জাতীয় দলে খেলা এখন অবাস্তব স্বপ্ন ফরহাদের কাছে

ঘরোয়া
জাতীয় দলে খেলা এখন অবাস্তব স্বপ্ন ফরহাদের কাছে
Author photo
তামজিদুর রহমান
· ১ মিনিট পড়া

সম্প্রতি শেষ হওয়া জাতীয় ক্রিকেট লীগের আসরে ২১ উইকেট শিকার করেছিলেন একসময় জাতীয় ক্রিকেট দলের হয়ে খেলা অলরাউন্ডার ফরহাদ রেজা। পাশাপাশি টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি হিসেবেও নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন তিনি।

ঘরোয়া ক্রিকেটের এই পরীক্ষিত পারফর্মার সম্প্রতি শীর্ষ বাংলা দৈনিক কালের কণ্ঠকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন তাঁর সাফল্যের ইতিকথা।  জাতীয় লীগে বরাবরই স্পিনারদের দাপট দেখা গেলেও এবার সেরা উইকেট শিকারি হলেন একজন পেসার।

এর কারণ জানাতে গিয়ে রেজা জানান মূলত শেষ রাউন্ডের খেলা শীতের মধ্যে হওয়ার কারণেই উইকেট বেশি পেয়েছেন তিনি। বিশেষ করে পেসারদের জন্য কন্ডিশন ভালো ছিলো উল্লেখ করে তিনি বললেন, 

'এবার খেলা যে সময়ে হয়েছে, হয়তো সে জন্যই একজন পেসার লিগের সর্বোচ্চ উইকেট নিতে পেরেছে। এই যেমন শেষ রাউন্ডের খেলাটি শীতের মধ্যে হলো। এর আগের রাউন্ডের খেলাগুলোও যে সময়ে হয়েছে, তখনো কন্ডিশন পেসারদের জন্য উপযোগী ছিল। তাই পেসারদের বেশি বেশি বল করতে হয়েছে।'

পেসারদের পাশাপাশি স্পিনাররাও অবশ্য সুবিধা পেয়েছিলেন। তবে তা যথেষ্ট নয় বলে মনে করেন ফরহাদ। বললেন, 'এমন নয় যে স্পিনাররাও উইকেট থেকে সহায়তা পায়নি। ওরাও পেয়েছে। তবে এবার পেসারদেরও করার ছিল অনেক কিছু। দলের চাহিদা অনুযায়ী বেশি বল করে ওরাও পেয়েছে সাফল্য।'

এবারের টুর্নামেন্টে প্রচুর পরিশ্রম করতে হয়েছে পেসারদের বলেও জানান সাবেক এই টাইগার অলরাউন্ডার। ৬ ম্যাচে প্রায় দেড়শ ওভার বল করেছিলেন উল্লেখ করে তিনি বললেন, 

'এবার পেসারদেরও খাটুনি গেছে। আমি, দেলোয়ার, মুক্তার, শরীফুল— প্রত্যেকেই এবার (রাজশাহীর হয়ে) প্রচুর বোলিং করেছি। আমি যেমন একাই ৬ ম্যাচে প্রায় দেড় শ ওভার বোলিং করেছি।'

বল হাতে দুর্দান্ত পারফর্ম করার পর তরুণ পেসারদের একটি বার্তাও দিয়েছেন ফরহাদ রেজা। তাঁর উপদেশ ভালো বোলার হতে হলে প্রচুর খাটতে হবে। বোলিং করতে হবে একটানা।তাহলেই উইকেটের দেখা পাওয়া সম্ভব। রেজার ভাষায়,  'আমি তাদের এই বার্তাই দিতে চাই যে প্রচুর খাটতে হবে। সে জন্য প্রচুর বোলিং করতে হবে। তাহলে উইকেটও পাবে।'

বাংলাদেশের জার্সি গায়ে সর্বশেষ মাঠে নেমেছিলেন ২০১৪ সালে হংকংয়ের বিপক্ষে টি টোয়েন্টি ম্যাচে। আর ওয়ানডে খেলেছিলেন সর্বশেষ ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে। ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত পারফর্ম করলেও বেশ অনেকদিন থেকেই নির্বাচকদের সুনজরে আসতে পারেননি ফরহাদ রেজা।

সেই কারণেই হয়তো এই ৩১ বছর বয়সে এসে দেশের হয়ে খেলার আশা খুব একটা করেন না তিনি। যদিও স্বপ্নটি এখনও মরে যায়নি তাঁর। আর সেটা প্রমাণ পাওয়া গেল তাঁর বক্তব্যেই। রেজা বলছিলেন,

'এটা ঠিক যে আমার জন্য জাতীয় দলের রাস্তাটা এখন অনেক কঠিন। তবু স্বপ্ন তো দেখতে হয়। অবসর নেওয়ার আগ পর্যন্ত স্বপ্নটা দেখতে হবে। স্বপ্ন না দেখলে পারফর্ম করতে পারবো না। তবে এটা ঠিক বলেছেন যে আমার পক্ষে জাতীয় দলে খেলাটা এখন আর বাস্তবসম্মত নয়।'

তবে ঘরোয়া ক্রিকেটে পারফর্ম করার অনুপ্রেরণা মূলত নিজের দল থেকেই আসে বলে জানিয়েছেন রেজা। জাতীয় দলের দরজা বন্ধ হয়ে গেলেও নিজেদের মধ্যে ভালো খেলার চ্যালেঞ্জ নিয়ে এগিয়ে যাওয়াটাই মুখ্য রাজশাহীর এই  অলরাউন্ডারের কাছে। তাই তো অনুপ্রেরণার উৎস সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেন,    

'অনুপ্রেরণা দল থেকেই আসে। আমরা (রাজশাহী) গত দুই বছর ধরে জাতীয় লিগের দ্বিতীয় স্তরে খেলছি। এবার আমরা প্রথম স্তরে উঠে আসার চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলাম। সে জন্য ছয় মাস আগে থেকেই প্রস্তুতি শুরু করেছিলাম। আমরা নিজেরাই ব্যবস্থা করে অনুশীলন চালিয়ে গেছি। নিজেদের মধ্যেই ভালো করার প্রতিজ্ঞা থেকেই আমরা অনুপ্রেরণা খুঁজে নেই।'

আরো পড়ুন: this topic