অভিযোগ প্রমাণ হওয়ার আগেই ফাঁসির মঞ্চে চড়িয়ে দিয়েছেন: জ্যোতি

নারী ক্রিকেট
অভিযোগ প্রমাণ হওয়ার আগেই ফাঁসির মঞ্চে চড়িয়ে দিয়েছেন: জ্যোতি
নিগার সুলতানা জ্যোতি, বিসিবি
Author photo
ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
· ১ মিনিট পড়া
বাংলাদেশের ক্রিকেটে চলছে এক টালমাটাল সময়। বাংলাদেশ নারী দলের সাবেক নির্বাচক ও টিম ম্যানেজার মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জুর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলেছেন জাহানারা আলম। সেই সঙ্গে নিগার সুলতানা জ্যোতির বিরুদ্ধে ড্রেসিংরুমে ‘একনায়কতন্ত্র’ চালানোর গুরুতর অভিযোগ এনেছেন তিনি।

এসব বিষয় নিয়ে ক্রিকফ্রেঞ্জির সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করেছেন বাংলাদেশ নারী দলের অধিনায়ক জ্যোতি। তার বিরুদ্ধে আনা এমন অভিযোগ রীতিমতো উড়িয়ে দিয়েছেন জ্যোতি। জানিয়েছেন এতোদিন ক্রিকেট খেলার পর এরকম সিনিয়র একজন ক্রিকেটারের কাছ থেকে এমন অভিযোগ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

আক্রোশের কারণেই এমন অভিযোগ আসছে জানিয়ে জ্যোতি বলেন, 'অনেকদিন ধরে ক্রিকেট খেলছি, আসলে এটা গ্রহণযোগ্য না যে এরকমভাবে কোনো সিনিয়রের কাছ থেকে এরকম অভিযোগগুলো আসে। কারণ যখন আমরা একসাথে খেলেছি, কখনো আসলে এরকম কিছু মনে হয়নি। যখন এখন তারা নাই কাছে এবং অনেকদিন পরে যখন এসব অভিযোগগুলো আসে এবং স্পষ্টভাবে বলব যে ব্যক্তিগতভাবে হয়তোবা কিছু একটা আক্রোশ, ক্ষোভ বলতে পারেন, আমার সাথে সেটা দেখানো হচ্ছে।'

অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়ে তিনি যোগ করেন, 'এখনও আমি বলব যে আমাকে যারা চিনেন, জানেন, আমার পরিবার, আমার আত্মীয়-স্বজন, তারা অবশ্যই ভালোভাবে চেনেন। যে অভিযোগগুলো আমার বিরুদ্ধে আনা হয়েছে, সেগুলো আসলে ভিত্তিহীন। শুধুমাত্র এই সাময়িকভাবে আসলে আমাকে বলবেন যে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করা এবং সামাজিকভাবে আমাকে হেয় করার চেষ্টা করা হচ্ছে।'

বিসিবি এক বিবৃতিতে আগেই নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ দলের ড্রেসিংরুমে এরকম কোনো বিষয় হয়নি। তবে এসব ঘটনায় আলোচনায় আসায় সামাজিকযোগাযোগ মাধ্যমে হেয় করা হচ্ছে জ্যোতিকে। তিনি মনে করেন অপরাধ প্রমাণিত হওয়ার আগেই তাকে ফাঁসির মঞ্চে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেছেন, 'একটা রেন্ডম মানুষ আসলো, একটা মানুষের নামে অভিযোগ করলো, এরপর তাকে আপনারা একদম ফাঁসির মঞ্চে চড়িয়ে দিয়েছেন। ও যেহেতু বলছে তার মানে এটাই সত্য। এটাই তো হইতে পারে না! তাহলে আপনি এত বছর যে আমি বাংলাদেশের হয়ে সার্ভ করলাম, বাংলাদেশের হয়ে পারফর্ম করলাম বা বিভিন্ন জয়ের সাক্ষী ছিলাম, হতাশারও সাক্ষী ছিলাম। আমরা একটা দল হিসেবে, নিজেকে একটা জায়গায় দাঁড় করিয়েছি, ওই সবগুলো অর্জন কি তাহলে মিথ্যা হয়ে গেল?'

বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে আলোড়ন তুলেছে জাহানারার যৌন হয়রানির অভিযোগ। তার এই অভিযোগের তদন্তে নেমেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। এরই মধ্যে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে। সাবেক নির্বাচক মঞ্জুরুল ইসলাম এবং নারী বিভাগের সাবেক ইনচার্জ প্রয়াত তৌহিদ মাহমুদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ এনেছেন।

জ্যোতি জানিয়েছেন তিনি এরকম কোনো কিছু অনুভব করেননি খেলোয়াড়ি জীবনে। এমনকি তিনি এমন কিছু দেখেনওনি। তবে মঞ্জুর আচরণ অনেক কঠোর ছিল বলে স্বীকার করেছেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক। তিনি ক্রিকেটারদের আঘাত করার মতো কথা বলতেন বলেও জানিয়েছেন জ্যোতি। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ দল নিয়ে প্রশ্ন না তুলে জাহানারার এসব বিষয় নিয়েই অভিযোগ করা উচিত ছিল বলে মনে করেন জ্যোতি।

তিনি বলেন, 'আমি পিংকি আপু আমরা খুব ভালো বন্ধু, এর থেকে আসলে কিছু বলার নাই। আমি ইতোমধ্যে এক্সপ্লেইন করেছি এই জায়গায়। এটা খুবই আসলে লজ্জাজনক বিষয় যে একটা সিনিয়র আপুর কাছ থেকে এসব কথাবার্তা এবং উনি যেখানে এগুলো লিখেছেন, ১৩ পৃষ্ঠার যে কমপ্লেইনগুলো করেছিলেন, সাধারণত সেখানে কিন্তু উনার লেখার একটা অংশ হতে পারত যে উনার সাথে যে ফিজিক্যালি এবিউজ হয়েছে বা উনি হচ্ছে এই বিষয়গুলো ফেস করেছেন। আসলে ওই বিষয়গুলো উনি একবারও ওখানে লেখেন নাই।'

মঞ্জুর বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে জ্যোতি বলেন, 'ব্যক্তিগতভাবে আমি কখনো আমার সঙ্গে এমন কিছু অনুভব করিনি, পাশাপাশি আমি এমন কিছু ঘটতে আমার সামনে দেখিনি। হ্যাঁ, উনি… উনার ব্যবহার অনেক রুঢ় ছিল, এটা সত্যি। উনি অনেক স্ট্রিক্ট ছিলেন। উনি যা বলতেন, সেটা একটু রুঢ়ভাবে বলতেন—সবাইকে বলতেন, সিনিয়র-জুনিয়র সবাই জানতেন। এই জিনিসটা আমরা সবাই জানতাম, আর সেই সময় উনাকে অনেক ভয়ও পেতাম, সত্যি কথা। উনি এমন কিছু বলতেন যে, মানে মন খারাপ হওয়ার মতোই কথাই ছিল, এটা সত্যি।'

আরো পড়ুন: নিগার সুলতানা জ্যোতি