তামিম-ইমরুল ইতিবাচক সূচনা

ছবি:

সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ, প্রথম ইনিংসঃ
৫১৩ অল আউট (১২৯.৫ ওভার) মমিনুল ১৭৬, মুশফিক ৯২, মাহমুদুল্লাহ ৮৩*।
হেরাথ ৩/ ১৫০, লাকমল ৩/ ৬৮।
শ্রীলঙ্কা, প্রথম ইনিংসঃ
৭১৩/৯ ডিক্লে (১৯৯.৩ ওভার ) কুশল মেন্ডিস ১৯৬, ধনঞ্জয় ডি সিলভা ১৭৩ এবং রোশেন সিলভা ১০৯।
বাংলাদেশ, দ্বিতীয় ইনিংসঃ
৩৫/০ (৯ ওভার) তামিম ইকবাল ২৩*, ইমরুল কায়েস ১১*
শ্রীলংকার লিডঃ
৯ রানে পিছিয়ে থেকে চতুর্থ দিন শুরু করেছিল সফরকারীরা। দিনের শুরুতেই বাংলাদেশের বিপক্ষে লিড পায় লঙ্কানরা। প্রতিপক্ষের বোলারদের দেখে শুনে খেলে দিনের শুরুতেই সেঞ্চুরি তুলে নেন রোশেন সিলভা। তাকে সঙ্গ দেয়া অধিনায়ক দীনেশ চান্দিমালও দ্রুত পৌঁছে যান অর্ধশতকে। তবে ১০৯ রান করে রোশেন ফিরলেও নিরোশান ডিকওয়েলাকে সঙ্গে নিয়ে রানের চাকা সচল রাখেন লঙ্কান দলপতি।
দুজন মিলে দলকে ৬০০ রানের পুঁজি এনে দিয়ে লাঞ্চ বিরতিতে যান। কিন্তু লাঞ্চের পর ব্যাট করতে নেমেই তাইজুলের দ্বিতীয় শিকার হয়ে বিদায় নেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। এরপর ডিকওয়েলা এবং পেরেরা মিলে পঞ্চাশ ঊর্ধ্ব জুটি গড়েন। সঙ্গে ডিকওয়েলা তুলে নেন ফিফটি। ফিফটি হাঁকিয়ে তিনি ফিরেছেন মিরাজের তৃতীয় শিকার হয়ে।
এরপর হেরাথ এবং পেরেরা মিলে স্কোরবোর্ডে রান যোগ করলেও সানজামুলের প্রথম শিকার হয়ে ফেরেন পেরেরা। পরবর্তীতে লাকমাল এবং হেরাথ মিলে উইকেটে থিতু হয়ে খেলে দলকে চা পান বিরতিতে নিয়ে যান। চা বিরতির পর ব্যাট করতে নেমেই তাইজুলকে উইকেট দিয়ে বসেন লাকমাল। তবে লাকমাল ফিরলেও হেরাথের ব্যাটে ২০০ রানের লিড পায় শ্রীলংকা।
২০০ রানের লিড পাওয়ার পর আবারও আঘাত হানেন তাইজুল। হেরাথকে ২৪ রানে সাজঘরে ফেরান এই বাঁহাতি স্পিনার। এরপরই ইনিংস ঘোষণা করেন লঙ্কান দলপতি দীনেশ চান্দিমাল।

রোশেন সিলভার অভিষেক সেঞ্চুরিঃ
ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে নেমেই সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন লঙ্কান ব্যাটসম্যান রোশেন সিলভা। তৃতীয় দিন ৮৭ রানে অপরাজিত থেকে দিন শেষ করেছিলেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। চতুর্থ দিন সকালে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ঘণ্টায়ই সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি। তবে সেঞ্চুরি হাঁকানোর পর ইনিংসটাকে বেশীদূর টানতে পারেননি এই লঙ্কান। মেহেদি হাসান মিরাজের বলে উইকেট রক্ষক লিটনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেছেন ১০৯ রান করে।
চান্দিমালের ফিফটিঃ
প্রতিপক্ষ হিসেবে বাংলাদেশকে পেলেই হেসে উঠে চান্দিমালের ব্যাট। চট্টগ্রাম টেস্টেও সেটাই হয়েছে। হাসছে চান্দিমালের ব্যাট। টেস্টে রিয়াদ বাহিনীর বিপক্ষে তার ব্যাটং গড় ১০৭। আগের দিন ৩৭ রান নিয়ে অপরাজিত থাকা চান্দিমাল দিনের শুরুতেই তুলে নেন ফিফটি। অর্ধশতক হাঁকানোর পর ব্যক্তিগত শতকের দিকে আগাতে থাকেন এই ডানহাতি।
১৩৫ রানের জুটি ভাঙ্গনঃ
চান্দিমাল এবং রোশেন সিলভা মিলে চতুর্থ উইকেট জুটিতে গড়েছেন ১৩৫ রান। উইকেটে থিতু হয়ে খেলতে থাকা সেঞ্চুরিয়ান রোশেন সিলভাকে ১০৯ রানে সাজঘরে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙ্গেন স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ।
ডিকওয়েলা-চান্দিমালের পঞ্চাশ জুটিঃ রোশেন ফিরে যাওয়ার পর চান্দিমালের সঙ্গে ৫০ রানের জুটি গড়ে দলকে ৬০০ রানের পুঁজি এনে দিয়েছেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান নিরোশান ডিকওয়েলা।
ক্যাচ মিসের মহড়াঃ
চতুর্থ দিন এখন পর্যন্ত তিনটি সুযোগ হাতছাড়া করেছে বাংলাদেশের ফিল্ডাররা। মিরাজের বলে দিনের শুরুতেই শর্ট লেগে রোশেন সিলভার ক্যাচ লুফে নিতে ব্যর্থ হন মোসাদ্দেক হোসেন। এর খানিক পর আবারও মিরাজের বলে চান্দিমালের ক্যাচ ফেলেন উইকেট রক্ষক লিটন কুমার দাস। আর লাঞ্চের ঠিক পূর্বে স্লিপে দাঁড়িয়ে নিরোশান ডিকওয়েলার ক্যাচ লুফে নিতে ব্যর্থ হন মিরাজ।
বরাবরের মতই সুযোগ কাজে লাগাতে ভুল করেননি লঙ্কান ব্যাটসম্যানরা। সদ্য ক্রিজে আসা ডিকওয়েলা ৩০ বলে দ্রুত ২৯ রান যোগ করে শ্রীলংকার লিড বাড়াতে থাকেন। কিছুটা সতর্ক ব্যাটিং করলেও লঙ্কান চতুর্থ সেঞ্চুরিয়ান হওয়ার পথে এগিয়ে যাচ্ছেন দলপতি চান্দিমাল। লাঞ্চ বিরতিতে যাওয়ার আগে অপরাজিত ছিলেন ৮৭ রান নিয়ে। শেষ পর্যন্ত ৬১২ রান নিয়ে লাঞ্চ বিরতিতে যায় সফরকারীরা।
চান্দিমালের আক্ষেপঃ টেস্টে বাংলাদেশের বিপক্ষে এর আগে ৪টি শতকের মালিক ছিলেন চান্দিমাল। পঞ্চম সেঞ্চুরি হাঁকানোর আশা নিয়েই লাঞ্চ বিরতিতে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু লাঞ্চ বিরতির পর ব্যাট করতে নেমেই তাইজুল ইসলামের দুর্দান্ত ডেলিভারিতে পরাস্ত হয়ে উইকেট দিয়ে বসেন এই লঙ্কান। ৮৭ রানে সাজঘরে ফেরার পাশাপাশি বাংলাদেশের বিপক্ষে পঞ্চম সেঞ্চুরি না হাঁকাতে পারার আক্ষেপে পোড়েন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান।
তাইজুলের দ্বিতীয় আঘাতঃ এখন পর্যন্ত মোট ৬০ ওভার বোলিং করেছেন এই বাঁহাতি স্পিনার। গতকাল চা বিরতির আগে ১৯৬ রান করা কুশল মেন্ডিসকে বিদায় করেছিলেন এই স্পিনার। আজ লাঞ্চের পর পর বোলিংয়ে এসে আঘাত হানেন তিনি। দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে চান্দিমালের স্ট্যাম্প ভেঙ্গে দেন তাইজুল। ৮৭ রানে তাকে সাজঘরে ফিরিয়ে নিজের দ্বিতীয় উইকেট তুলে নেন এই স্পিনার।
ডিকওয়েলার ফিফটিঃ ২৯ রান নিয়ে লাঞ্চ বিরতিতে গিয়েছিলেন ডিকওয়েলা। লাঞ্চের পর ব্যাট করতে নেমে হাত খুলে খেলতে শুরু করেন তিনি। তুলে নেন ক্যারিয়ারের অষ্টম ফিফটি। তবে ফিফটি হাঁকিয়ে আউট হয়েছেন দ্রুত। ৬৩ রান করে মিরাজের বলে রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে উইকেট রক্ষক লিটন দাসের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন এই লঙ্কান ব্যাটসম্যান।
মিরাজের তৃতীয় শিকারঃ উইকেটে থিতু হয়ে খেলতে থাকা নিরোশান ডিকওয়েলাকে ব্যক্তিগত ৬৩ রানে উইকেট রক্ষক লিটন দাসের হাতে ক্যাচে পরিণত করে নিজের তৃতীয় উইকেট তুলে নেন এই ডানহাতি স্পিনার।
সানজামুলের অভিষেক টেস্ট উইকেটঃ ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট খেলতে নামা সানজামুল মোট ৪১ ওভার ছিলেন উইকেট শুন্য। কিন্তু নিজের ৪২ তম ওভারে এসে প্রথম উইকেট পান এই বাঁহাতি স্পিনার। দিলরুয়ান পেরেরাকে লেগ বিফরের ফাঁদে ফেলে বিদায় করেন তিনি।
শ্রীলংকার ৭০০ঃ তিন সেঞ্চুরিয়ান এবং দুই হাফ সেঞ্চুরিয়ানের অবদানে স্কোরবোর্ডে ৭০০'র উপরে রান যোগ করেছে সফরকারীরা। চতুর্থ দিন চা বিরতিতে যাওয়ার আগে লঙ্কানদের দলীয় রান ৭০৫।
চা বিরতির পর তাইজুলের জোড়া আঘাতঃ চা পান বিরতির পর ব্যাট করতে নেমেই উইকেট দিয়ে বসেন সুরাঙ্গা লাকমাল। তাইজুল ইসলামকে সামনে এগিয়ে এসে মারতে গিয়ে বোল্ড আউট হন এই লঙ্কান। খানিক পর চতুর্থ উইকেট হিসেবে তুলে নেন হেরাথকেও।
২০০ রানের লিড নিয়ে ইনিংস ঘোষণাঃ ১৯৯.৩ ওভার ব্যাট করার পর অবশেষে ইনিংস ঘোষণা করেছেন লঙ্কান দলপতি দীনেশ চান্দিমাল। রঙ্গনা হেরাথ দলীয় ৭১৩ রানে বিদায় নেয়ার পর ২০০ রানের লিড নিয়ে ইনিংস ঘোষণা করেন এই লঙ্কান।
তামিম-ইমরুলের ইতিবাচক সূচনাঃ
২০০ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমেছে টাইগাররা। দুই ওপেনার তামিম ইকবাল এবং ইমরুল কায়েস প্রতিপক্ষ বোলারদের বিপক্ষে দেশে শুনে খেলছেন। প্রতিবেদনটি লেখার আগে টাইগারদের সংগ্রহ বিনা উইকেটে ৩৫ রান।
বাংলাদেশ একাদশ-
তামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েস, লিটন কুমার দাস, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (অধিনায়ক),মমিনুল হক, মেহেদী হাসান মিরাজ, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, মুশফিকুর রহিম, মুস্তাফিজুর রহমান, তাইজুল ইসলাম, সানজামুল ইসলাম।
শ্রীলঙ্কা একাদশ-
দিমুথ করুনারত্নে, ধনঞ্জয় ডি সিলভা, কুশল মেন্ডিস, দিনেশ চান্দিমাল (অধিনায়ক), নিরোশান ডিকওয়েলা (উইকেট রক্ষক), রোশেন সিলভা, দিলরুয়ান পেরেরা, রঙ্গনা হেরাথ, সুরঙ্গা লাকমাল, লক্ষ্মণ সন্দাকান, লাহিরু কুমারা।