পারিশ্রমিক পেয়েই জিতল রাজশাহী
ছবি: এক ম্যাচ পর জয়ে ফিরল দুর্বার রাজশাহী, ক্রিকফ্রেঞ্জি
এনামুল হক বিজয়ের ২২ বলে ৩২ এবং রায়ান বার্লের ২৭ বলে ৪১ রানের ইনিংসে সাত উইকেটে ১৮৪ রান করে রাজশাহী। জবাবে ব্যাটারদের ব্যর্থতায় ১৭.৩ ওভারে মাত্র ১১৯ রানে থামে সিলেটের ইনিংস। জাকির হাসানের ২৮ বলে ৩৯ এবং জাকের আলী অনিকের ২০ বলে ৩১ রানের ক্যামিও ছাড়া বলার মতো তেমন ইনিংসও নেই। এর বাইরে দুই অঙ্ক ছুঁতে পেরেছেন কেবল ২২ বলে ২০ রান করা জর্জ মানজি।
স্পিন দিয়ে খুলনাকে হারাল রাজশাহী
১০ জানুয়ারি ২৫১৮৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে প্রথম ওভারেই পল স্টার্লিংয়ের উইকেট হারায় সিলেট। সানজামুল ইসলামের ওভারে কাভারের উপর দিয়ে খেলতে গিয়ে শর্ট থার্ডম্যান অঞ্চলে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন দুই রান করা স্টার্লিং। নিজের দ্বিতীয় এবং ইনিংসের তৃতীয় ওভারে আবারও উইকেটের দেখা পান সানজামুল ইসলাম। তার ফ্লাইটেড ডেলিভারিতে ডাউন দ্যা গ্রাউন্ডে মারতে গিয়ে মাঝের স্টাম্প হারান চার রান করা রনি তালুকদার। পাওয়ার প্লে'র ছয় ওভারে দুই উইকেটে ৪৫ রান নেয় দলটি।
১৩ রানে দুই ওপেনারকে হারানোর পর জাকির হাসানের ব্যাটে এগিয়ে যায় সিলেট। উইকেটে এসেই দলের রান বাড়াতে থাকেন ইনফর্ম এই ব্যাটার। দশম ওভার ফিরে যান তিনি। মার্ক দেয়ালের শর্ট ডেলিভারিতে ডিপ মিড উইকেটে খেলতে গিয়ে টপ এজ হয়ে ফিরে যান ২৮ বলে ৩৯ রান করা জাকির। থার্ড ম্যান থেকে দৌড়ে এসে দারুণ একটি ক্যাচ নেন বিজয়। ১০ ওভারে তিন উইকেটে ৭৫ রান তোলে সিলেট।
পরের ওভারে আক্রমণে আসেন রাজশাহীর আরেক নতুন রিক্রুট আফতাব আলম। তার অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের একটি স্লোয়ার বলে সুইপ করতে গিয়ে টপ এজ হয়ে আফতাবকেই ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ফেরেন জর্জ মানজি। ফেরার আগে করেন ২২ বলে ২০ রান। তারপর ১২ ওভারের মধ্যে অ্যারন জোন্সের উইকেটও হারায় সিলেট। সানজামুলের আর্মবল বুঝতে পারেননি জোন্স। ফলে ছয় বলে পাঁচ রান করে বোল্ড হতে হয় তাকে। এভাবে ব্যাটারদের উইকেট হারাতে হারাতে ১৭.৩ ওভারে ১১৯ রানে থামে সিলেটের ইনিংস। শেষদিকে জাকের আলীর ইনিংস কেবল তাদের পরাজয়ের ব্যবধানে কমিয়েছে।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে এর আগে আগ্রাসী সূচনার পরও দুইশ রান স্পর্শ করতে পারে রাজশাহী। ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা বেশ আগ্রাসীভাবে করে রাজশাহী। রিস টপলির করা প্রথম ওভারেই দলটি নেয় ১৫ রান। ধীরে ধীরে আগ্রাসী হয়ে ওঠা মোহাম্মদ হারিসকে অবশ্য থিতু হতে দেননি নাহিদুল। চতুর্থ ওভারে নাহিদুলের ফ্লাইট দিয়ে করা গুড লেংথের ডেলিভারিতে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে পয়েন্টে রিস টপলিকে ক্যাচ দেন হারিস। ১৪ বলে ১৯ রান করে বিদায় নেন তিনি।
পাওয়ার প্লে'তে এক উইকেটে ৩৮ রান তোলে রাজশাহী। নিহাদুজ্জামানের করা সপ্তম ওভারে অবশ্য হাত খুলেন জিসান আলম। এই ওভারে দুটি ছক্কা মারেন তিনি। তবে অষ্টম ওভারের প্রথম বলে ফিরে যেতে হয় তাকে। নাহিদুলের করা সেই ওভারে পুল করতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান জিসান। ১৮ বলে ২০ রান করেন তিনি। অপর পাশ দিয়ে দলের রান বাড়াচ্ছিলেন বিজয়। দশম ওভারে রুয়েল মিয়ার অফ স্টাম্পের বাইরের বলে জায়গায় দাঁড়িয়ে ড্রাইভ করতে গিয়ে উইকেটরক্ষক জর্জ মানজির মুঠোয় ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন বিজয়।
দশ ওভার শেষে রাজশাহী করে তিন উইকেটে ৯৬ রান। বিজয়ের বিদায়ের পর দলের রান খানিকটা বাড়িয়ে বিদায় নেন ইয়াসির আলী রাব্বি। ১০ বলে ১৯ রান আসে তার ব্যাটে। আরিফুল হকের এক ওভারে ২০ রান নেয়ার পর ১৬তম ওভারে বিদায় নেন বার্লও। নিহাদুজ্জামানের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে লং অফে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন এই জিম্বাবুইয়ান। দলীয় ১৫৩ রানে পঞ্চম উইকেট হারায় রাজশাহী।
বার্ল ফেরার পর শেষদিকে সেভাবে জ্বলে উঠতে পারেননি রাজশাহীর ব্যাটাররা। শেষ পাঁচ ওভারে ৩৮ রান নিয়ে তিনটি উইকেট হারিয়েছে দলটি। আকবর আলী ১৫ বলে ১৪ রান করে অপরাজিত ছিলেন। মার্ক দেয়ালের ব্যাটে আসে আট বলে সাত রান। ছয় বলে ১২ রান করেন মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী। সিলেটের হয়ে ৩২ রান খরচায় তিন উইকেট নেন রুয়েল মিয়া। নাহিদুল ২০ এবং নিহাদুজ্জামান ৩৭ রান খরচায় দুটি করে উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
দুর্বার রাজশাহী- ১৮৪/৭ (২০ ওভার) (এনামুল ৩২, বার্ল ৪১; রুয়েল ৩/৩২)
সিলেট স্ট্রাইকার্স- ১১৯/১০ (১৭.৩ ওভার) (জাকির ৩৯, জাকের ৩১; সানজামুল ৩/২৫)