সবশেষ শ্রীলঙ্কা সফর পর্যন্ত ওয়ানডেতেই ছন্দেই ছিলেন জাকের। ৫০ ওভারের ক্রিকেটে ভালো করলেও টি-টোয়েন্টিতে রান করতে পারছিলেন না একদমই। গত এশিয়া কাপে একটি ম্যাচ বাদে বাকি সবগুলোতেই প্রত্যাশা মেটাতে পারেননি তিনি। এমনকি জ্বলে উঠতে পারেননি আফগানিস্তান সিরিজেও। টি-টোয়েন্টিতে টানা ব্যর্থতার প্রভাব পড়ে ওয়ানডেতে। আফগানদের সঙ্গে টি-টোয়েন্টির মতো ওয়ানডেতেও হাসেনি জাকেরের ব্যাট।
এমন অবস্থায় স্বাভাবিকভাবেই সমালোচনার মুখে পড়েন। টি-টোয়েন্টির প্রভাব ওয়ানডেতে পড়ায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের একটিতেও সুযোগ মেলেনি তাঁর। এমন কী দল থেকে বাদ পড়ার গুঞ্জনও ছিল। চট্টগ্রামে প্রথম টি-টোয়েন্টিতেও ছিলেন না তিনি। তবে ফেরানো হয় দ্বিতীয় ম্যাচে। যদিও আবারও সেই আগের মতোই ব্যর্থ হয়েছেন জাকের। রান না পাওয়ার চেয়েও ফিনিশার হিসেবে তাঁর খেলার ধরণ নিয়ে ব্যাপকভাবে প্রশ্ন উঠেছে।
জাকের এমনিতেও একটু লেগ সাইড নির্ভর ক্রিকেটার। অফ সাইডে প্রয়োজনের তাগিদে শট খেলতে পারলেও পছন্দটা লেগ সাইডে। সেই ম্যাচের অফ সাইডে ওয়াইড যাওয়া ডেলিভারি টেনে লেগ সাইডে খেলার প্রবণতায় সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। পাশাপাশি তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে ব্যাটিংয়ে নামানো হয়েছে রিশাদ হোসেন ও নাসুম আহমেদের পড়ে। সবমিলিয়ে মাঠে ও মাঠের বাইরে বাজে সময় কাটাতে হচ্ছে জাকেরকে। এমন অবস্থায় ছন্দ ফেরার জন্য তাকে খুব বেশি চিন্তিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন লিটন।
বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক বলেন, ‘এখান থেকে কামব্যাকের একটাই অপশন নিজের সাহস রাখা, খুব একটা চিন্তিত না হওয়া। কারণ চিন্তা করলে আপনার নেগেটিভ চিন্তাই বেশি আসবে, পজিটিভ আসবে না। যদি সে (জাকের) পজিটিভ চিন্তা করতে পারে তার জন্য খুবই ভালো। সবসময় বলব এরকম স্ট্রাগল যখন করে তখন নিজেকে ব্যাক করা, নিজেকে সময় না এবং যেসব মানুষগুলো সবসময় হেল্প করে তাদের সঙ্গে ওঠা-বসা করা। আমার মনে হয় সে শীঘ্রই কামব্যাক করবে, খুব ভালো মতো কামব্যাক করবে।’
জাকেরের মতো ব্যাটিংয়ে রানের দেখা পাচ্ছে না শামীম ও সোহান। তাদের ব্যর্থতা ব্যাপকভাবে ভোগাচ্ছে বাংলাদেশকে। প্রথম ম্যাচে খেলেছিলেন সোহান ও শামীম। পরের ম্যাচে একাদশ থেকে জায়গা হারান সোহান। ডানহাতি ব্যাটারের পরিবর্তে সুযোগ দেয়া হয় জাকেরকে। তৃতীয় ম্যাচে এসে বাদ পড়েছেন শামীম, আবারও ফেরানো হয় সোহানকে। এত ওলট-পালট করলেও তাদের কেউই পুরো সিরিজে ভালো ক্রিকেট খেলতে পারেননি, রানও করেননি। তবুও অধিনায়ক হিসেবে তাদের পক্ষেই ব্যাট ধরলেন লিটন।
বাংলাদেশের অধিনায়কের কাছে সবাই পরীক্ষিত। তবে কোচদের সঙ্গে কাজ করে আবারও ছন্দে যেন ফেরার চেষ্টা করেন সেই পরামর্শ দিয়েছেন লিটন। পাশাপাশি জানান, নতুন কাউকে সুযোগ দিলেও তারা যদি প্রত্যাশিত পারফরম্যান্স করতে না পারেন তাহলে রেজাল্টে পরিবর্তন আসবে না। লিটন বলেন, ‘দেখুন— আমি একটা কথা বললাম যেসব খেলোয়াড়রা এই মুহূর্তে খেলছে দলে তারা সবাই পরীক্ষিত। আপনার এরকম একটা-দুইটা সিরিজ যেতেই পারে। একটা খেলোয়াড়ের ৫-৬ টা ম্যাচ খারাপ যেতেই পারে, এর মানে সে খারাপ খেলোয়াড় না।’
‘সে নিজে থেকেও জানে তার কোন জায়গায় উন্নতি করতে হবে। আমার মনে হয় সেই জায়গায় ফোকাস দিবে, ব্যাটিং কোচের সঙ্গে কাজ করে কামব্যাক করার চেষ্টা করবে। আপনি প্রতিনিয়ত খেলোয়াড় পরিবর্তন করলে আপনার রেজাল্ট একই থাকবে। নতুন খেলোয়াড় যে আসবে সে যদি ভালো ফিডব্যাক না দেয় তাহলে একই জায়গায় থাকব। যারা ক্রিকেটটা খেলছে অনেকদিন ধরে তাদেরকে নিয়ে আরেকটু এগোলে হয়তবা রেজাল্টটা ভালো আসার সুযোগ আছে।’