অভিষেক-গিলের ঝড়, সুপার ফোরেও পাকিস্তানকে হারাল ভারত

আন্তর্জাতিক
সুপার ফোরেও পাকিস্তানকে হারাল ভারত
শাহীন শাহ আফ্রিদির সঙ্গে অভিষেক শর্মার কথার লড়াই, ফাইল ফটো
Author photo
ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
· ১ মিনিট পড়া
এশিয়া কাপের গ্রুপ পর্বে ভারতের কাছে ৭ উইকেটে হেরেছিল পাকিস্তান। এই হারের বদলা নেয়ার সুযোগ পেয়েছিল সালমান আলী আঘার দল। যদিও সুপার ফোরের ম্যাচেও হারতে হলো পাকিস্তানকে। এই ম্যাচে ১৭১ রান সংগ্রহ করেও ছয় উইকেটে হারে আঘার দল। যথারীতি এই ম্যাচেও হাত মেলায়নি দুই দল। মূলত অভিষেক শর্মা এবং শুভমান গিলের অনবদ্য দুটি ইনিংস ও শতরানের জুটিতে লক্ষ্য তাড়া করার ভিত পায় ভারত।

লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে উড়ন্ত সূচনা করে ভারত। শাহীন শাহ আফ্রিদিকে ছক্কা মেরে দ্বিতীয় ইনিংসের শুরু করেন অভিষেক শর্মা। তার সঙ্গে শুরু থেকে হাত খুলে খেলতে থাকেন শুভমান গিলও। দুজনে মিলে ৪.৪ ওভারেই ভারতকে পঞ্চাশ রান এনে দেন। পাওয়ার প্লে'র ছয় ওভারে ভারত তোলে ৬৯ রান। তৃতীয় ওভারে অবশ্য অভিষেকের ক্যাচ ছাড়েন নাওয়াজ। প্রতি ওভারেই বাউন্ডারি তুলে নিয়েছে ভারত।

পাওয়ার প্লে'র পরও আগ্রাসন চালিয়ে যায় ভারত। ৮.৪ ওভারে দলীয় শতক স্পর্শ করে দলটি। ২৪ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করেন গিল। অভিষেক বা গিল প্রায় প্রতি ওভারে বাউন্ডারি হাঁকানো অব্যাহত রাখেন। পাকিস্তানের বোলারদের সঙ্গে অবশ্য কয়েকবার বাক বিতন্ডায় জড়ায় ভারতের দুই ওপেনার। তবে ব্যাট হাতেই দুজনকে জবাব দিতে বেশি দেখা গেছে।

৯.৫ ওভারে প্রথম উইকেট হারায় ভারত। ফাহিম আশরাফের অফ স্টাম্প তাক করা ডেলিভারিতে ড্রাইভ করতে গিয়ে লাইন মিস করেন গিল। বোল্ড হন তিনি। ২৮ বলে আটটি চারে ৪৭ করে ফিরে যেতে হয় গিলকে। ভারত প্রথম উইকেট হারায় ১০৫ রানে। গিলের পর সূর্যকুমার যাদবও ফিরে যান দ্রুত। এ দিন রানের খাতাই খুলতে পারেননি তিনি। হারিস রউফের গুড লেংথের বল স্কুপ করতে গিয়ে ডিপ থার্ড ম্যান অঞ্চলে ক্যাচ দেন সূর্যকুমার। এরপর হাফ সেঞ্চুরিয়ান অভিষেককে ফেরায় পাকিস্তান।

১৩তম ওভারে আবরার আহমেদকে লং অনের ওপর উড়িয়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ আউট হন এই ওপেনার, ক্যাচটি নেন হারিস। এ দিন ৩৯ বলে ছয়টি চার ও পাঁচটি ছক্কায় ৭৪ রান করেন অভিষেক। ১২৩ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় ভারত। দেড়শ'র আগে সাঞ্জু স্যামসনও ফিরে গেছেন। এই উইকেটরক্ষক ব্যাটারকে অসাধারণ এক লেংথ ডেলিভারিতে বোল্ড করেন হারিস। এরপর তিলক ভার্মার ১৯ বলে ৩০ এবং হার্দিক পান্ডিয়ার সাত বলে সাত রানের ইনিংসে ১৮.৫ বলেই জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছায় ভারত।

এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে দলীয় ২১ রানে প্রথম উইকেট হারায় পাকিস্তান। ফখর জামান কট বিহাইন্ড হয়ে আউট হয়েছেন হার্দিক পান্ডিয়ার বলে। যদিও এই আউট নিয়ে সন্দেহ থাকতেই পারে। কারণ বল সাঞ্জু স্যামসনের গ্লাভসে যাওয়ার আগে মাটি ছুঁয়েছে কিনা তা নিয়ে ধোঁয়াশা ছিল। যদিও থার্ড আম্পায়ার আউট দেন ৯ বলে ১৫ রান করা ফখরকে।

পাওয়ার প্লের মধ্যে পাকিস্তানকে আর উইকেট হারাতে দেননি সাইম আইয়ুব ও শাহিবজাদা ফারহান। যদিও সাইমের সহজ ক্যাচ নিতে পারেননি কুলদীপ যাদব। ৬ ওভারে পাকিস্তানের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৫৫। এরপর ভারতের বোলারদের ওপর চড়াও হয়ে ফারহান ৩৪ বলেই তুলে নেন হাফ সেঞ্চুরি। অক্ষর প্যাটেলকে ছক্কা মেরে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন এই পাকিস্তানি ওপেনার।

সাইম একবার জীবন পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি। ওয়ান ডাউনে নেমে ১৭ বলে ২১ রান করে শিভম দুবের বলে টপ এজ হয়ে অভিষেক শর্মার ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন তিনি। এরপর হুসাইন তালাত আউট হন ১১ বলে ১০ রান করে। কুলদীপ যাদবকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে বরুণ চক্রবর্তীর হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি।

দারুণ খেলতে থাকা ফারহানকে ফিরিয়েছেন দুবে। এই ভারতীয় পেসারের অফ কাটারে অফ সাইডে উড়িয়ে মারতে চেয়েছিলেন ফারহান। তবে ব্যাটে বলে হয়নি। ব্যাটের কানায় লেগে বল টপ এজ হয়ে যায়। এক্সট্রা কাভারে সহজ ক্যাচ হাতছাড়া করেননি ভারতের অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব। ৪৫ বলে ৫৮ রানের ইনিংস এসেছে এই ওপেনারের ব্যাট থেকে। ৩টি ছক্কার সঙ্গে ফারহান মেরেছেন ৫টি চারও।

এরপর পাকিস্তানের ইনিংস টানেন অধিনায়ক সালমান আলী আঘা ও মোহাম্মদ নাওয়াজ। যদিও শেষদিকে দুর্ভাগ্যজনকভাবে রান আউট হয়ে ফিরেছেন ২১ রান করা নাওয়াজ। ১৯তম ওভারে ফাহিম আশরাফের সহজ ক্যাচ ছেড়েছেন শুভমান গিল। নাহলে আরেকটি উইকেট যেতে পারত পাকিস্তানের। এরপর আর পাকিস্তানকে উইকেট হারাতে দেননি সালমান ও ফাহিম। দুজনে মিলে পাকিস্তানকে পৌঁছে দেন ১৭১ রানে। সালমান ১৩ বলে ১৭ ও ফাহিম ৮ বলে ২০ রানের ক্যামিও খেলে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন।

আরো পড়ুন: ভারত