পাঞ্জাবে আমি অসম্মানিত হয়েছিলাম: গেইল

ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ
পাঞ্জাবে আমি অসম্মানিত হয়েছিলাম: গেইল
ফাইল ছবি
Author photo
ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
· ১ মিনিট পড়া
কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে আইপিএল শুরু করা ক্রিস গেইল নিজের শেষ ম্যাচ খেলেছেন কিংস ইলেভেন জার্সিতে। আইপিএলে নিজের শেষ চার মৌসুমের সবকটিই খেলেছেন তাদের হয়ে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে মারকুটে ব্যাটিংয়ের জন্য ‘ইউনিভার্স বস’ খ্যাতি পাওয়া গেইল অসম্মানিত হয়েছিলেন পাঞ্জাবের হয়ে খেলার সময়। আইপিএলের জনপ্রিয় এই ফ্র্যাঞ্চাইজির বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ এনেছেন তিনি। পাঞ্জাবের এমন কাণ্ডে মানসিকভাবে ভেঙেও পড়েছিলেন গেইল।

২০০৯ সালে কলকাতার হয়ে প্রথমবার আইপিএল খেলেন গেইল। দুই মৌসুম পরই অবশ্য কলকাতা ছেড়ে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্সে যোগ দেন তিনি। ফ্র্যাঞ্চাইজিটির হয়ে টানা সাত মৌসুম খেলেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাবেক এই ব্যাটার। পরবর্তীতে ২০১৮ সালে প্রথমবার যোগ দেন পাঞ্জাবে। পরের কয়েক মৌসুমই খেলেছেন তাদের হয়ে। ৪ আসরে পাঞ্জাবের জার্সিতে খেলেছেন ৪১ ম্যাচ। করেছেন ১ হাজারের বেশি রান।

আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির পাশাপাশি আইপিএলেরও অন্যতম সেরা ব্যাটার গেইল। অবসর নেয়ার আগে ১৪২ ম্যাচে প্রায় ৫ হাজার রান করেছেন ৬ সেঞ্চুরি ও ৩১ হাফ সেঞ্চুরিতে। আইপিএলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংসের রেকর্ডটা এখনো তাঁর দখলে। পুনে ওয়ারিয়র্সের বিপক্ষে খেলেছিলেন ১৭৫ রানের ইনিংস। নিজের শেষ মৌসুম অর্থাৎ ২০২১ সালে পাঞ্জাবের হয়ে ১০ ম্যাচ খেলেছিলেন সাবেক এই ব্যাটার।

যদিও ওই সময়ে ব্যাট হাতে জ্বলে উঠতে পারছিলেন না তিনি। ১০ ম্যাচে ২১.৪৪ গড় ও ১২৫.৩২ স্ট্রাইক রেটে ১৯৩ রান করেছিলেন গেইল। পুরো টুর্নামেন্টে হাফ সেঞ্চুরি কিংবা সেঞ্চুরির দেখা পাননি ‘ইউনিভার্স বস’। এমন অবস্থায় টুর্নামেন্টের মাঝ পথেই আইপিএল ছেড়েছিলেন তিনি। ওই সময় জৈব সুরক্ষা বলয়ে হাঁপিয়ে ওঠার বিষয়টি সামনে এনেছিলেন। তবে কয়েক বছর পর পাঞ্জাব ফ্র্যাঞ্চাইজির বিরুদ্ধে বড়সড় অভিযোগ তুললেন তিনি।

সম্প্রতি শুভঙ্কার মিশ্রের পডকাস্টে গেইল বলেন, ‘পাঞ্জাবের সঙ্গে আমার আইপিএল সময় শেষের আগেই শেষ হয়েছিল। সত্যি বলতে, কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবে আমি অসম্মানিত হয়েছিলাম। আমার মনে হয়েছিল লিগের জন্য এত কিছু করা ও ফ্র্যাঞ্চাইজির মান বাড়ানোর পরও একজন সিনিয়র ক্রিকেটার হিসেবে আমাকে ভালোভাবে মূল্যায়ন করা হয়নি। তারা আমার সঙ্গে অনেকটা বাচ্চার মতো ব্যবহার করেছে। জীবনে প্রথমবার আমি মনে হচ্ছিল আমি হতাশায় ডুবে যাচ্ছি।’

পাঞ্জাবের প্রধান কোচ অনিল কুম্বলের সঙ্গে হওয়া আলোচনা সামনে এনে তিনি বলেন, ‘তোমান মানসিক স্বাস্থ্যের চেয়ে অর্থ গুরুত্বপূর্ণ নয়। আমি অনিলকে (কুম্বলে, তখনকার প্রধান কোচ) ফোন করে বলেছিলাম আমি দল ছেড়ে চলে যাচ্ছি। তখন সামনেই বিশ্বকাপ ছিল। আমরা সবাই তখন জৈব-বলয়ের মধ্যে আটকে ছিলাম। ওইটা আরও আমাকে মানসিকভাবে ভেঙে ফেলছিল। মুম্বাইয়ের বিপক্ষে শেষ ম্যাচের পর আমি ভেবেছিলাম, ‘এটার কোনো মানে নেই।’ আমি এখানে থাকলে হয়ত নিজের আরও ক্ষতি করে ফেলব।’

কুম্বলের সঙ্গে কথার বলার মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন গেইল। সেই বিষয়টিও সামনে এনেছেন তিনি। একই দলের হয়ে খেলতেন লোকেশ রাহুলও। গেইলের ছেড়ে যাওয়ার খবরে তাকে ফোন করেছিলেন ভারতের তারকা ব্যাটার। থেকে যাওয়ার পাশাপাশি ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটারকে ম্যাচ খেলার নিশ্চয়তাও দিয়েছিলেন। যদিও আগেই মনস্থির করায় আইপিএল ছেড়ে দেশে ফেরেন গেইল।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘অনিল কুম্বলের সঙ্গে কথা বলার সময় আমি ভেঙে পড়েছিলাম। কারণ আমি সত্যিই কষ্ট পেয়েছিলাম। আমি তার উপর হতাশ হয়েছিলাম। এমনকি ফ্র্যাঞ্চাইজিটি যেভাবে চলছিল সেটা নিয়েও। তখন লোকেশ রাহুল আমাকে ফোন করে বলেছিল, ‘ক্রিস, তুমি থেকে যাও। পরের ম্যাচে তুমি খেলবে।’ কিন্তু আমি বলেছিলাম, ‘তোমার জন্য শুভ কামনা।’ তারপর আমি ব্যাগ গুছিয়ে বের হয়ে গেছিলাম।’

আরো পড়ুন: ক্রিস গেইল