২০০৫ সালের ২৬ মে লর্ডসে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সাদা পোশাকের ক্রিকেটে যাত্রা শুরু হয় মুশফিকের। পরবর্তীতে সময়ে ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসা, অনুশীলন এথিক্স, নিয়মাবর্তিতা, সবার আগে অনুশীলনে আসা, ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় কাটিয়ে ম্যাচের জন্য নিজেকে প্রস্তুতি—সবকিছু মুশফিককে অনন্য এক উচ্চতায় নিয়ে গেছে। টেস্ট ক্রিকেটের ৯২ বছরের সময় প্রথমবারের মতো ১০০ টেস্ট খেলার কীর্তি গড়েন কলিন কাউড্রে। পরবর্তী সময়ে সেটা সবার জন্য সহজ হয়েছে।
আস্তে আস্তে একশর ক্লাবে অনেকে ঢুকেছেন। একবিংশ শতাব্দীতে ৬০ জন ক্রিকেটার একশ টেস্ট খেলার কীর্তি গড়েছেন। সেই তালিকায় অবশ্য বাংলাদেশের কেউই। সেখানে প্রথম সদস্য হতে যাচ্ছেন মুশফিক। বিশেষ কোনো পরিস্থিতি তৈরি না হলে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে মিরপুর টেস্ট দিয়ে এক টেস্টের এলিট ক্লাবে জায়গা করে নিচ্ছেন ডানহাতি এই ব্যাটার। বাংলাদেশের বাস্তবতায় বিশেষ এক অর্জন বটে।
বাংলাদেশের হয়ে ৯৯ টেস্টে ২৭ হাফ সেঞ্চুরি ও ১২ সেঞ্চুরিতে ৬ হাজার ৩৫১ রান করেছেন ডানহাতি এই ব্যাটার। দেশের একমাত্র ব্যাটার হিসেবে করেছেন তিনটা ডাবল সেঞ্চুরি। এ ছাড়া টেস্ট ইতিহাসের একমাত্র উইকেটকিপার ব্যাটার হিসেবে ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন দুইটি। প্রথম টেস্টের পর নাজমুল হোসেন শান্ত জানিয়েছিলেন, তাঁর চাওয়া মুশফিক একশ টেস্ট ছোঁয়ার পরও খেলা চালিয়ে যাক। তবে ডানহাতি এই ব্যাটার কতদিন খেলা চালিয়ে যাবেন সেটার নিশ্চয়তা দিতে পারেননি সিমন্স। বাংলাদেশের প্রধান কোচ জানান, ফিটনেস, পারফরম্যান্সে এখনো ভালো অবস্থানে মুশফিক।
এ প্রসঙ্গে সিমন্স বলেন, ‘আমার মতে, এখানে কয়েকটা বিষয় বিবেচনা করতে হবে। প্রথম ব্যাপার হচ্ছে ফিটনেস এবং এই মুহূর্তে মুশফিক দলের অন্যতম ফিট খেলোয়াড়দের একজন। দ্বিতীয়ত, পারফরম্যান্স এবং সে পারফর্ম করে যাচ্ছে। শ্রীলঙ্কাতেও সে সেঞ্চুরি করেছে। এই দুইটাই আসল মানদণ্ড। যতক্ষণ সে পারফর্ম করবে, ফিট থাকবে এবং খেলার ইচ্ছে থাকবে সে খেলে যাবে। আমার মনে তিনটা জিনিসই এখনো তাঁর মধ্যে আছে। তাই সিদ্ধান্তটা তাকেই নিতে হবে।’
২০২৪ সালে ভারত সফর থেকে ফিরে চাকরি হারান চান্ডিকা হাথুরুসিংহে। একই বছরের অক্টোবরে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান কোচের দায়িত্ব নেন সিমন্স। পরবর্তীতে দায়িত্ব নিয়েছেন ২০২৭ সালের বিশ্বকাপ পর্যন্ত। বাংলাদেশের কোচ হওয়ার পর সাউথ আফ্রিকা সিরিজের আগে মুশফিকের সঙ্গে কথা বলেছিলেন তিনি। সেই সময়ই ক্যারিবীয় এই কোচ মুশফিককে বলে দিয়েছিলেন, যা করছে সেটা যেন তিনি উপভোগ করতে থাকেন।
সিমন্স বলেন, ‘না (মুশফিক কতদিন টেস্ট খেলা চালিয়ে যাবে, আলোচনা করেনি)। সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্টের সময় আমি যখন এসেছিলাম তখন মুশফিককে শুধু বলেছিলাম তুমি যা করছো সেটা উপভোগ করতে থাকো। তুমি মাঠে যাও এবং প্রতিটি টেস্ট ম্যাচ উপভোগ করো। তুমি যখন পারফর্ম করবে তখন তুমিই ঠিক করবে তুমি কতদিন খেলতে চাও। কারণ পারফরম্যান্সটা জরুরি। যতক্ষণ সে পারফর্ম করছে ততোক্ষণ পর্যন্ত সে খেলা চালিয়ে যেতে পারবে, যতক্ষণ না সে ‘না’ করার জন্য প্রস্তুত।’