দ্বিতীয় দিনের সকালটা পুরোপুরি ছিল মুশফিকের। ম্যাথু হামফ্রিজের প্রথম ওভার মেডেন খেলেন তিনি।। তবে পরের ওভারেই অন সাইডে খেলে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছে যান অভিজ্ঞ ব্যাটার। ১৯৫ বলে পাঁচটি চারে সেঞ্চুরি করেন মুশফিক। শততম টেস্টে সেঞ্চুরি করা বিশ্বের ১১তম ব্যাটার বনে যান এই ক্রিকেটার। সব মিলিয়ে টেস্ট ক্যারিয়ারের মুশফিকের ১৩তম সেঞ্চুরি এটি। এই ফরম্যাটে বাংলাদেশের হয়ে এটিই সর্বোচ্চ সেঞ্চুরির রেকর্ড।
মুশফিকুর রহিমের আগে টেস্টে ১০০ ম্যাচ খেলেছেন ৮৩ জন ক্রিকেটার। এদের মধ্যে ১০ জন শুধু শততম টেস্টে সেঞ্চুরিও করতে পেরেছেন। মুশফিক এই ক্লাবে আজ সকাল সকালই প্রবেশ করেন। তার শতকের পরের বলেই চার মেরে ফিফটি পূর্ণ করেন লিটন, সঙ্গে পূরণ করেন জুটির শতকও।
মাইলফলক স্পর্শের পর অবশ্য বেশীক্ষণ ক্রিজে টিকতে পারেননি মুশফিক। হামফ্রিজের হালকা লাফানো ডেলিভারিতে স্লিপে ধরা পড়েন অভিজ্ঞ ব্যাটার। পাঁচটি চারে ২১৪ বলে ১০৬ রান করে আউট হন মুশফিক। তার বিদায়ে ক্রিজে এসে লিটনের সঙ্গে ৫০ রানের জুটি গড়েন মেহেদি হাসান মিরাজ।
লিটন নিজেও হাঁটতে থাকেন সেঞ্চুরির পথে। গ্যাভিন হোয়ের লেগ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারি প্যাডেল সুইপ করে বাউন্ডারি হাঁকান লিটন, পৌঁছে যান নিজের পঞ্চম টেস্ট শতকে। ১৫৮ বলে ক্যারিয়ারের পঞ্চম সেঞ্চুরি করার পথে সাতটি চারের সঙ্গে দুটি ছক্কা মারেন উইকেটরক্ষক ব্যাটার।
এরপর লাঞ্চ বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। লাঞ্চের পর লিটনকে এলবিডাব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেছিলেন হামফ্রিজ। বেশ কিছুক্ষণ ভেবে রিভিউ নিলেন লিটন। রিপ্লেতে দেখা যায়, লেগ স্টাম্পের বাইরে দিয়ে চলে যেত বল। তাই ১০৫ রানে বেঁচে যান বাংলাদেশের উইকেটরক্ষক-ব্যাটার।
এরপর মিরাজকে সঙ্গে নিয়ে ১০০ রানের জুটি গড়েন লিটন। তবে জুটির শতকের পর দুজনের কেউই উইকেটে টিকতে পারেননি। পরপর দুই ওভারে আউট হন তারা। গ্যাভিন হোয়ের বলে ক্যাচ দিয়ে প্রথমে জীবন পান মিরাজ। তবে এক বল পরই ক্যাচ আউট হয়ে যান ১০৭ বলে ৪৭ রান করা মিরাজ।
পরের ওভারে লিটনকে আউট করেন হামফ্রিজ। ১২৮ রানে থামেন লিটন। এরপর অবশ্য নীচের সারির ব্যাটাররা ছোট ছোট পুঁজিতে দলের রানই বাড়িয়েছেন। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ অল আউট হয় ৪৭৬ রানে, ম্যাকব্রাইন নেন ছয় উইকেট।
নিজেদের প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালোই করেন আয়ারল্যান্ডের দুই ওপেনার পল স্টার্লিং ও অ্যান্ডি বালবির্নি। প্রথম দশ ওভার উইকেটশূন্য কাটিয়ে দিয়েছিল আয়ারল্যান্ড। তবে ১১তম ওভারে ব্রেক থ্রু দেন সৈয়দ খালেদ আহমেদ। এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরেন স্টার্লিং৷ ২৭ রান করে ফিরে যান অভিজ্ঞ এই ওপেনার।
৪১ রানে ১ উইকেট হারানো আইরিশদের হাল ধরার চেষ্টা করেন অ্যান্ডি বালবির্নি ও কারমাইকেল। তবে উইকেটে থিতু হয়ে গিয়েছিলেন ব্যালবার্নি। কিন্তু ১৯তম ওভারে আক্রমণে এসেই তার বিদায়ঘণ্টা বাজান হাসান মুরাদ। ব্যাট-প্যাড হয়ে স্লিপে ধরা পড়এন ৬০ বলে ২১ রান করা আইরিশ অধিনায়ক।
এরপর বোলিংয়ে এসে প্রথম ওভারেই সাফল্য পান মিরাজ। চমৎকার ডেলিভারিতে তিনি এলবিডব্লিউ করেন ৫১ বলে ১৭ রান করা ক্যাড কারমাইকেলকে। খানিক পর মুরাদের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ফেরেন কার্টিস ক্যাম্ফার। শুন্য রানে তাকে বোল্ড করেন বাঁহাতি এই স্পিনার। ৯৪ রানে পঞ্চম উইকেট হারায় আয়ারল্যান্ড। ৩৪ বলে ১৪ রান করা হ্যারি টেক্টরকে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে ফেলেন তাইজুল।