promotional_ad

দুয়োধ্বনি থেকে শান্ত, শান্ত

ক্রিকফ্রেঞ্জি
এইতো কদিন আগের কথা, আল–ইত্তিহাদের মাঠে খেলতে গিয়েছিল আল-নাসের। টানেল দিয়ে মাঠে খেলতে নামার সময় হঠাৎ করেই ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে উদ্দেশ্য করে দুয়ো দিতে থাকেন আল–ইত্তিহাদের সমর্থকেরা। সময়ের অন্যতম সেরা তারকাকে রাগাতে টেনে এনেছেন তার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী লিওনেল মেসির নামও। এটা সৌদি আরবের প্রো লিগের ঘটনা। তবে যারা ইউরোপিয়ান ফুটবলের খোঁজ-খবর রাখেন, ৯০ মিনিটের ফুটবলের শৈল্পিকতা দেখতে রাত জেগে থাকেন তারা এসব ঘটনার সঙ্??ে বেশ পরিচিত।

promotional_ad

ইউরোপিয়ান ফুটবলে ‘দুয়ো’ যেন প্রাত্যহিক রুটিনে থাকা ডিনার কিংবা লাঞ্চের মতো। ফুটবলে দুয়ো দেয়ার চিত্র হরহামেশাই দেখা গেলেও ক্রিকেটে বেশ অপরিচিতই ছিল এটা। তবে সময়ের বিবর্তনে সঙ্গী হতে শুরু করেছে ‍‘দুয়োধ্বনি’। ২০১৩ সালে ব্রিসবেনে স্টুয়ার্ট ব্রড, এজবাস্টনে মিসবাহ উল হক কিংবা ২০১৯ সালে সেই এজবাস্টনের স্টিভ স্মিথ সবাই পড়েছেন দুয়োধ্বনির সামনে।


আরো পড়ুন

মুশফিকের বিদায়ে সতীর্থরা যা বললেন

৬ মার্চ ২৫
(বাম থেকে) নাজমুল হোসেন শান্ত, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম, মাশরাফি বিন মুর্তজা ও মাহমুদউল্লা রিয়াদ

কেপটাউনের সেই পুরোনো ঘটনা সেদিন আবারও টেনে এনেছিল বার্মি-আর্মি। সিরিশ কাগজে দেখিয়ে সেদিন গ্যালারি থেকে স্মিথকে উদ্দেশ্য করে দুয়ো দিচ্ছিলেন ইংলিশ সমর্থকরা। তবে অবিশ্বাস্য ব্যাটিংয়ে তাদের মুখে কুলুপ এঁটে দিয়েছিলেন স্মিথ। সময়ের অন্যতম সেরা এই ব্যাটারের ব্যাটিং প্রদর্শনীতে সেদিন মুগ্ধ হতে বাধ্য হয়েছিলেন দুয়ো দেয়া সমর্থকরা। সেদিনের স্মিথ আর আজকের নাজমুল হোসেন শান্ত, যেন একই পাতার দুটি কুঁড়ি। একটু পেছন থেকেই শুরু করা যাক।


টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি রান করেছিলেন শান্ত, অথচ ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ শুরু করলেন গোল্ডেন ডাক মেরে। অফ স্টাম্পের বাইরে পরে ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিতে দীপক চাহার প্রত্যাশার চেয়ে খানিকটা বেশিই বাউন্স পেলেন। চাহারের এমন ডেলিভারিটা শান্ত খেলতে চাইলেন থার্ডম্যান দিয়ে। তবে ব্যাটে-বলে ঠিকঠাক না হওয়ায় রোহিত শর্মার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছিলেন বাঁহাতি এই ওপেনার।


শান্ত আউট হওয়ার সময় সেদিন মিরপুরে উল্লাস করেছিলেন সমর্থকরা। নিজের প্রতিভা অনুযায়ী প্রত্যাশার প্রতিদান দিতে না পারায় লম্বা সময় ধরেই সমালোচিত ছিলেন শান্ত। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্ক্রল করলে কেবল তাকে নিয়ে ট্রল আর সমালোচনা। ফেসবুক কিংবা অন্যান্য প্ল্যাটফর্মে খুব বেশি সরব না হওয়ায় এগুলো দেখেন না বলেই ধরা হচ্ছে। তবে তার কানে এসব আসে না তেমনটা নয়। কিন্তু মিরপুরে তার আউটে উল্লাস? এটা লুকানোর উপায় কী?



promotional_ad

বাঁহাতি এই ব্যাটার হয়তো কখনও ভাবেননি এমন দিন তাকে দেখতে হবে। শান্তর প্রতিভা কিংবা সক্ষমতা নিয়ে কখনই প্রশ্ন ছিল না কারও। বিদেশি কোচ থেকে দেশি কোচ সবাই সবসময় তার প্রতি মুগ্ধতার কথা জানিয়েছেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ব্যর্থ, অথচ ঘরোয়া ক্রিকেটে প্রতি বছরই দেশের সফলতম ব্যাটারদের একজন। ঘাটতিটা কোথায়? এমন প্রশ্নের উত্তর হয়ত খুঁজেছেন শান্ত নিজেও।


আরো পড়ুন

কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে নাম সরিয়ে নিলেন মাহমুদউল্লাহ, 'বি' ক্যাটাগরিতে মুশফিক

১ ঘন্টা আগে
মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ, বিসিবি

দুর্দিন পেরিয়ে শান্তকে সুদিন খানিকটা ধরা দেয় বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল)। মাশরাফি বিন মুর্তজার সিলেট স্ট্রাইকার্সের জার্সিতে ফ্রি লাইসেন্স পেয়েছিলেন ২৪ বছর বয়সি এই ক্রিকেটার। স্বাধীনতার ডানায় চড়ে নিজেকে নতুন করে চিনেছেন, মানুষকে চিনিয়েছেন শান্ত। পুরো মৌসুমে তার ব্যাট থেকে এসেছে ৫১৬ রান, রয়েছে চারটা হাফ সেঞ্চুরিও। শিরোপা জিততে না পারলেও টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কারটা কেবল নিজের করে নিয়েছেন শান্ত।


বিপিএল চলাকালীন শান্তর প্রশংসা শোনা গেছে সিলেট সমর্থকদের কণ্ঠে। প্রশংসা করবেনই না বা কেন, সিলেটের ফাইনালে আসার পেছনে তৌহিদ হৃদয়, মোহাম্মদ আমিরদের সঙ্গে অবদানের বড় অংশ জুড়েছিলেন শান্ত। বিপিএলে নিজের সেরা সময় পার করা এই ব্যাটার ছন্দ ধরে রাখেন ইংল্যান্ড সিরিজও। ৫০ ওভারের ক্রিকেটে নিজের জায়গা নিয়ে এখনও দোটানায় থাকা শান্ত তিন ম্যাচে করেছেন দুই হাফ সেঞ্চুরি।


ইংল্যান্ডকে হারানোর ম্যাচে রয়েছে তার ৫১ রানের ইনিংস। টি-টোয়েন্টি সিরিজ তো নিশ্চিতভাবেই কখনও ভুলতে চাইবেন না ২৪ বছর বয়সি এই ব্যাটার। সিরিজ সেরা শান্ত তিন ম্যাচে করেছেন ১৪৪ রান, রয়েছে একটি হাফ সেঞ্চুরি আর দুটি চল্লিশ পেরোনো ইনিংস। ইংলিশদের হোয়াইটওয়াশ করার পেছনে যাদের অবদান সবচেয়ে বেশি তার মাঝে অন্যতম তিনি। তাই তো এদিন সমর্থকরা তাকে বুকে টেনে নিতে ভুল করেননি।



জস বাটলারদের বিপক্ষে সিরিজ শুরুর পর থেকেই বদলে যেতে শুরু করেছে শান্তকে নিয়ে সমর্থকদের ভাবনা। ইংল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করার সেটা আরও বেশি পরিলক্ষিত হয়েছে। ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান শুরুর প্রহর গুনছেন সবাই। সাকিব আল হাসান আগেই গেছেন স্টেজের পাশে, তাসকিন আহমেদ গিয়ে গল্পে মেতেছেন বাটলারের সঙ্গে। এদিকে লিটন দাস তখন ড্রেসিং রুমের সামনে চান্দিকা হাথুরুসিংহ, মিনহাজুল আবেদিন নান্নু আর হাবিবুল বাশার সুমনের সঙ্গে ব্যস্ত তখন স্টেজের দিকে পা বাড়ান শান্ত।


বাঁহাতি এই ব্যাটারের চোখে পড়তেই গ্র্যান্ড স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে থাকা সমর্থকরা শান্ত, শান্ত বলে চিৎকার করলেন। ২৪ বছর বয়সি এই ক্রিকেটার হাসতে হাসতে স্টেজের দিকে হেঁটে গেলেন। হাসতে হাসতে হয়ত ভাবছিলেন, এমন সুুদিনই তো তিনি চেয়েছিলেন। যে সমর্থকরা একটা সময় দুয়ো দিয়েছিলেন তারাই আজ শান্তর নামে গলা ফাঁটান। ক্রিকেট আর জীবন তো বোধহয় এমনই...



আরো খবর

সম্পাদক এবং প্রকাশক: মোঃ কামাল হোসেন

বাংলাদেশের ক্রিকেট জগতে এক অপার আস্থার নাম ক্রিকফ্রেঞ্জি। সুদীর্ঘ ১০ বছর ধরে ক্রিকেট বিষয়ক সকল সংবাদ পরম দায়িত্ববোধের সঙ্গে প্রকাশ করে আসছে ক্রিকফ্রেঞ্জি। প্রথমে শুধুমাত্র সংবাদ দিয়ে শুরু করলেও বর্তমানে ক্রিকফ্রেঞ্জি একটি পরিপূর্ণ অনলাইন মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম।

মেইল: cricfrenzy@gmail.com
ফোন: +880 1305-271894
ঠিকানা: ২য় তলা , হাউজ ১৮, রোড-২
মোহাম্মাদিয়া হাউজিং সোসাইটি,
মোহাম্মাদপুর, ঢাকা
নিয়োগ ও বিজ্ঞপ্তি
বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ
নিয়ম ও শর্তাবলী
নীতিমালা
© ২০১৪-২০২৪ ক্রিকফ্রেঞ্জি । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
footer ball