এমন একটা টেস্টকে উদযাপন করতেই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের বিশেষ আয়োজন। আতহার আলী খানের সঞ্চলনায় সময় মতোই আয়োজিত হয়েছে। মুশফিককে সম্মান জানানোর সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তাঁর অভিষেক টেস্টের স্কোয়াডের হাবিবুল বাশার, আনোয়ার হোসেন মনির, মোহাম্মদ রফিক, খালেদ মাসুদ পাইলট, নাফিস ইকবাল, মোহাম্মদ আশরাফুল, শাহরিয়ার নাফীস ও তালহা জুবায়ের।
সাবেক সতীর্থদের পাশাপাশি সেখানে ছিলেন মুশফিকের বাবা মাহবুব হামিদ, মা তারা বেগম, স্ত্রী জান্নাতুল কিফায়াত, ছেলে মায়ান ও দুই বছরের মেয়ে সেহার। ২০০৫ সালে লর্ডসে ডানহাতি ব্যাটারকে অভিষেক ক্যাপ পড়িয়ে দিয়েছিলেন বাশার। বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক মুশফিকের প্রথম ও শততম টেস্টের সতীর্থদের সিগনেচার করা জার্সি উপহার তুলে দেন। যেখানে বাশারের সঙ্গী ছিলেন বর্তমান অধিনায়ক শান্ত।
মুশফিককে বিশেষ উপহার দিয়েছেন আকরাম খান। এ ছাড়া ডানহাতি ব্যাটারকে ক্রেস্ট তুলে দিয়েছেন বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল ও ক্রিকেট অপারেশন্স বিভাগের চেয়ারম্যান নাজমুল আবেদিন ফাহিম। মিরপুরে এতসব আয়োজন দেখে দ্বিধায় পড়ে গেছিলেন মুমিনুল হক। বাঁহাতি ব্যাটার একটা সময় ভেবেছিলেন বিষয়টি অবসরের দিকে যাচ্ছে। যদিও পরোক্ষণে বুঝেছেন এটা আদৌতে মুশফিকের শততম টেস্ট উদযাপনের অংশ। মুমিনুল জানালেন, এমন পরিবেশ তিনি আগে কখনো দেখেননি।
এ প্রসঙ্গে মুমিনুল বলেন, ‘এই পরিবেশ তো আগে কোনো সময় দেখিনি, সত্যি কথা। এমনকি কারও অবসরের সময়ও দেখিনি। একটা সময় মনে হচ্ছিল যে, অবসরের দিকে যাচ্ছে! পরে দেখলাম যে, নাহ, ১০০ টেস্টের মতো হচ্ছে। মানে মনে হচ্ছিল যে, কেউ যখন অবসর নেয়, তখন অন্যান্য দেশে এভাবেই… আমাদের দেশে নয়, অন্যান্য দেশে এরকম দেখি আর কী। এবার আমার নিজে দেখে অনেক ভালো লাগল। আমার কাছে মনে হয়, এই জিনিসটা এই সংস্কৃতি যদি সবসময় থাকে বাংলাদেশে, তো তরুণ প্রজন্ম যারা আছে, তারাও টেস্ট খেলার জন্য বা ১০০ টেস্ট খেলার জন্য অনুপ্রাণিত হবে।’
নিজের শততম টেস্টের প্রথম দিনটা বেশ ভালোভাবেই রাঙিয়েছেন মুশফিক। প্রথম দিনেই সুযোগ ছিল সেঞ্চুরি করে রিকি পন্টিং, স্টিভ স্মিথ, ডেভিড ওয়ার্নারের পাশে নাম লেখানোর। শেষ ওভারে ৩ রান প্রয়োজন হলেও সেখান থেকে মুশফিক করতে পেরেছেন ২ রান। সেঞ্চুরি পেতে মুশফিকের আর মাত্র একটি রান প্রয়োজন। মুমিনুলের মনে করেন, ১০০ টেস্ট খেলা কিংবা সেঞ্চুরি করা সবই তাঁর প্রাপ্য। পাশাপাশি মুশফিকের নিবেদনের প্রশংসা করেছেন মুমিনুল।
বাংলাদেশের সাবেক টেস্ট অধিনায়ক বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয়, এরকম একটা মানুষ বাংলাদেশে আমি জানি না দ্বিতীয়বার তৈরি হবে কী হবে না, অথবা জন্মাবে কি না। তিনি রান করুক না করুক, তার জিম, রানিং, খাদ্যাভ্যাস থেকে শুরু করে সব একইভাবে চলতে থাকে। অনেকের মধ্যেই থাকে যে একটু হতাশা আসে নানা সময়, উনার মধ্যে কোন হতাশা নাই। ভালো খেলুক বা না খেলুক, উনি সব মেইনটেইন করে চলতে থাকেন। আমার কাছে মনে হয়, এটার ফল পাচ্ছেন। ১০০ টেস্ট, ১০০ রান উনার প্রাপ্য। কালকে তো যদি ২০০ করেন, সেটাও উনার প্রাপ্য।’