১৯৮৪ সাল থেকে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে এশিয়া কাপ। এখন পর্যন্ত হওয়া ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি মিলে ১৬টি আসর হয়েছে। যেখানে ১৩বার ফাইনাল খেলেছে শ্রীলঙ্কা, বাকি তিনটি আসরে ফাইনালে উঠতে পারেনি তারা। ১১বার ফাইনাল খেলেছে ভারত। সবশেষ কয়েক আসরেও ভারতের সঙ্গে টক্কর দিয়েছে লঙ্কানরা। সবশেষ পাঁচ আসরের তিনটিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত। বাকি দুই মৌসুমে শিরোপা উঁচিয়ে ধরেছে শ্রীলঙ্কা। যদিও শক্তি-সামর্থ্যে ভারতের আশেপাশে নেই চারিথ আসালাঙ্কারা।
শ্রীলঙ্কার বাইরে বাকি দলগুলোর অবস্থাও তাই। ভারত ও শ্রীলঙ্কার বাইরে দুইবার শিরোপা জেতার অভিজ্ঞতা আছে পাকিস্তান। এ ছাড়া বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, হংকং, নেপাল, ওমানের কেউই কখনো চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি। যার ফলে দলগুলোর মধ্যে পার্থক্য স্পষ্টই। অশ্বিন চাওয়া ভারতের ‘এ’ দলকে পাঠিয়ে কিছুটা প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়ানো। এ ছাড়া সাউথ আফ্রিকাকে যুক্ত করে এশিয়া কাপকে আফ্রো-এশিয়া কাপে রূপান্তরের পরামর্শও দিয়েছেন তিনি।
নিজের ইউটিউব চ্যানেলে অশ্বিন বলেন, ‘তারা (এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল) সাউথ আফ্রিকাকে এখানে অন্তর্ভুক্ত করতে পারে এবং টুর্নামেন্টের প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়াতে এটিকে আফ্রো-এশিয়া কাপে রূপ দিতে পারে। এখন যে অবস্থায় আছে, তাদের উচিত ভারত ‘এ’ দলকে এই টুর্নামেন্টে নিয়ে কিছুটা প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তোলা।’
ভারতের বাইরে সবশেষ কয়েক বছরে সবচেয়ে বেশি উন্নতি করেছে আফগানিস্তান। নিজেদের দেশে খেলার সুযোগ না থাকলেও ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের বদৌলতে এশিয়ার নতুন শক্তি হয়ে উঠছে তারা। বিশেষ করে রশিদ খান, মুজিব উর রহমান, নূর আহমেদ, মোহাম্মদ গাজানফার, মোহাম্মদ নবির মতো স্পিনাররা প্রতিপক্ষ শিবির ভয় ধরিয়ে দিতে পারেন। ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপ ও ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফলাফলেও সেই চিত্র ফুটেছে।
যদিও বোলিংয়ের মতো ব্যাটিংয়ে উন্নতি করতে পারেনি তারা। অশ্বিনও সেই বিষয়টি সামনে এনেছেন। ভারত যদি ১৭০ কিংবা তাঁর চেয়ে বেশি রান করলে আফগানরা সেটা তাড়া করতে পারবে না বলে মনে করেন তিনি। অশ্বিন বলেন, ‘আফগানিস্তানের বোলারদের তথাকথিত হুমকির কথাও যদি বলি, ভারত ১৭০-এর বেশি রান করলে তারা কি সেটা তাড়া করতে পারবে? এটা তো অসম্ভরের কাছাকাছি।’
এশিয়া কাপ জিততে হলে সবার আগে ভারতকে আটকাতে হবে। এটা যেন অলিখিত এক নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। সূর্যকুমার যাদব-জসপ্রিত বুমরাহদের হারানোর পথও বাতলে দিয়েছেন অশ্বিন। ভারতের সাবেক স্পিনার জানান, নিজেদের ভালো দিনে ভারতকে ১৫৫ রানের মধ্যে আটকে দিয়ে সেটা তাড়া করতে হবে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট রোমাঞ্চকর হলেও এশিয়া কাপকে ভারত একতরফা বানিয়ে ফেলেছে বলে মত দিয়েছেন তিনি।
অশ্বিন বলেন, ‘আমি একদিক থেকে আশা করি, অন্য কোনো দল যেন এই টুর্নামেন্টে শিরোপা জেতে। তাহলে অন্তত এশিয়া কাপে কিছুটা হলেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা ফিরবে। ভারতকে হারানোর একমাত্র উপায় হতে পারে, নিজেদের একটা ভালো দিনে কোনোভাবে ভারতকে ১৫৫ রানের মধ্যে আটকে রাখা এবং সেটি তাড়া করা। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট এমনিতে রোমাঞ্চকর, তবে এশিয়া কাপে ভারত এটিকে একতরফা বানিয়ে ফেলবে বলেই মনে হয়।’
সবাইকে নিয়ে আলোচনা করলেও বাংলাদেশকে বিশ্লেষণের বাইরে রেখেছেন অশ্বিন। সেই ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে ভারতের সাবেক স্পিনার বলেন, ‘আমরা তো এমনকি বাংলাদেশকে নিয়ে কথাই বলিনি। কারণ তাদেরকে নিয়ে কথা বলার কিছু নেই। এই দলগুলো ভারতের সঙ্গে লড়াই করবে কিভাবে?’