কেপিজে হাসপাতালের সবাইকে আজীবন হৃদয়ে লালন করব: তামিম

ছবি: হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে বাসায় তামিম ইকবাল, ক্রিকফ্রেঞ্জি

বাসায় ফিরলেও কিছু পরীক্ষা করাতে এবং দাঁতের চিকিৎসার জন্য আজ অবশ্য আবার তামিমের হাসপাতালে যাওয়ার কথা রয়েছে। এ ছাড়া বাসায় থাকলেও চিকিৎসকের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখতে হবে তাকে।
হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে বাসায় তামিম
২৮ মার্চ ২৫
এর আগে গত ২৪ মার্চ বিকেএসপিতে প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচ চলাকালে দুবার হার্ট অ্যাটাক হয় তামিমের। ভেন্যুর পাশে অবস্থিত কেপিজে হাসপাতালেই তার হার্টে রিং পরানো হয়। চিকিৎসকদের মতে, স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে আরও ৩ মাসের মতো সময় লাগবে তামিমের।
তারপর এভার কেয়ারে চিকিৎসা নেন তামিম। জানা গেছে, ঈদের পর উন্নত চিকিৎসার জন্যে বিদেশে রওনা দেবেন তিনি। এমনটা নিশ্চিত করেন তামিমের চাচা ও সাবেক ক্রিকেটার আকরাম খান।
২৪ মার্চ দ্বিতীয় দফায় হার্ট অ্যাটাক করার পর একেবারেই অজ্ঞান ছিলেন তামিম। পালস পাওয়া যাচ্ছিল না তার। ২০-২২ মিনিট ধরে তাকে সিপিআর দিতে থাকেন মোহামেডানের ট্রেনার ইয়াকুব চৌধুরী ডালিম। ডালিমের সেই সিপিআরই মূলত বাঁচিয়ে দিয়েছে তামিমকে। কেপিজে এবং এভারকেয়ারের ডাক্তাররা বারংবারই সেকথা বিভিন্ন সময়ে বলেছেন।

পাঠকদের উদ্দেশে তামিমের সেই ফেসবুক পোস্ট তুলে ধরা হলো-
এক বছর এগিয়ে এলো বাংলাদেশের অস্ট্রেলিয়া সফর
১৫ ঘন্টা আগে
আপনাদের সবার দোয়ায় ও সর্বশক্তিমান আল্লাহর রহমতে এখন আমি বাসায়।
উথালপাথাল এই চারটি দিনে নতুন জীবন যেমন পেয়েছি, তেমনি আমার চারপাশকে আবিষ্কার করেছি নতুন করে। সেই উপলব্ধির সবটুকুতে মিশে আছে কেবল ভালোলাগা ও কৃতজ্ঞতা। আপনাদের সবার ভালোবাসার ছোঁয়া ক্যারিয়ারজুড়ে নানা সময়ই পেয়েছি। তবে এবার তা অনভুব করতে পেরেছি আরও তীব্রভাবে। আমি সত্যিই আপ্লুত।
বিকেএসপিতে আমার অসুস্থতার শুরু থেকেই অনেককে পাশে পেয়েছি তাৎক্ষণিকভাবে। ম্যাচ রেফারি দেবু দা (দেবব্রত পাল), বিকেএসপির চিকিৎসকরা এবং আরও যারা তখন ছিলেন সেখানে, অ্যাম্বুলেন্সের ড্রাইভার যে ভাই আমাকে দ্রুতগতিতে নিয়ে গেছেন হাসপাতালে, সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা।
আমাদের ট্রেনার ইয়াকুব চৌধুরী ডালিম ভাইয়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাব কীভাবে, আমার আসলে জানা নেই। আমি পরে জেনেছি, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলেছেন যে, ডালিম ভাই ওই সময় সঠিকভাবে সিপিআর না দিলে হয়তো আমাকে বাঁচানো যেত না। উপযুক্ত মানুষকে উপযুক্ত সময়ে আমার পাশে রেখে আল্লাহ আমাকে মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরিয়েছেন।
মোহামেডানের সাপোর্ট স্টাফ ওয়াসিমের কথা না বললেও নয়। শুরু থেকে এখনও সার্বক্ষণিক সঙ্গী হয়েই আছে আমার।
কেপিজে হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মনিরুজ্জামান মারুফ ও তার দক্ষ চিকিৎসক দল তাদের পেশাদারিত্ব আর আন্তরিকতার মিশেলে যেভাবে দ্রুততায় চিকিৎসা করেছেন, আমাদের দেশের চিকিৎসকদের মান ও কার্যকারিতাই ফুটে উঠেছে তাতে। আমি পরে শুনেছি যে, দেশের প্রখ্যাত হৃদরোগ বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ডা. মারুফ ও তার দল মিরাকল ঘটিয়েছেন।
গোটা চিকিৎসা প্রক্রিয়ায় কেপিজে হাসপাতালের চিকিৎসক, সেবিকা থেকে শুরু করে যারা যে কোনোভাবে যতটুকু সম্পৃক্ত ছিলেন, সবাইকে হৃদয়ে লালন করব আজীবন। এই হাসপাতালে যতটুকু সময় ছিলাম, তাদের হৃদ্যতার পরশ অনুভব করে যাব সবসময়।
ঢাকা শহরের বাইরে ওই এলাকায় এতটা উঁচু মানের হাসপাতাল আছে, এতটা কুশলী চিকিৎসক দল ও স্টাফরা আছেন, দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার এগিয়ে চলার একটি প্রমাণ এটি। দেশজুড়ে নানা জায়গায় এর কাছাকাছি মানের হাসপাতাল যদি আরও কিছু থাকে, আমার মতো আরও অনেক মানুষের প্রাণ রক্ষা পেতে পারে।
ধন্যবাদের তালিকা আসলে শেষ হওয়ার নয়। আরও অনেকেই নানাভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন, অনেকের কথা জানি, অনেকের কথা হয়তো জানি না। এতটুকু জানি, ধন্যবাদ পাওয়ার আশায় তারা কিছু করেননি। আমি তাদের ভালোবাসার ঋণে আবদ্ধ সারা জীবনের জন্য।
পুরোপুরি সেরে ওঠার পথ এখনও দীর্ঘ। আমাকে ও আমার পরিবারকে প্রার্থনায় রাখবেন। সবার জীবন সুন্দর ও শান্তিময় হোক।
ভালোবাসা সবার জন্য।