বাংলাদেশকে ২৮০ রানে হারিয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল ভারত

ছবি:

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
চেন্নাই টেস্টে লড়াই চালাতে পারল না বাংলাদেশ। নাজমুল হোসেন শান্তর ৮২ রানের ইনিংসটি ছাড়া এ দিন দাঁড়াতে পারেননি কেউই। রবিচন্দ্রন অশ্বিনের স্পিনে ভর করে সহজেই ম্যাচ জিতে নিয়েছে ভারত। বাংলাদেশ অলআউট হয়েছে ২৩৪ রানে। ২৮০ রানের জয় পেয়েছে স্বাগতিকরা। একইসঙ্গে দুই ম্যাচ সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়েও গেছে দলটি।
চেন্নাই টেস্ট জিততে শেষ দুই দিনে বাংলাদেশের দরকার ছিল আরও ৩৫৭ রান। এমন সমীকরণ সামনে রেখে চার উইকেটে ১৫৮ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামে দলটি। চতুর্থ দিনের শুরুটা ভালোই করে বাংলাদেশ। দিনের প্রথম ৪৫ মিনিট উইকেট হারায়নি দলটি। সাকিব আল হাসান ও নাজমুল হোসেন শান্ত বেশ আস্থার সঙ্গে ব্যাট চালাতে থাকেন।
ব্যক্তিগত ১৭ রানে অবশ্য অল্পের জন্য বেঁচে যান সাকিব। রবীন্দ্র জাদেজার বল খেলতে গিয়ে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে যান তিনি। বল তার ব্যাটের বাইরের কানা ঘেঁষে চলে যায় পেছনে। কিন্তু গ্লাভসে জমাতে পারেননি ঋষভ পান্ত। ফলে স্টাম্পডও হননি সাকিব।
প্রথম ঘণ্টায় উইকেট হারায়নি বাংলাদেশ। কিন্তু বিপত্তি বাধে তারপরই। রবিচন্দ্রন অশ্বিনের ওভারে উইকেট বিলিয়ে দেন সাকিব। তার স্পিনকে সামনে এগিয়ে ব্লক করতে গেলে ব্যাকওয়ার্ড শর্ট লেগে ক্যাচ তুলে দেন সাকিব, যা লুফে নেন ইয়াশভি জায়সাওয়াল।
২৬ বলে ২৫ রান করে ফিরে যান সাকিব। এই নিয়ে সাত ইনিংসে কোনো হাফ সেঞ্চুরি নেই বাংলাদেশের অলরাউন্ডারের। ১৯৪ রানে পঞ্চম উইকেট হারাল বাংলাদেশ। অশ্বিন সাকিবকে ফেরানোর পর বাংলাদেশের ইনিংসে আঘাত হানেন রবীন্দ্র জাদেজা।

তিনি ফেরান লিটন দাসকে। জাদেজার অফ স্টাম্পের বাইরে পিচ করে টার্নে বেরিয়ে যাওয়া ডেলিভারি রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে খেলার চেষ্টা করার সময় বলটি ব্যাটের কানায় লেগে প্রথম স্লিপে যায়, ক্যাচটি সহজেই লুফে নেন রোহিত শর্মা। ১০ বলে এক রান আসে ইনফর্ম লিটনের ব্যাটে।
এরপর ৬ মারতে গিয়ে ফিরে যান মেহেদী হাসান মিরাজও। অশ্বিনের বল ক্রিজ ছেড়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে লং অনে ক্যাচ দেন আট রান করা মিরাজ। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রথম সাত উইকেটের পাঁচটিই নেন অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার অশ্বিন।
ব্যাটারদের আসা-যাওয়া দেখতে দেখতে অধৈর্য হয়ে উইকেট বিলিয়ে দেন শান্তও। এ দিন সেঞ্চুরির সুযোগ তৈরি করলেও জাদেজার বলে অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল বড় শট খেলার চেষ্টায় হাওয়ায় ভাসিয়ে দেন শান্ত। এক্সট্রা কভার থেকে দৌড়ে এসে দারুণ ক্যাচ নেন জসপ্রিত বুমরাহ। শান্তর ইনিংসটি ছিল আটটি চার ও তিনটি ছক্কায় সাজানো।
এরপর তাসকিন আহমেদ এবং হাসান মাহমুদের উইকেটের মাধ্যমে বাংলাদেশ অলআউট হয়ে যায় প্রথম সেশনের আগেই। এই ইনিংসে ৮৮ রান খরচায় ছয় উইকেট নেন অশ্বিন। ৫৮ রান খরচায় তিন উইকেট নেন জাদেজা। এ নিয়ে চারবার একই ম্যাচে সেঞ্চুরি ও ৫ উইকেট পেলেন অশ্বিন।
টেস্ট ইতিহাসে সর্বোচ্চ পাঁচবার একই ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নেয়ার কৃতিত্ব কেবলই ইংল্যান্ডের কিংবদন্তি ইয়ান বোথামের। এ ছাড়া দুইবার করে এই কীর্তি আছে স্যার গ্যারি সোবার্স, মুশতাক মোহাম্মদ, জ্যাক ক্যালিস, সাকিব আল হাসান ও রবীন্দ্র জাদেজার। প্রথম ইনিংসে ১১৩ রান করা এই অলরাউন্ডার ম্যাচসেরাও নির্বাচিত হন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
ভারত (প্রথম ইনিংস)- ৩৭৬/১০ (৯১.২ ওভার) (অশ্বিন ১১৩, জাদেজা ৮৬; হাসান ৫/৮৩, তাসকিন ৩/৫৫)
বাংলাদেশ (প্রথম ইনিংস)- ১৪৯/১০ (৪৭.১ ওভার) (শান্ত ২০, সাকিব ৩২, লিটন ২২, মিরাজ ২৭)
ভারত (দ্বিতীয় ইনিংস)- ২৮৭/৪ (৬৪ ওভার) (ইনিংস ঘোষণা) (গিল ১১৯*, পান্ত ১০৯; মিরাজ ২/১০৩)
বাংলাদেশ (দ্বিতীয় ইনিংস)- (লক্ষ্য ৫১৫ রান)- ২৩৪/১০ (৬২.১ ওভার) (জাকির ৩৩, শান্ত ৮২, সাকিব ২৫; অশ্বিন ৬/৮৮, জাদেজা ৩/৫৮)