নাহিদের তোপে সিলেটকে গুঁড়িয়ে জিতল রংপুর
ছবি: জাকের আলীকে ফিরিয়ে নাহিদ রানার উল্লাস, ক্রিকফ্রেঞ্জি
যদিও অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান ১৭০.৮৩ স্ট্রাইক রেটে খেলেছেন ২৪ বলে ৪১ রানের ক্যামিও ইনিংস। যদিও সবমিলিয়ে ১৫৫ রানের বেশি তুলতে পারেনি ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়নরা। সেই রান তাড়া করতে নেমেও মুখ থুবড়ে পড়েছেন সিলেট স্ট্রাইকার্সের ব্যাটাররা। জর্জ মানজি, জাকির হাসান, পল স্টার্লিংরা দ্রুতই ফিরলে জুটি গড়ে সিলেটকে আশা দেখানোর চেষ্টা করেন রনি তালুকদার ও জাকের আলী অনিক।
তাদের দুজনের কেউই অবশ্য টি-টোয়েন্টি মেজাজে রান তুলতে পারেননি। ১১৩ স্ট্রাইক রেটে ব্যাটিং করা রনি আউট হয়েছেন ৪১ রানে। দলের অন্যতম তারকা ব্যাটার জাকের ফিরেছেন ৭২.৭৩ স্ট্রাইক রেটে ২৪ রান করে। শেষের দিকের ব্যাটারা কেবলই আসা-যাওয়ার মিছিলে ছিলেন। নাহিদ রানা ও খুশদিল শাহর দারুণ বোলিংয়ে সিলেট থেমেছে ১২১ রানে। সিলেটকে ৩৪ রানে হারিয়ে টানা দুই ম্যাচেই জয় পেল রংপুর।
মিরপুরে জয়ের জন্য ১৫৬ রান তাড়ায় শুরুটা ভালো হয়নি সিলেটের। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই কামরুল ইসলাম রাব্বির দারুণ এক ইয়র্কারে বোল্ড ফিরেছেন মানজি। দারুণ ছন্দে থাকলেও সিলেটের হয়ে বিপিএলের শুরুটা ভালো হলো হয়নি ২ রান করা বাঁহাতি এই ওপেনারের। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে জাকির ও রনি প্রতিরোধের চেষ্টা করলেও তা কাজে দেয়নি। নাহিদের গতিময় ডেলিভারিতে বলের লাইনেই যেতে পারেননি জাকির।
বোল্ড হয়ে ফিরতে হয়েছে ১৮ রান করা বাঁহাতি এই ব্যাটারকে। চারে নেমে নাহিদকে ছক্কা মেরে নিজের রানের খাতা খুলেছিলেন স্টার্লিং। তবে সেই ওভারের শেষ বলে বাংলাদেশের তরুণ পেসারকে ছক্কা মারতে গিয়ে হেলসের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন। ৪৩ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে খানিকটা বিপাকে পড়ে সিলেট। সেখান থেকে দলকে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন রনি ও জাকের।
যদিও প্রত্যাশা মিটিয়ে দ্রুত রান তুলতে পারেননি তারা দুজন। ৩৮ রানের জুটি ভেঙেছেন খুশদিল। বাঁহাতি স্পিনারকে কাট করতে গিয়ে বোল্ড হয়েছেন ৪১ রান করা রনি। পরের বলে আউট হয়েছেন আরিফুল হক। উইকেট থেকে বেরিয়ে এসে লেগ সাইডে ঠেলে দিয়ে রান নিতে চেয়েছিলেন তিনি। তবে বলের লাইন মিস করায় অনায়াসে স্টাম্পিং করেছেন সোহান। টানা দুই বলে দুই উইকেট নিয়ে হ্যাটট্রিকের সুযোগ তৈরি করেছিলেন খুশদিল।
হ্যাটট্রিক ডেলিভারিতে খুশদিলের বলের লাইন মিস করেছিলেন সামিউল্লাহ শেনওয়ারি। বল প্যাডে আঘাত করতেই আবেদন করেন রংপুরের ফিল্ডাররা, অনফিল্ড আম্পায়ারও আউট দেন। তবে রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান তিনি। যদিও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি আফগান এই ব্যাটার। ৮ রানে ফিরেছেন নাহিদের বলে সাইফের হাতে ক্যাচ দিয়ে। পরের ব্যাটাররা কেবল হারের ব্যবধান কমিয়েছেন। রংপুরের হয়ে নাহিদ চারটি, খুশদিল ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন দুটি উইকেট নিয়েছেন।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি রংপুরেরও। প্রথম ম্যাচের মতো এদিনও ব্যর্থ হয়েছেন হেলস, টেলররা। তিনে নামা সাইফও সুবিধা করতে পারেননি। তবে জুটি গড়ে ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়নদের এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন খুশদিল ও ইফতিখার। তারা দুজনে মিলে যোগ করেন ৪১ রান। খুশদিলের বিদায়ে ভাঙে তাদের দুজনের জমে ওঠা জুটি।
ডানহাতি লেগ স্পিনারের লেংথ ডেলিভারিতে উড়িয়ে মারতে গিয়ে সীমানার খুব কাছে দাঁড়িয়ে থাকা জর্জ মানজির হাতে ক্যাচ দিয়েছেন খুশদিল। আগের ম্যাচে দারুণ এক ক্যামিও ইনিংস খেলা এই ব্যাটার এবার আউট হয়েছেন ২১ রানে। এরপর দারুণ এক জুটি গড়ে তোলেন ইফতিখার ও সোহান। যেখানে ৬৫ রানের জুটিতে বেশিরভাগ রানই এসেছে রংপুরের অধিনায়কের ব্যাট থেকে।
চার-ছক্কায় ২৪ বলে খেলেছেন ৪১ রানের ক্যামিও ইনিংস। ১৯তম ওভারে ব্যাটিংয়ে এসে ২০০ স্ট্রাইক রেটে ১৬ রান করেছেন শেখ মেহেদীও। দলের বিপর্যয়ে উইকেটে থিতু হওয়া ইফতিখার অপরাজিত ছিলেন ৪৭ রান। সিলেটের হয়ে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন তানজিম হাসান সাকিব ও আল আমিন হোসেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
রংপুর রাইডার্স- ১৫৫/৬ (২০ ওভার) (টেলর ১২, হেলস ৬, সাইফ ৪, খুশদিল ২১, সোহান ৪১, ইফতিখার ৪৭*, মেহেদী ১৬; তানজিম ২/২৭, আল আমিন ২/৩১)
সিলেট স্ট্রাইকার্স- ১২১/৯ (২০ ওভার) (জাকির ১৮, রনি ৪১, মানজি ২, স্টার্লিং ৬, জাকের ২৪; নাহিদ ৪/২৭)