ব্রেন্ডন কিং ও অ্যালিক অ্যাথানাজের ব্যাটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের উদ্বোধনী জুটি তখন পঞ্চাশ ছাড়িয়ে গেছে। ইনিংসের ১১তম ওভারে প্রথমবার রিশাদের হাতে বল তুলে দেন অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ। বোলিংয়ে এসে প্রথম ওভারে লাইন-লেংথ পেতে একটু কষ্টই হচ্ছিল ডানহাতি লেগ স্পিনারের। তারপরও সেই ওভার থেকেই বাংলাদেশকে প্রথম উইকেট এনে দেন তিনি।
অ্যাথানাজকে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে ফেলে ভাঙেন ক্যারিবীয়দের ৫১ রানের উদ্বোধনী জুটি। পরবর্তীতে সফরকারী ব্যাটারদের স্পিন ধাঁধায় ফেলে তুলে নেন কেসি কার্টি, কিং, শেরফান রাদারফোর্ড ও রস্টন চেজের উইকেট। ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান একশ ছোঁয়ার আগেই চেজকে উইকেটের পেছনে ক্যাচ বানিয়ে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো ৫ উইকেট তুলে নেন রিশাদ।
রাজিন সালেহকে পেছনে ফেলে বাংলাদেশের প্রথম ডানহাতি স্পিনার হিসেবে ৫ উইকেট নেয়ার কীর্তিটাও গড়েন তিনি। শেষ ব্যাটার হিসেবে জেইডেন সিলসকে আউট করেন ডানহাতি লেগ স্পিনার। রিশাদের বোলিং ফিগার ৯ ওভারে ৩৫ রান, ৬ উইকেট। বাংলাদেশের প্রথম স্পিনার হিসেবেও ওয়ানডেতে ৬ উইকেট নেন তিনি। এমন পারফরম্যান্সে টাইগারদের জয়ের নায়ক বনে গেছেন রিশাদ।
ডানহাতি লেগ স্পিনারের ঘূর্ণিতে ২০৮ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ অল আউট হয়েছে ১৩৩ রানে। বাংলাদেশকে ৭৪ রানের জয় এনে দিয়ে নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে রিশাদ বলেন, ‘আসলে তেমন কিছু বলার নেই। এটা আমার কাজ, আমাকে করতেই হবে। সবাই আজ একটু ভুগছিল, আমি চেষ্টা করছিলাম সেরাটা দিতে। আমার কাজই এটা।’
বোলিংয়ের মতো ব্যাটিংয়েও বাজিমাত করেছেন রিশাদ। মিরপুরের কালো উইকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলারদের খেলতেই পারছিলেন না বাংলাদেশের ব্যাটাররা। নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহীদ হৃদয় ও মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন লড়াই করলেও স্পিন উইকেটে হাতখুলে খেলতে পারছিলেন না। ওমন উইকেটে ৮ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে ঝলক দেখান রিশাদ। ২ ছক্কা ও ১ চারে খেলেছেন ১৩ বলে ২৬ রানের ইনিংস।
ব্যাটিং নিয়ে রিশাদ বলেন, ‘আমি যেখানে ব্যাটিংয়ে নামি সেখানে আমার রোলটা হচ্ছে কীভাবে একটু বাড়তি রান করা যায়, দলের জন্য যেটা ভালো হয়। যে জায়গায় ১৮০ হয় সেখানে যদি ২১০–২১৫ হয়, আমার জন্য ভালো হয়। আমার রোল এটা, আমি চেষ্টা করেছি আলহামদুলিল্লাহ হয়েছে। আমি বুঝি আমার দলের জন্য কী দরকার। চেষ্টা করেছি আমি একটু ভালো করলে দলের জন্য এটা ভালো হবে।’
ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিংয়ে অবদান রাখতে পারায় খুশি রিশাদ। তিনি বলেন, ‘অবশ্যই, এটা অনুপ্রেরণার বিষয়। একজন খেলোয়াড় হিসেবে তিন বিভাগেই অবদান রাখতে পারা ভালো বিষয়। আমি চেষ্টা করি যেকোনো একটি বিভাগে নিজের ছাপ রাখার এবং শতভাগেরও বেশি দেয়ার।’