিরাজদের আঁটসাঁট বোলিংয়ে ১৪৪ রানে ৪ উইকেট হারায় ভারত।
যদিও রাহুল ও গিলের শেষের জুটিতে অনায়াসে ভারতকে প্রথম জয় এনে দিয়েছে। ম্যাচ শেষে মোহাম্মদ শামি জানিয়েছেন, বাংলাদেশের কাছে আরও একজন বাড়তি স্পিনার থাকলে তাদের কাজটা আরও কঠিন হতো পারতো। ক্রিকবাজের ম্যাচ পরবর্তী অনুষ্ঠানে শেবাগের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল মনের মধ্যে কিছুটা ভয় ধরেছিল কিনা। এমন প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশকে রীতিমতো উড়িয়ে দিয়েছেন ভারতের সাবেক এই ওপেনার।
এ প্রসঙ্গে শেবাগ বলেন, ‘আমার মনে হয় না কেউ নার্ভাস ছিল। সত্যি বলছি, আপনাদের কারণেই বাংলাদেশকে নিয়ে প্রশংসা করতে বাধ্য হয়েছি আমি। জানি না, আমার ভেতর কীসের ভয় ঢোকাতে চেয়েছিলেন আপনারা, যেন বড় কোনো দলের বিপক্ষে খেলছি আমরা। বাংলাদেশকে নিয়ে ভয়? এটা বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়া কিংবা পাকিস্তান নয় যে খানিকটা আনপ্রেডিক্টেবল। আমার মনে হয় না কোন সমর্থকের মনের মাঝে ১ শতাংশ সংশয় ছিল। আমি এটা মানি না। আমারই যদি না হয় তাহলে সমর্থকদের কই থেকে আসবে।’
জয়ের জন্য ৪৬.৩ ওভার খেলতে হলেও শেবাগ মনে করেন রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলি আউট হওয়ায় কিছুটা সময় নিচ্ছিলেন গিল। তিনি মনে করেন, তারা দুজন আউট না হলে ভারত ৩৫ ওভারেই ম্যাচ জিততো। শেবাগ বলেন, ‘খুবই সহজ একটা খেলা ছিল, ৪-৫ ওভার তো বাকিই ছিল। গিল তো একটু সময় নিয়ে খেলছিল। রোহিত বা কোহলির কেউ যদি আউট না হতো তাহলে এই ম্যাচ ৩৫ ওভারেই জিততাম। তারা আউট হয়ে গেছে এজন্য গিলকে কিছুটা সময় নিয়ে খেলতে হয়েছে। নয়ত তলোয়ারের মতো ব্যাট চালাতো।’
চতুর্থ ব্যাটার হিসেবে অক্ষর প্যাটেল যখন আউট হয়ে ফেরেন তখন জয়ের জন্য ভারতের প্রয়োজন ছিল ৮৫ রান। একটু পর ফিরতে পারতেন রাহুলও। ভারতের যখন ৬৩ রান প্রয়োজন তখন তাসকিন আহমেদের লেংথ ডেলিভারিতে মিড উইকেট দিয়ে খেলতে গিয়ে জাকেরের হাতে ক্যাচ দিয়েছিলেন। তবে সহজ ক্যাচ লুফে নিতে পারেননি জাকের। ক্যাচটা নিতে পারলে আরও কিছুটা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তো হতো ভারতকে।
এমনটা মনে করেন পার্থিব প্যাটেলও। একই শো’তে শেবাগকে উদ্দেশ্য করে সেই ক্যাচের ঘটনা সামনে এনে পার্থিব বলেন, ‘জাকের আলী যদি ওই সময় ক্যাচ ধরতো..তখনও ৭০ রান বাকি ছিল।’ পাশে থাকা শেবাগ প্রতিউত্তরে বলেন, ‘তখনও হার্দিক পান্ডিয়া, জাদেজা ছিল। এদের (বাংলাদেশ) জন্য তো কুলদীপ যাদবই যথেষ্ট ছিল।’