ড্রয়ে শ্রীলঙ্কা সফর শুরু বাংলাদেশের

ছবি: ক্রিকফ্রেঞ্জি

এমন অবস্থায় সকালের শুরুতে সফরকারীরা কেমন অ্যাপ্রোচে ব্যাটিং করে সেটাই ছিল সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। আগের দিনের বিকেলের মতো নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুশফিকুর রহিম মিলে দেখেশুনেই ব্যাটিং করছিলেন। মাঝে বৃষ্টি হানা দিয়ে ম্যাচের ফল ড্রয়ের দিকেই ঠেলে দিয়েছে। বৃষ্টি শেষে শান্ত সেঞ্চুরি করে ৬ উইকেটে ২৮৫ রান নিয়ে ইনিংস ঘোষণা করেন। জিততে হলে দিনের বাকি ৩৭ ওভারে ২৯৬ রান করতে হতো শ্রীলঙ্কাকে। অর্থাৎ ওভারপ্রতি ৮ রান করতে হতো স্বাগতিকদের। বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ১০ উইকেট।
গলের আত্মবিশ্বাস কলম্বোতে নিতে চান শান্ত, মিরাজকে নিয়ে দিলেন সুখবর
১৬ মিনিট আগে
টেস্ট এবং পঞ্চম দিনের উইকেটের বিবেচনায় সমীকরণটা শ্রীলঙ্কার জন্য কঠিনই। তবুও দুই ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা ও লাহিরু উদারা মিলে ইতিবাচক শুরুই করেছিলেন। তবে চা-বিরতিতে যাওয়ার আগে তাদের দুজনকে ফিরিয়েছেন তাইজুল ইসলাম ও নাঈম। চা-বিরতিতে শেষে ফিরে অনেকটা ড্রয়ের জন্যই ব্যাটিং করছিলেন দীনেশ চান্দিমাল ও অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। তাদের দুজনের ব্যাটিং দেখে সেটারই ইঙ্গিত মিলেছে। শেষ পর্যন্ত তারা দুজনও আউট হয়ে গেছেন। একটু পর দুই দলের অধিনায়ক শান্ত ও ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ড্র মেনে নিলে কয়েক ওভার থাকতেই খেলা শেষ হয়।
গলে জয়ের জন্য ২৯৬ রান তাড়ায় নিশাঙ্কা ও উদারার ব্যাটে ভালো শুরু পায় শ্রীলঙ্কা। প্রায় প্রতি ওভারে বাউন্ডারি বের করার চেষ্টায় দ্রুত রানও তুলছিলেন তারা দুজন। তবে উদারা ও নিশাঙ্কার জুটি দীর্ঘ হতে দেননি তাইজুল ইসলাম। বাঁহাতি স্পিনারের বলে ডাউন দ্য উইকেটে এসে খেলতে চেয়েছিলেন উদারা। অনেকটা এগিয়ে এসেও ব্যাটে-বলে করতে না পারায় স্টাম্পিং হয়ে ফিরতে হয় ডানহাতি ওপেনারকে। পরের ওভারে আউট হয়েছেন নিশাঙ্কাও। প্রথম ইনিংসে ক্যারিয়ারসেরা ১৮৭ রানের ইনিংস খেলা নিশাঙ্কা এবার আউট হয়েছেন দ্রুতই।
নাঈমের বলে লেগ সাইডে খেলার চেষ্টায় শর্ট মিড উইকেটে শান্তর হাতে ক্যাচ দিয়েছেন নিশাঙ্কা। শ্রীলঙ্কান ওপেনার ফিরেছেন ২৪ রানে। চা-বিরতি শেষে ব্যাটিংয়ে নেমে দেখেশুনে খেলতে থাকেন চান্দিমাল ও ম্যাথিউস। অনেকটা ড্রয়ের আশা নিয়ে খেলতে থাকলেও তাদের দুজনের কেউই বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। তাইজুলের বলে ডিফেন্স করতে গিয়ে এজ হয়ে সিলি শর্ট মিড অনে মুমিনুল হককে ক্যাচ দিয়েছেন ম্যাথিউস। বাংলাদেশের বিপক্ষে গলেই ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট খেলেছেন তিনি।
ম্যাথিউস আউট হওয়ার পর বাংলাদেশের সব ক্রিকেটাররা তাঁর সঙ্গে হাত মিলিয়ে অভিবাদন জানিয়েছেন। অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার আউট হয়েছেন ৮ রানে। একটু পর ফিরেছেন চান্দিমালও। তাইজুলের দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড হয়েছেন তিনি। পঞ্চাশের আগেই ৪ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে লঙ্কানরা। শেষ বিকেলে অবশ্য আর উইকেট হারাতে দেননি কামিন্দু ও ধনঞ্জয়া। দুই দলের অধিনায়ক মেনে নেয়ায় কয়েক ওভার বাকি থাকতেই ড্রয়ে শেষ হয় গল টেস্ট।

শান্তদের জয়ের পরিকল্পনা ভেস্তে দিয়েছে বৃষ্টি
১ ঘন্টা আগে
আগের দিনের ৩ উইকেটে ১৭৭ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে নেমে দেখেশুনেই খেলতে থাকেন শান্ত ও মুশফিক। দুজনের কারও মধ্যেই দ্রুত রান তোলার তাড়না ছিল না। প্রথম সেশন এক ঘণ্টা পেরিয়ে যাওয়ার পরই হানা দেয় বৃষ্টি। তবে গলে বেরসিক বৃষ্টি আসার আগেই সাজঘরে ফিরে যান মুশফিক। মিড অনে ঠেলে দিয়েই এক রান নিতে চেয়েছিলেন তিনি। তবে থারিন্দু রত্নায়েকের সরাসরি থ্রোতে রান আউট হয়ে ফিরেছেন ডানহাতি এই ব্যাটার। প্রথম ইনিংসে ১৬৩ রানের ইনিংস খেলা মুশফিক এবার ফিরেছেন ৪৯ রানে।
লম্বা সময়ের বৃষ্টি শেষে আবার যখন খেলা শুরু হয় তখন ভালো করতে পারেননি বাংলাদেশ। ব্যাটিংয়ে নেমেই বোল্ড হয়েছেন লিটন দাস। থারিন্দুর লেগ স্টাম্পের বাইরের পড়ে দারুণ এক টার্নে ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিতে পুরোপুরি পরাস্ত হয়েছেন তিনি। প্রথম ইনিংসে ৯০ রান করা ডানহাতি উইকেটকিপার ব্যাটার ফিরেছেন ৩ রানে। দ্রুত আউট হয়েছেন জাকের আলী অনিকও। একটু পর সেঞ্চুরি তুলে নেন শান্ত। থারিন্দুর বলে রিভার্স সুইপ করে ক্যারিয়ারের সপ্তম সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি। বাংলাদেশের প্রথম অধিনায়ক হিসেবে এক টেস্টের দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরি করেছেন শান্ত।
বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটার হিসেবে দুবার একই ম্যাচের দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি করলেন বাঁহাতি ব্যাটার। এর আগে ২০২৩ সালে মিরপুরে আফগানিস্তানের বিপক্ষেও একই টেস্টের দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি। শান্ত ছাড়া একই টেস্টের দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরির কীর্তি আছে মুমিনুলের। ২০১৮ সালে চট্টগ্রামে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৭৬ ও ১০৫ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। সেঞ্চুরি পেয়েই আক্রমণাত্বক ব্যাটিংয়ে ছক্কা মারতে থাকেন শান্ত। শেষ পর্যন্ত ৬ উইকেটে ২৮৫ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ। শান্ত অপরাজিত ছিলেন ১২৫ রানে। লঙ্কানদের লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৯৬ রান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর—
বাংলাদেশ (প্রথম ইনিংস)— ৪৯৫/১০ (১৫৩.৪ ওভার) (শান্ত ১৪৮, মুশফিক ১৬৩, লিটন ৯০; আসিথা ৪/৮৬, মিলান ৩/৩৯)
শ্রীলঙ্কা (প্রথম ইনিংস)— ৪৮৫/১০ (১৩১.২ ওভার) (নিশাঙ্কা ১৮৭, উদারা ২৯, চান্দিমাল ৫৪, ম্যাথিউস ৩৯, ধনঞ্জয়া ১৯, কামিন্দু ৮৭, মিলান ৩৯; নাঈম ১২১/৫)
বাংলাদেশ (দ্বিতীয় ইনিংস)— ২৮৫/৬ (৮৭ ওভার) (ইনিংস ঘোষণা) (বিজয় ৪, সাদমান ৭৬, শান্ত ১২৫*, মুমিনুল ১৪, মুশফিক ৪৯, লিটন ৩, জাকের ২, নাঈম ৭*)
শ্রীলঙ্কা (দ্বিতীয় ইনিংস)— ৭২/৪ (৩২ ওভার) (নিশাঙ্কা ২৪, কামিন্দু ১২*, ধনঞ্জয়া ১২*; তাইজুল ৩/২৩)