২০১২ সালের নভেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক দিয়ে বাংলাদেশের জার্সি গায়ে জড়ান সোহাগ গাজী। একই মাসে ওয়ানডে এবং পরের মাসে টি-টোয়েন্টিতেও অভিষেক হয় তাঁর। তিন বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ২০ ওয়ানডে এবং ১০টি করে টি-টোয়েন্টি ও টেস্ট খেলেছেন তিনি। তবে ২০১৫ সালের পর থেকে জাতীয় দলে নেই ডানহাতি এই স্পিনার।
আনুষ্ঠানিকভাবে অবসর না নিলেও অনেকাংশে সাবেক হয়ে গেছেন সোহাগ গাজী। জাতীয় দলে না থাকলেও সবশেষ কয়েক বছরে নিয়মিতই বরিশাল বিভাগের হয়ে এনসিএল খেলেছেন তিনি। এ ছাড়া ডিপিএল, বিপিএলেও খেলতে দেখা গেছে তাকে। গত বিপিএলে দুর্বার রাজশাহীর হয়ে খেলেছিলেন তিনি। ওই সময় বিপিএলের ফিক্সিং ইস্যুতে তদন্ত কমিটি তাকে ‘রেড জোন’-এ রেখেছে। এমন অবস্থায় এনসিএল টি-টোয়েন্টিতে তাঁর খেলা নিয়ে সংশয় ছিল।
যদিও শেষ পর্যন্ত বরিশালের হয়ে খেলেছিলেন তিনি। যেখানে বরিশালের হয়ে ৫ ইনিংসে ২ উইকেট নেয়া সোহাগ গাজী ৬ ইনিংসে করেছেন ৭৩ রান। ব্যাটিং-বোলিংয়ের পাশাপাশি ফিল্ডিংয়েও সুবিধা করতে পারেননি তিনি। বিসিবির কাছে এমন রিপোর্ট জমা দিয়েছে টিম ম্যানেজমেন্ট। যার ফলে তাকে বরিশাল বিভাগের স্কোয়াডে রাখেনি নির্বাচক প্যানেল। তবে সোহাগ গাজী মনে করেন, তাকে বাদ দেয়াটা একটা আকস্মিক ও রহস্যময় সিদ্ধান্ত।
এ প্রসঙ্গে চিঠির একটা অংশে সোহাগ গাজী লিখেছেন, ‘জাতীয় ক্রিকেট লিগ (এনসিএল) শুধু একটি প্রতিযোগিতা নয়, এটি আমার পেশাদার জীবনের মূল ভিত্তি, জীবিকার সংস্থান এবং ক্রিকেটের প্রতি আমার অবিচল প্রতিশ্রুতির প্রতিচ্ছবি। কিন্তু অত্যন্ত বেদনাহত চিত্তে জানাচ্ছি যে, এনসিএল ২০২৫-এর আসন্ন আসরে বরিশাল বিভাগের স্কোয়াড থেকে আমার নাম সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিতভাবে বাদ দেয়া হয়েছে। এই আকস্মিক ও রহস্যময় সিদ্ধান্ত একজন নিবেদিতপ্রাণ ক্রীড়াবিদের পেশাগত জীবন ও ভবিষ্যৎ প্রস্তুতির ওপর গুরুতর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।’
পারফরম্যান্সের পাশাপাশি সোহাগ গাজীর নামে দেয়া রিপোর্টের বড় অংশ জুড়ে ছিল ফিটনেস ইস্যু। ২০২১ সাল থেকে এখনো পর্যন্ত এনসিএলের ফিটনেস টেস্টে পাশ করতে পারেননি তিনি। ইয়ো ইয়ো টেস্টে ২০২১ সালে ১৬.৫, ২০২২ সালে ১৫.৩ এবং ২০২৩ সালে পেয়েছিলেন ১৬.১ মার্ক। চলতি বছর এনসিএল টি-টোয়েন্টির আগে জাতীয় স্টেডিয়ামের অ্যাথলেটিক্স ট্র্যাকে ১ হাজার ৬০০ মিটার দৌড়াতে হয়েছে ক্রিকেটারদের। যেখানে সোহাগ গাজীর লেগেছে সাড়ে সাত মিনিট।
ফিটনেস ইস্যুতে সোহাগ গাজী লিখেছেন, ‘আমার ফিটনেস নিয়েও তেমন কোনো সমস্যা নেই; আমি এরই মধ্যে সফলভাবে ফিটনেস টেস্ট দিয়েছি এবং আমার মতো একই ধরনের ফিটনেস মান নিয়ে অনেকেই এবারের এনসিএলে অংশ নিচ্ছেন। মহোদয়, আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে, দেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ে প্রতিনিধিত্ব করা একজন পেশাদার ক্রীড়াবিদের জন্য, তাঁর বাদ পড়ার সুস্পষ্ট ও যৌক্তিক কারণ অবগতহওয়া একটি মৌলিক ও ন্যায়সঙ্গত অধিকার।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘একজন অভিজ্ঞ এবং নিবেদিতপ্রাণ ক্রিকেটারের প্রতি মানবিক ও পেশাদার বিবেচনা দেখিয়ে আপনি ব্যক্তিগতভাবে বিষয়টি বিবেচনা করে এনসিএল ২০২৫-এর বরিশাল বিভাগের স্কোয়াডে আমার অন্তর্ভুক্তির জন্য বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি। আমার আশা, আপনার ন্যায়বিচারের ছোঁয়ায় আমার খেলার সুযোগ পুনরুদ্ধার হবে।’