বুলবুলের আগমনী দিনে পাকিস্তানে বাংলাদেশের সিরিজ হার

ছবি: এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ হারল বাংলাদেশ, পিসিবি

২০২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই আগ্রাসী ভঙ্গিমায় খেলতে থাকেন তানজিদ হাসান তামিম। দুটি চার ও একটি ছক্কায় সালমান আঘার করা প্রথম ওভারেই ১৭ রান তোলেন তিনি। হাসান আলীর করা দ্বিতীয় ওভারে ১৫ রান তোলে বাংলাদেশ। এই ওভারে দুটি চার মারেন তানজিদ। তৃতীয় ওভারে বোলিংয়ে আসেন ফাহিম আশরাফ। এই ওভারে বাংলাদেশ নেয় ছয় রান।
শাস্তি নয়, পারফরম্যান্সের কারণেই ছাঁটাই ফারুক: আসিফ মাহমুদ
১১ ঘন্টা আগে
চতুর্থ ওভারে ফিরে যান আরেক ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন। হারিস রউফের লেংথ ডেলিভারিতে মিড অনে ক্যাচ তুলে দেন এই ওপেনার। ফেরার আগে করেন সাত বলে আট রান। পঞ্চম ওভারে ফিরে যান তানজিদ। ১৯ বলে ৩৩ রান করা এই ওপেনার ফাহিমের লেংথ ডেলিভারিতে শর্ট ফাইন লেগে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন তিনি। এই ওভারে তিন রান নেয় বাংলাদেশ।
৪৪ রানে প্রথম উইকেট হারানো বাংলাদেশ দ্বিতীয় উইকেট হারায় ৪৬ রানে, তৃতীয় উইকেট হারায় ৫৪ রানে। চতুর্থ ও পঞ্চম উইকেট হারায় ৫৬ রানে। পাওয়ার প্লে'র একদম শেষ বলে লিটন দাস ৯ বলে ছয় রানে ফিরে যান। হাসান আলীর ওয়াইড লেংথে করা ডেলিভারিটি খেলতে গিয়ে মিস টাইমিং করেন বাংলাদেশের অধিনায়ক। মিড অনে ক্যাচটি ধরেন হারিস রউফ।
সপ্তম ওভারে আক্রমণে আসেন আবরার আহমেদ। তাওহীদ হৃদয়কে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে ফেলেন তিনি। পরের বলে জাকের আলী অনিককেও একইভাবে প্যাভিলিয়নে ফেরান তিনি। ১৮ বলের মধ্যে বাংলাদেশ শুরুর পাঁচ উইকেট হারায়। নবম ওভারের মধ্যে নিজের তৃতীয় শিকার তুলে নেন আবরার। এবার শামীমকে ফেরান তিনি। ডিপ মিড উইকেটে উড়িয়ে মারতে গিয়ে সাইম আইয়ুবের সহজ ক্যাচে পরিণত হন শামীম। ৯ বলে সাত রান আসে শামীমের ব্যাটে। বাংলাদেশ ৭০ রানে ছয় উইকেট হারায়।
দশম ওভারের মধ্যে রিশাদ হোসেনের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। শাদাব খানের বলে কাট করতে গিয়ে উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ দেন রিশাদ। দুই বলে এক রান করা রিশাদ ফিরে যান দলীয় ৭৭ রানে। ১২.৪ ওভারে তানজিম হাসান সাকিবের ছক্কায় ১০০ রান অতিক্রম করে বাংলাদেশ। দলের দুর্দিনে হাল ধরতে পারেননি মেহেদী হাসান মিরাজ। ১৭ বলে ২৩ রান করে খুশদিল শাহের বলে শর্ট থার্ডে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। তার বিদায়ে ১১০ রানে অষ্টম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। শেষদিকে তানজিম হাসান সাকিবের ৩১ বলে ৫০ রানের ইনিংসে পরাজয়ের ব্যবধানই কমাতে পেরেছে বাংলাদেশ। ১৯ ওভারে ১৪৪ রান করে লিটনের দল। আগের ইনিংসে ইনজুরিতে পড়ায় শরিফুল আর ব্যাটিংয়ে নামেননি।

এর আগের ইনিংসে ৪১ বলে ৭৪ রানের ইনিংস খেলার পথে তিনবার জীবন পান সাহিবজাদা ফারহান। তার সঙ্গে একশ'র বেশি রানের জুটি গড়া মোহাম্মদ হারিস খেলেন ২৫ বলে ৪১ রানের ইনিংস। সঙ্গে শেষদিকে হাসান নওয়াজের ২৬ বলে ৫১ রানের ক্যামিও হাফ সেঞ্চুরিতে ছয় উইকেটে ২০১ রান তোলে পাকিস্তান।
পাকিস্তান সিরিজ শেষ শরিফুলের
১২ ঘন্টা আগে
ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই অবশ্য রান আউট হন সাইম আইয়ুব। ওভারের শেষ বলে লং অন থেকে তাওহীদ হৃদয়ের থ্রো'তে রান আউটের ফাঁদে পড়েন তিনি। সাইম ফিরেন চার রান করে।
এরপর ফারহান-মোহাম্মদ হারিসের ঝড়ে পাওয়ার প্লে'তে পাকিস্তান করে এক উইকেটে ৬৭ রান। মাত্র ২৩ বলে নিজেদের জুটির পঞ্চাশ পূরণ করেন ফারহান-হারিস। পাওয়ার প্লে'র পর দুই ওভার খানিকটা রয়েসয়ে খেলে পাকিস্তান। নবম ওভারে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন শূন্য ও ৩৭ রানে দুবার জীবন পাওয়া ফারহান।
হাফ সেঞ্চুরির পর আরো আগ্রাসী হয়ে ওঠেন ফারহান। দশম ওভারে রিশাদকে ডিপ স্কয়ার আর স্ট্রেইটে দুটি ছক্কা হাঁকান তিনি। ফলে পাকিস্তান একশ রান স্পর্শ করে পঞ্চাশ বলে। রিশাদকে দুই ছক্কা মারার আগের বলটি অবশ্য আকাশে তুলে দেন ফারহান। অনেকটা দৌড়ে হাত ছোঁয়ালেও মুঠোয় জমাতে পারেননি মিরাজ। প্রথম ১০ ওভারে তৃতীয়বারের মতো ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যান এই ওপেনার।
এই জুটি বেশ জমে ওঠে। ৫০ বলে জুটির রান একশ স্পর্শ করে। যদিও ১১তম ওভারের শেষ বলে এই জুটি ভাঙেন তানজিম। তার স্লোয়ারে কাট করতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ধরা পড়েন মোহাম্মদ হারিস। ফেরার আগে তিনি করেন ২৫ বলে ৪১ রান। চারটি চার ও দুটি ছক্কায় সাজানো ছিল এই ইনিংস। তার বিদায়ে ভাঙে ৫৪ বলে ১০৩ রানের জুটি। পরের ওভারে ফারহানকে ফেরান রিশাদ। ওভারের তৃতীয় বলে লং অনে তাকে একটি ছক্কা হাঁকান ফারহান।
যদিও পরের স্লো হয়ে আসা শর্ট লেংথের পরের বলে কাট করতে গিয়ে বটম এজ হয়ে উইকেটরক্ষককে ক্যাচ দেন ফারহান। লিটন দাস ক্যাচটি লুফে নেন। ৪১ বলে চারটি চার ও ছয়টি ছক্কায় ৭৪ রান করেন ফারহান। এরপর হাসান নওয়াজ এবং সালমান আঘার ব্যাটে ১৪তম ওভারে ১৫০ পেরিয়ে যায় পাকিস্তানের ইনিংস। ১৫তম ওভারে দুর্দান্ত এক ইয়র্কারে সালমান আঘাকে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে ফেলেন হাসান মাহমুদ। র্যাম্প শট খেলতে চাইলেও সফল হননি পাকিস্তান অধিনায়ক। তিনি এ দিন ১২ বলে ১৯ রান করেন। ২৫ বলে ৪৫ রানের জুটি ভাঙে তার বিদায়ে। শেষদিকে হাসান নওয়াজের ইনিংসে দুইশ ছাড়ায় পাকিস্তান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
পাকিস্তান- ২০১/৬ (২০ ওভার) (ফারহান ৭৪, নওয়াজ ৫১* হারিস ৪১; তানজিম ২/৩৬, হাসান ২/৪৭)
বাংলাদেশ- ১৪৪/১০ (১৯ ওভার) (তানজিম ৫০, তানজিদ ৩৩; আবরার ৩/১৯)