অধারাবাহিক লিটনকে বিশ্রাম দেয়ার কথা ভাবছে বিসিবি
ছবি: লিটন দাসের দুঃসময় যেন কাটছেই না, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট
চলতি বছরে ছয় ওয়ানডে খেলা ডানহাতি এই ব্যাটার দুই অঙ্কে পৌঁছাতে পারেননি একবারও। যেখানে সবমিলিয়ে রান করেছেন মোটে ৬ রান। শূন্য আছে চারটি ম্যাচে। চোটের কারণে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজি ছিলেন না তিনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের আগে লিটন ওয়ানডে খেলেছিলেন মার্চে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। চট্টগ্রামে হওয়া সেই সিরিজের প্রথম দুই ওয়ানডেতে শূন্য রানে আউট হয়েছিলেন তিনি।
এমন পারফরম্যান্সের পর সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডের দল থেকে বাদ পড়েছিলেন লিটন। সেই সময় ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) আবাহনী লিমিটেডের হয়ে খেলতে নেমেছিলেন। সেখানেও ব্যাট হাতে আলো ছড়াতে পারেননি। লিটনের চলমান ফর্ম নিয়ে চিন্তা বাড়াচ্ছে নির্বাচকদেরও। মার্চের মতো সাময়িক বিরতির প্রয়োজন হলে ডানহাতি ব্যাটারকে সেটাও দেয়ার কথা ভাবতে পারেন তারা। গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে এমনটাই জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ লিপু।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দেখুন, আমরাও বুঝতে পারছি লিটন দাসের কাছ থেকে দল যা আশা করে..সে মানসম্পন্ন ব্যাটার। সাদা বলে সে মোটেই ধারাবাহিক না। এজন্য কিন্তু টুর্নামেন্ট (সিরিজ) নির্ধারণী ম্যাচেও কিন্তু তাকে দলের বাইরে রেখেছিলাম। এই মুহূর্তে সে টি-টোয়েন্টি সংস্করণে আমাদের অধিনায়ক, একটা সিরিজ চলছে। আমার মনে হয় এত ডিটেইলে কথা বলার জন্য এটা আদর্শ সময় না। তবে এতটুকু বলতে পারি আমরাও খানিকটা চিন্তিত সে যেভাবে আউট হচ্ছে। অদূর ভবিষ্যতে সেখানে যদি কোন মেরামতের প্রয়োজন হয়, মেরামতের জন্য কোচরা আছেন। সাময়িক বিরতির যদি প্রয়োজন হয় সেটার জন্য কোচরা আছেন। অথবা আগামীতে আরও দুটি খেলা আছে সেখানে যদি সে ফেরত আসতে পারে তাহলে আমরা স্বাগত জানাবো।’
ওয়ানডেতে ছন্দে না থাকার পরও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে অধিনায়ক করা হয়েছে লিটনকে। অফ ফর্মে থাকা ব্যাটারকে অধিনায়কের দায়িত্ব দেয়ায় সমালোচনা হচ্ছে বিসিবিকে নিয়ে। নিজে রান করতে না পারলেও অবশ্য প্রথম ম্যাচে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। যেখানে উইকেটকিপার হিসেবে চারটি ক্যাচ নিয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে একটি স্টাম্পিংও করেছেন। ফর্মে না থাকা লিটনকে দলের সবাই সমর্থন করায় খুশি লিপু।
প্রধান নির্বাচক বলেন, ‘আমি মনে করি স্বল্প মেয়াদী একটা হিসেবে করেই হয়ত বোর্ড সমাধান করার চেষ্টা করেছে। কারণ বোর্ডের হাতেও যে অনেক অপশন ছিল সেই অবস্থায় বোর্ড ছিল না। অনেক খেলোয়াড়ই ইনজুরিতে। ইতিবাচক দিক যেটা দেখি একজন ব্যাটার যখন ফর্মে থাকে না সেটা যখন সে চালিয়ে যাচ্ছেন নতুন দায়িত্ব পাওয়ার পরও তখন তার দল তাকে যে সাপোর্টটা করেছে একজন বিজয়ী দলের অধিনায়ক হিসেবে দিনশেষে। আমার মনে হয় সেটা হয়ত তাকে অনুপ্রাণিত করবে। অধিনায়কের জন্য দল দারুণ কাজ করেছে।’
লিটনকে অধিনায়ক করায় নির্বাচকদের মতামত ছিল কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে লিপু বলেন, ‘আমাদের যে দায়-দায়িত্ব আছে জাতীয় দল নির্বাচনটা আমাদের এখতিয়ারের মধ্যে পড়ে। এবং জাতীয় দলের জন্য অধিনায়ক কাকে বিবেচনা করা হবে এটা সম্পূর্ণরূপে বাংলাদেশ বোর্ডের এখতিয়ার। সেটা স্বল্পকালীন সময়ের জন্য হবে নাকি দীর্ঘকালীন সময়ের জন্য হবে আমার মনে হয় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড সেটা অবস্থার প্রেক্ষিতে নির্ধারণ করে, এবারও তাই করা হয়েছে। আমি জয়েন করার পরে আমাদের কাছ থেকে শুধু ‘এ’ দল, হাই পারফরম্যান্স দলের জন্য অধিনায়ক, সহ-অধিনায়ক রিকোমেন্ডেশনটা চাওয়া হতো। জাতীয় দলের জন্য আমি যোগ দেয়ার পর থেকে বলতে পারি কখনও কোন রিকোমেন্ডেশন চাওয়া হয়নি।’