ফিটনেসের তথ্যের ভিত্তিতে নাহিদ-তাসকিনদের পর্যবেক্ষণ করছেন কেলি

ছবি: নাথান কেলির প্রশিক্ষণে ব্যস্ত ক্রিকেটাররা, ক্রিকফ্রেঞ্জি

একদিন আগে ১৬০০ মিটার দৌড়ে সবার চেয়ে ভালো করেন তরুণ পেসার নাহিদ। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) গত দুই বছর ধরে জাতীয় দলের ফিটনেস যাচাইয়ের জন্য এই ফরম্যাট অনুসরণ করছে। বিশেষ করে বড় কোনো সিরিজ বা টুর্নামেন্টের আগে ক্রিকেটারদের শারীরিক অবস্থা বোঝার জন্য ৪০০ মিটারের ট্র্যাকে চার চক্করের দৌড় প্রতিযোগিতা চালু করা হয়েছে।
অ্যাথলেটিক্স ট্র্যাকে সবার সেরা নাহিদ রানা
১০ আগস্ট ২৫
একদিন আগে বিসিবির ট্রেনার নাথান কেলির অধীনে চলে পুরো সেশন। প্রাথমিক এশিয়া কাপ স্কোয়াডের সদস্য ছাড়াও টেস্ট পুলের কয়েকজন ক্রিকেটার অংশ নেন এ পরীক্ষায়। সবার দৌড়ের টাইমিংয়ের মধ্যে সেরা ছিলেন নাহিদ রানা। মাত্র ৫ মিনিট ৩১ সেকেন্ডে ১৬০০ মিটার শেষ করেন তিনি। তার পরে ছিলেন পেসার তানজিম হাসান সাকিব, যিনি সময় নিয়েছেন ৫ মিনিট ৫৩ সেকেন্ড।
তাদের প্রশংসায় আজ কেলি বলেন, 'আমরা জাতীয় স্টেডিয়ামে কিছু টেস্ট করেছি। স্প্রিন্ট টেস্ট এবং টাইম ট্রায়াল করেছিলাম। টাইম ট্রায়ালে আমরা মনে হয় ১২ জন খেলোয়াড়ের পার্সোনাল বেস্ট পেয়েছি। অনেক খেলোয়াড়ই এই জায়গায় উন্নতি করছে। নাহিদ অসাধারণ পারফরম্যান্স করেছে। ৫ মিনিট ৩১ সেকেন্ডে ১৬০০ মিটার দৌড় শেষ করেছে। আর পুরো দল একসাথে এই দিকটা উন্নত করার চেষ্টা করছে। আমরা এখানে কিছু স্ট্রেংথ টেস্টও করেছি। সবগুলো স্ট্রেংথ টেস্ট একসাথে মিলিয়ে ৫৬টি পার্সোনাল বেস্ট পেয়েছি।'

ফিটনেস টেস্টে নিজেদের শতভাগ নিঙরে দিচ্ছেন ক্রিকেটাররা। এমনটা উল্লেখ করে কেলি বলেন, 'ক্রিকেটাররা খুব মোটিভেটেড। ওরা সবাই প্রচণ্ড পরিশ্রমী এবং নিজেদের সেরা বানাতে চায়। আমি কখনো আমাদের খেলোয়াড়দের কাছ থেকে ফিটনেস নিয়ে কোনো অভিযোগ পাইনি। তারা পুরোপুরি যুক্ত হয়েছে, উন্নতির চেষ্টা করছে, এবং তাদের এনার্জি ও উৎসাহ দারুণ।'
‘টাইম ট্রায়াল’কে বেছে নেয়ার কারণ হিসেবে কেলি বলেন, ‘এটার ফল নিয়ে কম বিতর্ক হয়। যখন আপনি ইয়ো-ইয়ো বা বিপ টেস্ট করান, কখনো কখনো খেলোয়াড়েরা খুব অল্পের জন্য পিছিয়ে যায়, কিন্তু তখন তাদের থামিয়ে দিয়ে বলাটা কঠিন হয়ে যায় যে তোমার টেস্ট শেষ। টাইম ট্রায়ালে ভালো জিনিস হচ্ছে, ঘড়ি মিথ্যা কথা বলে না। আমার অভিজ্ঞতা হচ্ছে, যারা ইয়ো ইয়ো বা বিপ টেস্টে পাস করে, তারা টাইম ট্রায়ালেও জেতে। যারা ওখানে (বিপ বা ইয়ো ইয়ো) ভালো না, তারা এখানেও (টাইম ট্রায়াল) না।’
গত বছরের এপ্রিলে বিসিবিতে কাজ শুরু করেন কেলি। তখন থেকেই ক্রিকেটারদের ফিটনেসের ট্র্যাক বা তথ্য রাখছেন তিনি। এতে ক্রিকেটারদের উন্নতি বা অবনতি সহজেই নির্ণয় করতে পারছেন তিনি। ব্যস্ত সূচির কারণে ফিটনেস নিয়ে কাজ করাটা সবসময় হয় না বলেও আফসোস আছে কেলির।
'খেলোয়াড়দের মধ্যে অনেক উন্নতি হচ্ছে। কেউ কেউ বলছে এই টেস্টগুলো নাকি নতুন, এটা ঠিক না। আমি ২০২৪ সালের এপ্রিলে যোগ দেওয়ার পর থেকে ১৮ মাস ধরে এই টেস্টগুলো করছি — টাইম ট্রায়াল, স্ট্রেংথ টেস্ট, স্প্রিন্ট টেস্ট — এসবের ধারাবাহিক ডেটা আমাদের কাছে আছে, যেটা দিয়ে খেলোয়াড়দের উন্নতি ট্র্যাক করছি।'
'যখন সূচিতে বিরতি থাকে, তখন খেলোয়াড়রা নিজেরাই অনেক ফিজিক্যাল কাজ করে। আমি বলব, শেষ সিরিজ শেষ হওয়ার পর তারা বরং আরও বেশি কাজ করেছে। যখন আমরা প্রতি দুই দিন পরপর ম্যাচ খেলি, তখন এসব কাজ করা কঠিন হয়ে পড়ে। যেমন আপনি শ্রীলঙ্কা সফরে দেখেছেন, সেটা ছয় সপ্তাহের সিরিজ ছিল, যেখানে সম্ভবত ৭০% দিনই ম্যাচ ছিল।'
এই ক্যাম্পের ফিটনেস অংশ চলবে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত। এরপর শুরু হবে স্কিল ট্রেনিং। ২০ আগস্ট থেকে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে হবে প্রস্তুতি ক্যাম্প। সেখানেই ৩০ আগস্ট, ১ ও ৩ সেপ্টেম্বর নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে খেলবে বাংলাদেশ। এরপর দল উড়াল দেবে সংযুক্ত আরব আমিরাতে, যেখানে ৯ সেপ্টেম্বর শুরু হবে এশিয়া কাপ। বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ ১১ সেপ্টেম্বর, হংকংয়ের বিপক্ষে আবুধাবিতে।