বাংলাদেশের ঘরোয়া টুর্নামেন্টকে সামনে রেখে বাংলাদেশে পা রেখেছেন সাইমন টাফেল। বগুড়া কিংবা রাজশাহীতে যাওয়ার আগে ১৩ সেপ্টেম্বর এসেছিলেন মিরপুরে। বিসিবির সঙ্গে আলোচনা করে নিজের কাজ সম্পর্ক ধারণা দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি বাংলাদেশ তাঁর কাছে কী চায় সেটারও একটা ধারণা পেয়েছেন। তবে কীভাবে কাজ করবেন সেটা নিয়ে গণমাধ্যমকে এখনো নির্দিষ্ট কোনো প্রক্রিয়ার কথা জানাননি আইসিসির সাবেক আম্পায়ার।
মূলত বাংলাদেশের আম্পায়ার ও রেফারিদের মান উন্নতি করতেই বিসিবির সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন তিনি। টাফেলের কাজটা শুরু হচ্ছে এনসিএল টি-টোয়েন্টিতে। কোনো প্রোগ্রাম তৈরি করার আগে বাংলাদেশের আম্পায়ার ও রেফারিদের মান পরখ করে নিতে চান তিনি। সেটা করতেই বগুড়া ও রাজশাহীতে যাচ্ছেন। যেখানে প্রায় ৩০ জন ম্যাচ অফিসিয়ালসকে কাছ থেকে দেখার সুযোগ পাবেন। টাফেল নিশ্চিত করেছেন, তাদের সম্পর্কে ধারণা পাওয়ার পরই একটা প্রোগ্রাম তৈরি করবেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে টাফেল বলেন, ‘এখানে আমি পূর্ববর্তী কোনো ধারণা কিংবা বায়াসনেস ছাড়াই এসেছি। আমি সরাসরি দেখতে চাই ক্রিকেটের মান কেমন, ম্যাচ পরিচালকদের মান কেমন—টিভি আম্পায়ারিং, ম্যাচ রেফারিং এবং মাঠের আম্পায়ারিংয়ের মান কেমন। আমি দেখতে চাই আম্পায়াররা কী কী ভালো করছে, তাদের পারফরম্যান্সের ঘাটতিগুলো কোথায়। তারপর সেই অনুযায়ী একটা প্রোগ্রাম ও রিসোর্স তৈরি করতে চাই যা সমস্যাগুলো সমাধান করবে।’
‘এখানে ব্যবসার দিক যেমন আছে তেমনি ব্যবসার ভেতরে কাজেরও একটা জায়গা আছে। আগামী কয়েক সপ্তাহ এনসিএল টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট দেখলে আমি ৩০ জনের মতো ম্যাচ অফিসিয়ালসের পারফরম্যান্স সম্পর্কে একটা ধারণা পাব। তখন এটা আমাকে বুঝতে সাহায্য করবে কীভাবে এখনকার ম্যাচ অফিসিয়াল সিস্টেমকে আরও উন্নতি করে পরবর্তী পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া যাবে।’
বিভিন্ন দেশের পাশাপাশি আইসিসির সঙ্গেও আম্পায়ার ও ম্যাচ রেফারিদের মান উন্নয়নে কাজ করেছেন টাফেল। বাংলাদেশে আম্পায়ারদের জন্য কী পারফরম্যান্স ইন্ডিকেটর তৈরি করবে টাফেলের অ্যাজেন্সি। ম্যাচ অফিশিয়াল বিভাগের গঠনপ্রণালি, আম্পায়ারদের জন্য ট্রেনিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট গঠনপ্রণালির পথও দেখাবে তারা। একটা সিস্টেম দাঁড় করানোর পর এডুকেশন ডিপার্টমেন্টকে বিশ্ব মানের গড়ে তোলার চেষ্টা করবেন টাফেল।
সেই সঙ্গে টাফেলের অ্যাজেন্সির রিপোর্টের ভিত্তিতেই আম্পায়ারদের গ্রেডিং করা হবে। সাবেক অস্ট্রেলিয়ান আম্পায়ারের জানান, বাংলাদেশে তিনি এমন একটা পরিবেশ তৈরি করতে চান যেখানে এখানকার আম্পায়ার ও ম্যাচ রেফারিরা নিজেদের সামর্থ্য দেখাতে পারেন। টাফেলের চাওয়া বাংলাদেশ থেকেও বিশ্ব মানের ম্যাচ অফিসিয়ালস বেরিয়ে আসুক এবং নিজেদের প্রতিভার বিকাশ ঘটাক।
এ প্রসঙ্গে টাফেল বলেন, ‘আমাদেরকে প্রতিভা শনাক্ত করতে হবে এবং নূন্যতম একটা মান নির্ধারণ করতে হবে। আমাদেরকে একটা স্বচ্ছতা, নিশ্চয়তা এবং যোগ্যতার ভিত্তিতে একটা সিস্টেস তৈরি করতে হবে যাতে আম্পায়ার ও রেফারিরা সঠিকভাবে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। যাতে করে সৈকতের মতো আন্তর্জাতিক পর্যায়ের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করতে পারে। আমরা চাই বিশ্বের এই অংশ থেকে সেরা ম্যাচ অফিসিয়ালরা উঠে আসুক, তাদের প্রতিভার বিকাশ ঘটাক এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অবদান রাখুক।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘আমি এখানে সহায়তা করার এসেছি। আমি এখানে এমন একটা পরিবেশ তৈরি করতে চাই যাতে আম্পায়ার ও রেফারিরা নিজেদের সামর্থ্য দেখাতে পারে। সেই সঙ্গে নিজেরা বড় হওয়া, উন্নতি করা, বাংলাদেশের ক্রিকেটকে সার্ভ করা এবং ঘরোয়া ক্রিকেটের মানও যেন বাড়াতে পারে। এবং এটা নিশ্চিত করতে হবে তারা সেরা কেউ হতে যাচ্ছে এবং তারা সেটা হতেও পারবে।’