সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে জয়ের জন্য ১৩৭ রানের লক্ষ্য তাড়ায় বাংলাদেশকে ভালো শুরু এনে দেয়ার আভাস দেন পারভেজ হোসেন ইমন ও তানজিদ হাসান তামিম। তাদের দুজনের ব্যাটে ইনিংসের প্রথম দুই ওভারেই ২৫ রান তোলে স্বাগতিকরা। তবে তৃতীয় ওভারে তানজিদ ও ইমনের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন আরিয়ান দত্ত। ডানহাতি অফ স্পিনারের ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিতে বোল্ড হয়েছেন ইমন।
দুই চার ও এক ছক্কায় ৯ বলে ১৪ রান করা বাঁহাতি ওপেনারের বিদায়ের পর ব্যাটিংয়ে এসেই ঝড় তোলার চেষ্টা করেন লিটন। আরিয়ানকে দুই চার মারার পরের ওভারে ড্যানিয়েল দোরামকে মেরেছেন ছক্কা ও চার। যার ফলে পাওয়ার প্লেতে একটি উইকেট হারালেও দাপট দেখায় বাংলাদেশ। লিটনের দারুণ ব্যাটিংয়ে ৫৭ রান তোলে স্বাগতিকরা। পাওয়ার প্লে শেষে একটু দেখেশুনে খেলার চেষ্টা করেছিলেন তারা দুজন।
যদিও সেটা খুব বেশি সময় করতে হয়নি। একের পর এক বাউন্ডারিতে দলকে নিয়ে যেতে থাকেন তারা। একটু পর জড়তা কাটিয়ে ছক্কা মারার চেষ্টা করেন তানজিদ। টিম প্রিঙ্গলের ফুলটস ডেলিভারিতে ডাউন দ্য উইকেটে এসে খেলতে গিয়ে টাইমিংয়ে গড়বড় করে লং অনে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি। বাঁহাতি ওপেনারকে ফিরতে হয় ২ চারে ২৪ বলে ২৯ রান করে। একটু পর হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন লিটন। ২৬ বলে পঞ্চাশ ছুঁয়ে সাকিব আল হাসানের পাশে নাম লিখিয়েছেন তিনি।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের হয়ে এতদিন সবচেয়ে বেশি ১৩ হাফ সেঞ্চুরির মালিক ছিলেন সাকিব। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে পাওয়া হাফ সেঞ্চুরিতে সাকিবকে ছুঁয়েছেন তিনি। ১০৯ টি-টোয়েন্টিতে লিটনের হাফ সেঞ্চুরিও এখন ১৩টি। পঞ্চাশ ছোঁয়ার পর লিটনকে আর কিছু করতে হয়নি। ৩ ছক্কায় ১৯ বলে ৩৬ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলে ৩৯ বল বাকি থাকতেই জয় নিশ্চিত করেন সাইফ।
এর টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ম্যাক্স ও’ডাউডের ব্যাটে ভালো শুরুই পেয়েছিল নেদারল্যান্ডস। প্রথম ওভারে দেখেশুনে খেললেও পরের ওভারে শরিফুল ইসলামের বিপক্ষে মেরেছেন তিন চার। আক্রমণাত্বক ব্যাটিংয়ের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে দ্রুত রান তোলায় মনোযোগী ছিলেন তিনি। তবে চতুর্থ ওভারে প্রথমবার বোলিংয়ে এসে বাংলাদেশকে উইকেট এনে দেন তাসকিন। ডানহাতি পেসারের গুড লেংথ ডেলিভারিতে লিডিং এজ হয়েছেন ম্যাক্স ও’ডাউড।
ডানহাতি এই ওপেনার ১৫ বলে ২৩ রান করে ফিরলে রান তোলার গতি কমে সফরকারীদের। প্রথম তিন ওভারে ২৫ রান করা ডাচরা পাওয়ার প্লের শেষের তিন ওভারে ৯ রানের বেশি যোগ করতে পারেনি। একটু পর বোলিংয়ে এসে আরেক ওপেনার বিক্রমজিৎ সিংয়ের উইকেটও নেন তাসকিন। ডানহাতি পেসারের পঞ্চম স্টাম্পের শর্ট লেংথ ডেলিভারিতে লং অনের উপর দিয়ে খেলার চেষ্টায় ইমনের হাতে ক্যাচ দেন তিনি।
দ্রুতই দুই উইকেট হারানোর জুটি গড়ার পাশাপাশি দ্রুত রান তোলার চেষ্টা করেন তেজা নিদামানুরু ও স্কট এডওয়ার্ডস। তাদের দুজনের জমে ওঠা জুটি ভাঙেন সাইফ। ইনিংসের দশম ওভারে বোলিংয়ে এসে এডওয়ার্ডসকে ফেরান তিনি। ডানহাতি অফ স্পিনারের বলে সুইপ করতে গিয়ে স্কয়ার লেগ ক্যাচ দিয়েছেন। জাকেরের দুর্দান্ত ক্যাচে ডাচ অধিনায়ককে ফিরতে হয় ১২ রানে। একই ওভারে তেজার উইকেটও নিয়েছেন সাইফ।
ফুলার লেংথ ডেলিভারিতে ছক্কা মারতে গিয়ে ওয়াইড লং অনে ক্যাচ দিয়েছেন হৃদয়ের হাতে। ২৬ বলে ২৬ রান করেন তেজা। নেদারল্যান্ডসের রান একশ ছোঁয়ার আগে শারিজ আহমেদ ফেরান মুস্তাফিজুর রহমান। বাঁহাতি পেসারের শর্ট ডেলিভারিতে অন সাইডে ক্যাচ দিয়েছেন টপ এজ হয়ে। পরবর্তীতে নোয়া ক্রোস ও ক্লেইনের উইকেট নেন তাসকিন। শেষ পর্যন্ত ১৩৬ রানের বেশি করতে পারেনি নিউজিল্যান্ড। বাংলাদেশের হয়ে তাসকিন চারটি ও সাইফ নিয়েছেন দুইটি উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ
নেদারল্যান্ডস— ১৩৬/৭ (২০ ওভার) (ম্যাক্স ও’ডাউড ২৩, বিক্রমজিৎ ৪, তেজা ২৬, এডওয়ার্ডস ১২, শারিজ ১৫; তাসকিন ৪/২৮, সাইফ ২/১৮)
বাংলাদেশ— ১৩৮/২ (১৩.৩ ওভার) (ইমন ১৫, তানজিদ ২৯, লিটন ৫৪*, সাইফ ৩৬*)