২০০৫ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে অস্ট্রেলিয়া সফরে ছিলেন মুশফিক। টিম ম্যানেজমেন্ট থেকে ডাক পড়ায় অস্ট্রেলিয়া থেকে ইংল্যান্ডের বিমান ধরেন তিনি। দু-একটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলানোর জন্য ডেকে নেয়া হলেও পারফরম্যান্সে নজর কেড়ে ডাক পেয়ে যান জাতীয় দলেও। লর্ডসে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অভিষেকও হয় মুশফিকের। সেই তো সাদা পোশাকের ক্রিকেটে ডানহাতি উইকেটকিপার ব্যাটারের পথচলা শুরু।
লর্ডসে অভিষেক হওয়া মুশফিক মিরপুরে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে খেলছেন নিজের শততম টেস্ট। পরিশ্রম আর প্রতিনিয়ত নিজের উন্নতি করার চ্যালেঞ্জ উতরে গিয়ে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার রান করেছেন তিনি। ১৩ সেঞ্চুরির সঙ্গে আছে তিনটা ডাবল সেঞ্চুরিও। দুনিয়ার একমাত্র উইকেটকিপার ব্যাটার হিসেবে দুইটা ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন মুশফিক। টেস্টে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি রানের মালিকও তিনিই। তবুও নিজেকে ক্ষুদ্র হিসেবেই দেখছেন অভিজ্ঞ ব্যাটার।
শততম টেস্টের পরিকল্পনা ও প্রত্যাশা নিয়ে মুশফিক বলেন, ‘প্রত্যাশা যদি বলেন আসলে প্রত্যেকটা ম্যাচেই আমার চেষ্টা থাকে আমি যেন আমার সেরা এফোর্টটা দিতে পারি এবং দলের জয়ের জন্য যত বেশি সম্ভব আমি অবদান রাখতে পারি। গতকালকে ম্যাচের শুরুতে আমি একটা কথা বলেছিলাম হার্ডলে যে ১০০ ম্যাচ হোক, আমার বা যেকারো যেকোনো মাইলফলক হোক— সবসময় সবার আগে দল। আমি এটাই বলেছি বাংলাদেশের জন্য আমি মুশফিকুর রহিম— আমার কাছে মনে হয় একটা সমুদ্রের দুই-একটা পানির ফোঁটা।’
‘আমার মনে হয় নাম বড় কিনা সেটা ভিন্ন জিনিস। সবসময় বাংলাদেশ সবার আগে, দলই সবার আগে। সুতরাং আমি এই মেসেজটা দেয়ার চেষ্টা করি যে আমার জন্য না, দেশের জন্য আমরা খেলি এবং এই ম্যাচের জয়টাই আমার জন্য সবচেয়ে বড় গিফট হবে। আমি রান করি কিংবা না করি সেটা কোনো ব্যাপার না। কিন্তু আলহামদুলিল্লাহ ভালো লাগছে যে একটা কিছু অবদান রাখতে পেরেছি। অবশ্যই, চাইবো এই ম্যাচটা যেন জিতি এবং সেটা আরও ভালোভাবে উদযাপন করতে পারি ইনশাআল্লাহ।’
সবশেষ কয়েক দিন ধরেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে মুশফিক। শততম টেস্ট উপলক্ষ্যে সতীর্থ, সাবেক সতীর্থ কিংবা সমর্থকরা ট্রিবিউট দিয়েছেন বিভিন্নভাবে। ডানহাতি ব্যাটারের মাইলফলক উদযাপন করতে বিশেষ আয়োজন ছিল বাংলাদেশের ক্রিকেট বোর্ডেরও (বিসিবি)। টেস্ট শুরুর আগে সকালে নানাভাবে মুশফিককে সম্মানিত করার চেষ্টা করেছে দেশের ক্রিকেট বোর্ড। তাদের এমন আয়োজন দেখে সম্মানিতবোধ করছেন মুশফিক।
তিনি বলেন, ‘১০০ টেস্ট বড় একটা ব্যাপার। সময়ের সাথে সাথে আমি এখানে পৌঁছেছি এবং এগুলো সবকিছু শিখে গেছি। অভিজ্ঞতাটা কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছি এবং শান্ত থাকার চেষ্টা করেছি। সত্যি বলতে গতকাল সকালে বিসিবি যেটা পরিকল্পনা করেছিল সেটার জন্য তাদেরকে ধন্যবাদ। ভালো লেগেছে এবং গতকাল যেটা হয়েছে সেটার জন্য সত্যিই সম্মানিতবোধ করছি।’