টেস্টেও ‘স্টপ ক্লক’, নিয়ম বদলে যাচ্ছে আরও কয়েকটি

আইসিসি
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি
ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
দুই ওভারের মাঝের সময় পর্যবেক্ষণ করে খেলার গতি ধরে রাখতে আগেই ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টিতে ‘স্টপ ক্লক’ নিয়ম চালু করেছে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। সংক্ষিপ্ত সংস্করণের পর টেস্টেও চালু হতে যাচ্ছে ‘স্টপ ক্লক’—এর নিয়ম। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চলতি চক্র থেকেই নিয়মটি কার্যকর করা হবে। ‘স্টপ ক্লক’—এর পাশাপাশি আরও বেশ কয়েকটি নিয়মে পরিবর্তন এনেছে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

কদিন আগেই আইসিসি নিশ্চিত করেছে, ওয়ানডে ক্রিকেটে ইনিংসের ৩৫তম ওভার থেকে একটি বল ব্যবহার করতে হবে। পাশাপাশি বাউন্ডারির ক্যাচ ধরার নিয়মেও পরিবর্তন এনেছে আইসিসি। সেই দুইটির সঙ্গে টেস্টে স্টপ ক্লক, বলে ইচ্ছেকৃতভাবেই লালা ব্যবহার করলে সেটি পরিবর্তনের বাধ্যবাধকতা, ডিআরএসের নিয়মে পরির্বতন, ঘরোয়া ক্রিকেটে ফুল টাইম বদলি খেলোয়াড়, নো-বলে ক্যাচের রিভিউ এবং ইচ্ছাকৃতভাবে শর্ট রানের নিয়মেই পরির্তন করা হয়েছে।

ইএসপিএন ক্রিকইনফোর প্রকাশিত নিয়মগুলোর অনুবাদ নিচে দেয়া হলো—

টেস্টে স্টপ ক্লক—

বছরখানেক আগেই ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে চালু করা হয়েছে ‘স্টপ ক্লক’ নিয়ম। মূলত খেলার গতি ধরে রাখতেই এমন নিয়ম চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল আইসিসি। ইতিবাচক সাড়া পাওয়ায় এবারও টেস্টেও দেখা যাবে ‘স্টপ ক্লক’ নিয়মের ব্যবহার। লাল বলের ক্রিকেটে লম্বা সময় ধরেই সমস্যার নাম স্লো-ওভার রেট। আইসিসির নিয়ম অনুসারে, এক ওভার শেষে অন্য একটি ওভার শুরু হতে ফিল্ডিং দল সর্বোচ্চ ৬০ সেকেন্ড সময় নিতে পারবে।

নতুন ওভার শুরু করতে ৬০ সেকেন্ডের বেশি সময় নিলে অনফিল্ড আম্পায়ার ফিল্ডিং দলকে সতর্কবার্তা দেবেন। একটি দলকে সর্বোচ্চ দুইবার সতর্ক করা হবে। তবুও যদি তৃতীয়বার এমন ঘটনা ঘটে তখন তাদেরকে ৫ রান জরিমানা করা হবে। প্রতি ৮০ ওভার শেষে ফিল্ডিং দলকে সতর্ক করবেন আম্পায়ার। দুই ওভারের মাঝের সময় পর্যবেক্ষণের জন্য জায়ান্ট স্ক্রিনে টাইমার চালু রাখবেন তৃতীয় আম্পায়ার।

ইচ্ছেকৃতভাবে লালা ব্যবহার করলে আম্পায়ার বল পরিবর্তনে বাধ্য নয়—

করোনাভাইরাসের সময়ের পর থেকেই বলে লালা ব্যবহার করতে পারছেন না বোলাররা। অনেক সময়ই ফিল্ডিং দল ইচ্ছেকৃতভাবে বলে লালা ব্যবহার করেন যাতে সেটা পরিবর্তন করে অন্য একটি বল নিতে পারেন। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, আম্পায়ার যদি বলে লালার উপস্থিতি টের পান তাহলে তিনি বল পরিবর্তনে বাধ্য থাকবেন। বলের অবস্থা যদি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি পরিবর্তন হয় তখনই কেবল পরিবর্তন করা হবে। অর্থাৎ বল যদি ভিজে যায় কিংবা বেশি উজ্জ্বল হয়। সেটাও অবশ্য আম্পায়ারের উপরই নির্ভর করবে।

ডিআরএসের নিয়মে পরির্বতন—

ধরুণ, একজন ব্যাটার উইকেটের পেছনে কট বিহাউন্ড আউট দিলেন আম্পায়ার। ব্যাটে লাগেনি এমন ভাবনা থেকে তখন রিভিউ নিলেন ব্যাটার। বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী, টিভি আম্পায়ার আলস্ট্রা এজের মাধ্যমে দেখেন বল ব্যাটে লেগেছে কিনা। যদি বল ব্যাটের পরিবর্তনে প্যাডে লাগে তখন নট আউট দেন তৃতীয় আম্পায়ার। তবে নতুন নিয়ম অনুযায়ী, ব্যাটার যদি ক্যাচ আউট না হোন তাহলে তখন তিনি লেগ বিফোর উইকেট হয়েছেন কিনা সেটা দেখবেন। সেটার ফলে ব্যাটার যদি লেগ বিফোর উইকেট হোন তাহলে আম্পায়ারের ক্যাচ আউটের সিদ্ধান্তের কারণে এখন লেগ বিফোর উইকেট হবেন।

নো-বলে ক্যাচ যাচাই—

অনেক সময় বিভিন্ন অ্যাঙ্গেলের কারণে ফিল্ডার ক্যাচ নেয়ার পরও অনফিল্ড আম্পায়াররা সেই ক্যাচ দিয়ে দ্বিধায় থাকেন। এমন অবস্থায় স্বাভাবিকভাবেই টিভি আম্পায়ারের সহায়তা নিয়ে থাকেন তারা। বর্তমান নিয়মে ওই সময় তৃতীয় আম্পায়ার যদি দেখেন ডেলিভারিটি নো-বল ছিল তখন ক্যাচ হয়েছে কিনা সেটা যাচাই করেন না। নতুন নিয়মে অবশ্য এমন কিছু থাকছে না।

আইসিসির অনুমোদন পাওয়া নতুন নিয়মে ডেলিভারিটি নো-বল হলেও টিভি আম্পায়ার ক্যাচটি যাচাই করবেন। যদি দেখা যায় ফিল্ডার ঠিকঠাক ক্যাচ নিয়েছেন তখন ব্যাটিং দলের একটি রান যোগ হবে। তবে ফিল্ডার যদি ক্যাচ নিতে না পারেন তাহলে ওই ক্যাচের সময় যদি দুই ব্যাটার দৌড়ে কোন রান নেন সেটা স্কোর বোর্ডে যোগ হবে।

ইচ্ছেকৃতভাবে শর্ট রান নেয়া—

বর্তমান নিয়মে একজন ব্যাটার যদি ইচ্ছেকৃতভাবে ক্রিজের দাগ না ছুঁয়েই দ্বিতীয় রানের জন্য দৌড়ে দেন তখন ধরা পড়লে ব্যাটিং দলকে ৫ রান জরিমানা করা হতো। তবে নতুন নিয়ম অনুযায়ী, ৫ রান জরিমানা করার পাশাপাশি ফিল্ডিং দলের কাছে জানতে চাওয়া হবে তারা কোন ব্যাটারকে স্ট্রাইক প্রান্তে চান।

ঘরোয়া ক্রিকেটে ফুল টাইম বদলি খেলোয়াড়—

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের পাশাপাশি ঘরোয়া ক্রিকেটেও কনকাশন সাব—এর নিয়ম রয়েছে। কোন ক্রিকেটার মাথায় ব্যথা পেলে তখন লাইক টু লাইক কনকাশন সাব করানো হয়। সেই নিয়মের পাশাপাশি নতুন করে যুক্ত করা হচ্ছে ঘরোয়া ক্রিকেটে ফুল টাইম বদলি খেলোয়াড়। কোন ক্রিকেটার চোট পেলে লাইক টু লাইক ক্রিকেটার দিয়ে ম্যাচের বাকি অংশে ফিল্ডিং করানো যাবে। ক্রিকেটারের চোট সম্পর্কে ম্যাচ অফিসিয়ালসের অবগত থাকতে হবে। হ্যামস্ট্রিং কিংবা মাংসপেশির টানের মতো চোটের ক্ষেত্রে এই নিয়ম কার্যকর হবে না।