বাংলাদেশের ক্রিকেটে রান, সেঞ্চুরি কিংবা পরিসংখ্যানের বাইরে গিয়েও অন্য একটা জায়গায় বিশেষ। ‘বিশেষ’ বলতে একেবারেই বিশেষ। বছর কয়েক আগের কথা; সমালোচনার জবাব দিতে গিয়ে একটু ক্ষোভ থেকেই ডানহাতি এই ব্যাটার বলেছিলেন, ‘আমি যখন অনুশীলনে সকালে উঠি, আপনাদের বেশিরভাগ তখন ঘুমিয়ে থাকে।’ সেদিন ক্ষোভ থেকে এমনটা বললেও কথাটা একেবারে মিথ্যা নয়।
ক্রিকেটের প্রতি মুশফিকের ভালোবাসা এতটা বেশি যে নিজের ওয়ার্ক এথিক্সকে ভিন্নতা দিয়েছেন। অনুশীলনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় কাটানো, নিজেকে প্রস্তুতি নেয়া, নিয়মাবর্তিতা, ডিসিপ্লিন সবই মুশফিককে বিশেষ বানিয়েছে। দুই দফায় বাংলাদেশের প্রধান কোচ হিসেবে কাজ করায় খুব কাছ থেকে ডানহাতি ব্যাটারকে দেখার সুযোগ পেয়েছেন হাথুরুসিংহে। ২০১৪ সালের ১৯মে প্রথমবার বাংলাদেশের কোচ হয়ে এসেছিলেন লঙ্কান এই কোচ। বাংলাদেশের অন্যতম সফল কোচ চাকরি ছাড়েন ২০১৭ সালের ২৯ অক্টোবর।
পরবর্তীতে ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি আবারও বাংলাদেশের দায়িত্ব নেন হাথুরুসিংহে। অম্ল-মধুর সম্পর্কের ইতি ঘটে গত বছরের সেপ্টেম্বরে। দুই দফায় হাথুরুসিংহের অধীনে খেলার সুযোগ হয়েছে মুশফিকের। প্রথম দফায় ৩ সেঞ্চুরি ও ৫ হাফ সেঞ্চুরিতে ২০ টেস্টে ১ হাজার ৩৪৩ রান করেছিলেন। পরের দফায় মুশফিকের ব্যাট থেকে এসেছে ৮ টেস্টে ৬৪০ রান। সমান দুইটি করে সেঞ্চুরি ও হাফ সেঞ্চুরি করেছেন তিনি।
জাতীয় দলের হয়ে এখনো পর্যন্ত ৯৯ টেস্টে ২৭ হাফ সেঞ্চুরি ও ১২ সেঞ্চুরিতে ৬ হাজার ৩৫১ রান করেছেন ডানহাতি এই ব্যাটার। ক্যারিয়ারের ১২ টেস্ট সেঞ্চুরির পাঁচটিই করেছেন হাথুরুসিংহের সময়কালে। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে মিরপুর টেস্ট দিয়ে বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ১০০ টেস্ট খেলতে যাচ্ছেন মুশফিক। সেই ম্যাচের আগে ক্রিকফ্রেঞ্জির সঙ্গে আলাপকালে হাথুরুসিংহে জানালেন, পর্দালের আড়ালের মুশফিক তাঁর কাজটা সহজ করে দিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের সাবেক প্রধান কোচ বলেন, ‘আমি দুই দফায় বাংলাদেশের কোচ ছিলাম, ওই সময় আমাদের সাফল্যের বড় একটা অংশে মুশফিকের বিশাল প্রভাব ছিল । মুশফিকের কঠোর পরিশ্রম করার মানসিকতা, কঠিন মুহূর্তে দায়িত্ব নেয়া এবং নীরবে তরুণদের পরামর্শ দেয়ার প্রবণতা—এসবই আমার কাজ কিংবা চাকরিকে সহজ করে দিয়েছিল।’