চিরচেনা ব্যাটিং ব্যর্থতায় বাংলাদেশের ‘প্রত্যাশিত’ হার

ছবি: বল হাতে ৫ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশকে একাই ধসিয়ে দিয়েছেন হাসান আলী

আরেক ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন আউট হয়েছেন আরও আগেই। দুই ওপেনারকে হারানোর পর তাওহীদ হৃদয় ও লিটন দাস মিলে জুটি গড়লেও টি-টোয়েন্টি কিংবা ম্যাচে প্রয়োজনীয় রান রেটের চাহিদা মেটাতে পারেননি তাদের কেউই। লিটন খানিকটা আগ্রাসী হয়ে ওঠার চেষ্টা করলেও ফিরেছেন ৩০ বলে ৪৮ রানে। ধীরগতির ইনিংসে বাংলাদেশকে বিপদে ফেলে ফিরেছেন হৃদয়। ৯ বলের ব্যবধানে ৩ উইকেট হারানো বাংলাদেশের হারটা প্রত্যাশিতই ছিল। শেষের দিকে জাকের আলী অনিকের ৩৬ রান কেবল হারের ব্যবধান কমিয়েছে।
বিসিবি সভাপতি ফারুকের মনোনয়ন বাতিল করল এনএসসি
১০ ঘন্টা আগে
চিরচেনা ব্যাটিং ব্যর্থতায় প্রত্যাশিতভাবেই হেরে টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু করেছে বাংলাদেশ। সফরকারীদের ৩৭ রানে হারিয়ে সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে গেল পাকিস্তান। স্বাগতিকদের জয়ের কাজটা করে দিয়েছেন সালমান আলী আঘা, হাসান নাওয়াজ, শাদাব খান ও হাসান আলী। ব্যাটিংয়ে ৪৮ রান করা শাদাব বোলিংয়ে নিয়েছেন ২ উইকেট। তবে বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডারকে ধসিয়ে দেয়ার কাজটা করেছেন ৫ উইকেট নেয়া হাসান।
লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে জয়ের জন্য ২০১ রান তাড়ায় শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। ইনিংসের প্রথম ওভারে ১১ রান এলেও পরের ওভারেই উইকেট হারায় সফরকারীরা। হাসান আলীর ফুলার লেংথ ডেলিভারিতে মিড অনের উপর দিয়ে খেলতে গিয়ে ৩০ গজের ভেতরে রউফের হাতে ক্যাচ দেন পারভেজ হোসেন ইমন। আগের ম্যাচে ডাক করা বাঁহাতি ওপেনার ফেরেন ৪ রানে।
পারভেজ ফিরলেও অন্যপ্রান্তে দ্রুত রান তুলতে থাকেন তানজিদ হাসান। স্পিনার আবরার আহমেদকে দুই ছক্কা মারা বাঁহাতি ওপেনার হাসানকেও টানা দুই বলে দুই চার মারেন। তবে চতুর্থ ওভারের শেষ বলে ফিরতে হয় তাকে। হাসানের ফুলার লেংথের স্লোয়ার ডেলিভারিতে বোল্ড হয়েছেন তানজিদ। দারুণ ছন্দে থাকা তরুণ ওপেনার ফেরেন ৩ ছক্কা ও ২ চারে ১৭ বলে ৩১ রানের ইনিংস খেলে। দুই ওপেনারকে হারানোর পর জুটি গড়ে তোলেন হৃদয় ও লিটন।
যদিও প্রথম কয়েক ওভারে তাদের দুজনের কেউই প্রত্যাশিতভাবে রান তুলতে পারছিলেন না। তানজিদ ফেরার পরের তিন ওভারে তারা দুজনে মিলে করেছিলেন মাত্র ১৪ রান। তবে সময় যত বাড়ছিল রান তোলার গতি ততই বাড়ানোর চেষ্টা করছিলেন লিটন ও হৃদয়। তবে সেটা কাজে দেয়নি। শাদাব খানকে ছক্কা মেরে দলের রান একশ পূরণ করেছিলেন লিটন। যদিও পরের বলেই ফিরতে হয়েছে তাকে।

ডানহাতি লেগ স্পিনারের শর্ট ডেলিভারিতে কাট করে পয়েন্ট দিয়ে খেলার চেষ্টায় ফখর জামানকে ক্যাচ দেন ৩০ বলে ৪৮ রান করা লিটন। বাংলাদেশের অধিনায়কের বিদায়ে ভাঙে হৃদয়ের সঙ্গে ৬৩ রানের জুটি। পরের ওভারে বোলিংয়ে এসে হৃদয়কে ফেরান খুশদিল। পরের বলে আউট হয়েছেন শামীম হোসেন পাটোয়ারিও। সালমান আঘার ওয়াইড ডেলিভারিতে ডাউন দ্য উইকেটে এসে খেলতে গিয়ে স্টাম্পিং হয়েছেন তিনি। ৯ বলের ব্যবধানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে বাংলাদেশ।
২০১৭ সালের হাসান আলী ফিরে এসেছে: সালমান
২১ ঘন্টা আগে
একটু পর ফিরে যান রিশাদ হোসেনও। সবার আসা-যাওয়ার মিছিলে শেষের দিকে ব্যাট হাতে ঝড় তোলার চেষ্টা করেন জাকের আলী অনিক। তবে ইনিংস বড় করতে পারেননি তিনি। তিন ছক্কা ও এক চারে ২০ বলে ৩৬ রান করে জাকের ফেরেন হাসানের বলে। তানজিম হাসান সাকিব, মেহেদী হাসান ও শরিফুল ইসলামের বিদায়ে ১৬৪ রানে অল আউট হয় বাংলাদেশ। পাকিস্তানের হয়ে ৫ উইকেট নিয়েছেন হাসান আলী। টি-টোয়েন্টিতে প্রথমবারের মতো ৫ উইকেট নিয়েছেন তিনি।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা পাকিস্তানকে শুরুতেই চেপে ধরে বাংলাদেশ। উইকেটে সবুজ ঘাস থাকলেও ইনিংসের প্রথম ওভারে শেখ মেহেদীর হাতে বল তুলে দেন লিটন। অধিনায়কের আস্থার প্রতিদান দিয়ে প্রথম ওভারেই উইকেট দেন মেহেদী। ডানহাতি অফ স্পিনারের ব্যাক অব লেংথ ডেলিভারিতে অন সাইডে খেলার চেষ্টায় টপ এজ হয়ে বোলারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সাইম আইয়ুব।
পরের ওভারে বোলিংয়ে এসে ফখর জামানের উইকেট তুলে নেন শরিফুল ইসলাম। বাঁহাতি পেসারের লেংথ ডেলিভারিতে লেগ বিফোর উইকেট হয়েছেন ফখর। দারুণ ছন্দে থাকা বাঁহাতি ওপেনার আউট হয়েছেন মাত্র এক রানে। ফখরকে ফিরিয়ে টি-টোয়েন্টিতে নিজের ৫০তম উইকেট তুলে নিয়েছেন তিনি। সাকিব আল হাসান, মুস্তাফিজুর রহমান ও তাসকিন আহমেদের পর চতুর্থ বাংলাদেশি হিসেবে ২০ ওভারের ক্রিকেটে এমন কীর্তি গড়েছেন শরিফুল।
৫ রানে ২ উইকেট হারানোর পর দারুণভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন সালমান ও মোহাম্মদ হারিস। তাদের দুজনের ব্যাটে পাওয়ার প্লেতে ২ উইকেটে ৫২ রান তোলে পাকিস্তান। পাওয়ার প্লে শেষে হারিসকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন তানজিম হাসান সাকিব। ডানহাতি পেসারের অফ স্টাম্পের বাইরের হার্ড লেংথ ডেলিভারিতে লং অনের উপর দিয়ে ছক্কা মারার চেষ্টায় তানজিদের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন হারিস। দারুণ শুরু পাওয়া ডানহাতি ব্যাটার আউট হয়েছেন ১৮ বলে ৩১ রান করে।
সাবলীল ব্যাটিংয়ে ২৯ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন সালমান। যদিও পঞ্চাশ ছোঁয়ার পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি পাকিস্তানের অধিনায়ক। হাসান মাহমুদের ফুলটস ডেলিভারিতে শর্ট কভারে ক্যাচ দিয়েছেন ৩৪ বলে ৫৬ রান করে। একটু পর আউট হয়েছেন আক্রমণাত্বক ব্যাটিং করতে থাকা হাসান নাওয়াজও। রিশাদকে ছক্কা ও দুই চার মারার পরের বলে ফিরেছেন তাঁরই হাতে ক্যাচ দিয়ে। দারুণ ছন্দে থাকা ডানহাতি ব্যাটার করেছেন ২২ বলে ৪৪ রান।
ব্যাট হাতে সুবিধা করে উঠতে পারেননি খুশদিল। তবে আক্রমণাত্বক ব্যাটিংয়ে ২ ছক্কা ও ৫ চারে ২৫ বলে ৪৮ রানের ইনিংস খেলে শরিফুলের বলে আউট হয়েছেন শাদাব খান। শেষ পর্যন্ত প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ২০১ রানের পুঁজি পায় পাকিস্তান। সফরকারী বাংলাদেশের হয়ে দুটি উইকেট নিয়েছেন শরিফুল। এ ছাড়া একটি করে উইকেট পেয়েছেন মেহেদী, হাসান, রিশাদ, শামীম ও তানজিম।
সংক্ষিপ্ত স্কোর—
পাকিস্তান— ২০১/৭ (২০ ওভার) (সাইম ০, ফখর ১, হারিস ৩১, সালমান ৫৬, নাওয়াজ ৪৪, শাদাব ৪৮; শরিফুল ২/৩২)
বাংলাদেশ— ১৬৪/১০ (১৯.২ ওভার) (ইমন ৪, তানজিদ ৩১, লিটন ৪৮, হৃদয় ১৭, জাকের ৩৬; হাসান ৫/৩০, শাদাব ২/২৬)