‘ইংল্যান্ডের দরজা বন্ধ’, মেনে নিয়েছেন অ্যান্ডারসন

ছবি: অনুশীলনে জেমস অ্যান্ডারসন

ল্যাঙ্কাশায়ারের হয়ে আবারও মাঠে ফিরেছেন তিনি। এখনও সেই কৈশোরের মতোই ক্রিকেটকে ভালোবাসেন অ্যান্ডারসন। তাই হৃদয়ের ডাক উপেক্ষা করতে পারেননি তিনি। যদিও শরীর আগের মতো সায় দিচ্ছে না। কয়েক মাসের বিরতি শরীরকে অসাড় করে দিয়েছে। মাঠে ফেরার অনুভূতি জানিয়ে অ্যান্ডারসন যুক্তরাষ্ট্রের দৈনিক ইন্ডিপেন্ডেন্টকে বলেছেন, 'আমার শরীর নিশ্চিতভাবে জানে যে আমি আবার খেলছি—আজ সকালে বিছানা থেকে উঠতে কষ্ট হয়েছে। কিন্তু আমি এটা সম্পূর্ণভাবে উপভোগ করেছি।'
কোহলি-রোহিত না থাকলেও ভারতে প্রতিভার কোনো ঘাটতি নেই: অ্যান্ডারসন
১৪ মে ২৫
দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে দারুণ সুইংয়ে উইকেট নেয়াকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছেন অ্যান্ডারসন। গল থেকে গ্রেনাডা পর্যন্ত, হিমালয়ের পাদদেশ থেকে সাউথ আফ্রিকার তপ্ত রোদে বল হাতে প্রতিপক্ষের বুকে কাঁপন ধরিয়েছেন তিনি। ক্যারিয়ার জুড়ে নিয়েছেন ৭০৩ টেস্ট উইকেট।
সাদা পোশাকের ক্রিকেটকে বিদায় বলতেই হতো অ্যান্ডারসনের। তবে এমন বিদায় হয়তো কখনই ভাবেননি তিনি। বার্নলি ক্রিকেট ক্লাবের পেছনের ছোটো একটা মাঠ থেকে উঠে এসে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট মাতিয়ে লর্ডসের টইটুম্বুর গ্যালারির সামনে বিদায় নেয়া হয়তো অনেক ক্রিকেটারেরই ভাগ্যে জুটে না।

অ্যান্ডারসন বলেন, 'আমি এই মৌসুমে ল্যাঙ্কাশায়ারের হয়ে খেলার জন্য উৎসাহ বোধ করছি, তারপর পরের বছর নিয়ে ভাবব।' এর মধ্যে দিয়ে অ্যান্ডারসন স্বীকার করে নিয়েছেন পুরোদস্তর কোচিং পেশা এখনই তার জন্য নয়। নিজের ভাবনা খোলাসা করে অ্যান্ডারসন বলেন, 'আজ সকালে আমি আবার খেলার সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন করছি, কিন্তু যতক্ষণ আমার শরীর সইবে, ততক্ষণ আমি খেলতে থাকব।'
ইংল্যান্ডেও জয়সাওয়ালের সঙ্গে রাহুলকে চান পূজারা
২৬ মে ২৫
তিনি যোগ করেন, 'ক্রিকেট আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে। আমি এখনও খেলাটাকে ভালোবাসি, বিশেষ করে টেস্ট ক্রিকেট। এটি আমাকে নিজের সম্পর্কে, আমার চরিত্র সম্পর্কে শিখিয়েছে, আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে শিখিয়েছে, চার-পাঁচ দিনের উত্থান-পতন—এটা এমন অনুভূতি দেয় যা জীবনের অন্য কোথাও পাবেন না।'
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ার শেষ হয়েছে ১০ মাস হয়েছে। ব্রেন্ডন ম্যাককালাম ও বেন স্টোকসের পরিকল্পনায় তিনি ছিলেন না। সেই সময় আরও এক দুই বছর খেলার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করছিলেন অ্যান্ডারসন। এরপরও সব মেনে নিয়ে কঠিন সিদ্ধান্তটাই নিতে হয়েছে ডানহাতি পেসারকে।
সেই সময়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে অ্যান্ডারসন বলেন, 'আমি এখনও একটু... দ্বিধাগ্রস্ত। এটা আমার হাতের বাইরে ছিল। তারা আমাকে দল থেকে সরিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তখন এটা খুব কষ্টদায়ক ছিল। আমি আমার শেষ টেস্ট ম্যাচের আগে পরের ১২-১৮ মাসের টেস্ট ক্রিকেটের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম; আমার মাথায় অবসরের কথা ছিল না। আমি এখনও খেলতে চাই, কঠোর পরিশ্রম করতে চাই।'
অনেকেই অ্যান্ডারসনের বিদায় মেনে নিতে পারেননি। ইংল্যান্ড এখন তরুণদের নিয়ে এগোতে চাইছে। দলটিতে একে একে যোগ হচ্ছেন নতুন নতুন পেসার। অনেকেই মনে করেন অ্যান্ডারসনের সঙ্গে অন্যায় হয়েছে। এখনও কী অ্যান্ডারসনের শূন্যতা অনুভব করলে তাকে দলে ফেরাবে ইংল্যান্ড? এমন আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যায় না। ২০২৩ অ্যাশেজের আগে হুট করে অবসর ভেঙে ফেরানো হয়েছিল মঈন আলীকে। সেটাই উদাহরণ হতে পারে অ্যান্ডারসনের জন্য।
তিনিও তৈরি আছেন ডাক পাওয়ার। সেই ভাবনার কথা জানিয়ে অ্যান্ডারসন বলেন, 'আমি মনে করি দরজা সম্ভবত বন্ধ। যদি ফোন পাই, আমি সত্যিই ভাবব, কিন্তু আমি মনে করি না এমন হবে। আমাকে বিবেচনা করার জন্য অনেক বোলার ইনজুরি হতে হবে।'