বাংলাদেশ দলের এশিয়া কাপের বহরে 'বিকল্প ওপেনার' হিসেবে সংযুক্ত আরব আমিরাতে গিয়েছিলেন সাইফ। গ্রুপ পর্বের দুই ম্যাচে হংকং এবং শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে একাদশে সুযোগ পাননি তিনি।
পারভেজ হোসেন ইমন না খেলার কারণে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সুযোগ হয় সাইফের। সেই ম্যাচে ২৮ বলে ৩০ রান করেন এই ওপেনার। বাংলাদেশ ওপেনিং জুটিতেই ৪০ বলে ৬৩ রান তোলে বাংলাদেশ।
তারপরের ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের জয়ে মহাগুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন সাইফ। করেন ৪৫ বলে ৬১ রান। ভারতের বিপক্ষে ৫১ বলে ৬৯ রান তোলেন সাইফ, যদিও সেই ম্যাচটি হারে বাংলাদেশ। সবমিলিয়ে এশিয়া কাপের চার ম্যাচে ১৭৮ রান আসে সাইফের ব্যাটে।
এরপর আফগানিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের তৃতীয় ম্যাচেও তিনে নেমে ৩৮ বলে অপরাজিত ৬৪ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন সাইফ। টি-টোয়েন্টিতে অসাধারণ পারফরম্যান্সের কল্যাণে ওয়ানডে দলেও জায়গা পান তিনি।
সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে বাংলাদেশ মাত্র ৯৩ রানে অল আউট হলেও ৫৪ বলে ৪৩ রানের ইনিংস খেলেন সাইফ। সেই ম্যাচে বল হাতে চার ওভারে ছয় রান খরচায় তিনটি উইকেটও নেন তিনি। এ ছাড়া টি-টোয়েন্টি ম্যাচগুলোতে বল হাতে মার খেলেও উইকেট নিতে দেখা গেছে তাকে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ শুরুর আগে সাইফকে নিয়ে সিমন্স বলেন, 'সাইফ অবশ্যই বল হাতে একটি সারপ্রাইজ প্যাকেজ কারণ আমি আশা করিনি যে সে বল হাতে এখানে আসার পর থেকে এতটা ভালো করবে। কিন্তু তার ব্যাটিং আমি আগেও দেখেছি এবং এটা দারুণ যে সে এখন এসে দেখিয়েছে যে সে কী করতে পারে। এবং আপনি বলতে পারেন এটা একটা সারপ্রাইজ প্যাকেজ, কিন্তু আমরা তার সম্পর্কে আগে থেকেই জানতাম এবং সে যখন সুযোগ পেয়েছে তখন তা কাজে লাগিয়েছে এবং এটা আমাদের জন্য দেখতে দারুণ। সে একটার পর একটা ভালো পারফর্ম করে যাচ্ছে। আমি পরবর্তীতে তার প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরির জন্য অপেক্ষা করছি।'
ষষ্ঠ বোলার হিসেবেও সাইফকে মনে ধরেছে সিমন্সের, 'আমি মনে করি সাইফ এবং শামীম বোলিংয়ে সাহায্য করতে পারে এবং তারা দুজন মিলে ষষ্ঠ বোলারের ভূমিকা পালন করতে পারে। কিন্তু সেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ এবং এখনকার মধ্যে বোলিংয়ে এতটাই উন্নতি হয়েছে যে অনেক সময় আমরা ষষ্ঠ বোলার ব্যবহারই করি না। সুতরাং, আমি বোলারদের সম্পর্কে এটা বলতেই পারি এবং আমি আপনার সাথে একমত, আমি মনে করি তাদের জন্য ষষ্ঠ বোলার হিসেবে কিছু ওভার পূরণ করার সম্ভাবনা আছে।'
সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাট হাতে ভিন্ন ভিন্ন পজিশনে সফল হওয়া সাইফকে নিয়ে আরো কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যেতে চান সিমন্স। মূলত ২০২৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপের জন্য সঠিক ওপেনিং জুটি গড়ে তুলতে চান এই ক্যারিবিয়ান। এ কারণে তানজিদ হাসান তামিম, পারভেজ হোসেন ইমন, সাইফ এবং নাইম শেখকে বিভিন্নভাবে পরখ করতে চান তিনি।
সাইফ আরো বলেন, 'ইমনের সামান্য চোট আছে যা আমরা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি যে সে সম্পূর্ণ ফিটনেসে ফিরে আসে। আমি মনে করি আমরা এখনও সেই আদর্শ জুটি খুঁজছি। সাইফ এসে সেভাবে ব্যাট করেছে এটা দারুণ, কিন্তু আপনি জানেন সাইফ সেই ইউটিলিটি খেলোয়াড়দের একজন যে যেকোনো জায়গায় ব্যাট করতে পারে। সুতরাং, সে এসে এটা করেছে এটা ভালো, কিন্তু আমরা এখনও সেই আদর্শ জুটি খুঁজছি।'
'আমি অবশ্যই বলব যে এটা একটা গড়ে তোলার প্রক্রিয়া। আমরা কিছু শুরু করছি, আমরা ২০২৭ বিশ্বকাপের জন্য কিছু তৈরি করতে শুরু করছি। সুতরাং, এটা একটা গড়ে তোলার প্রক্রিয়া, আমরা সঠিক জুটি খুঁজে পেলে তাদের সাথে কাজ করা শুরু করব। আমরা সঠিক কম্বিনেশন খুঁজে পেলে তাদের সাথে কাজ করা শুরু করব। এবং এখানে-সেখানে কিছু খেলোয়াড় বাদ পড়বে, হয়তো ফর্মের কারণে, হয়তো অন্য কেউ ভালো করছে, কিন্তু এটা একটা প্রক্রিয়া যা আমরা চালিয়ে যাচ্ছি।'