বাংলাদেশের বিপক্ষে শেষ ম্যাচ খেলা গাপটিলের অবসর
ছবি: প্রায় আড়াই বছর ধরে নিউজিল্যান্ড জাতীয় দলে নেই মার্টিন গাপটিল
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিদায় না নিলেও গাপটিলকে সম্মান জানাতে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ‘থ্যাংক ইউ, গাপ’ নামের এক বিশেষ আয়োজন করেছিল অকল্যান্ড ক্রিকেট। সেই আয়োজনের বছরখানেক পর অবসরের সিদ্ধান্ত নিলেন ডানহাতি এই ব্যাটার। এক বিবৃতিতে দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন গাপটিল। নিউজিল্যান্ডের হয়ে ৩৬৭ ম্যাচ খেলতে পারায় নিজেকে গর্বিত মনে করছেন তিনি।
নিজের বিদায়ী বার্তায় গাপটিল বলেন, ‘ছোট বয়সেই আমি সবসময় নিউজিল্যান্ডের হয়ে খেলার স্বপ্ন দেখতাম। আমার দেশের জন্য ৩৬৭ ম্যাচ খেলতে পারায় আমি নিজেকে সৌভাগ্যবান ও গর্বিত মনে করি। রুপালি ফার্নের জার্সিতে দারুণ একঝাঁক খেলোয়াড়দের পাশে থাকার স্মৃতি আজীবন হৃদয়ে থাকবে।’
অকল্যান্ডে বয়সভিত্তিক ক্রিকেটের নানা ধাপ পেরিয়ে নিউজিল্যান্ডের জার্সি গায়ে জড়িয়েছিলেন গাপটিল। এত বছরের ক্যারিয়ারে তাঁর সঙ্গে কাজ করা কোচিং স্টাফ ও একই সঙ্গে খেলা সতীর্থদের ধন্যবাদ জানাতে ভুল করেননি তিনি। তবে ৩৮ বছর বয়সী ব্যাটার বিশেষ করে ধন্যবাদ দিয়েছেন তৎকালীন অনূর্ধ্ব-১৯ দলের কোচ মার্ক ও’ডোনেলকে। এ ছাড়া ম্যানেজার লিন ম্যাকগোল্ডরিকের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন গাপটিল।
তিনি বলেন, ‘আমি আমার সতীর্থ, কোচিং স্টাফদের ধন্যবাদ জানাতে চাই। বিশেষ করে মার্ক ও’ডোনেলকে, যিনি অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যায়ে আমাকে কোচিং করিয়েছেন এবং সমর্থন জুগিয়েছেন পরবর্তী ক্যারিয়ারেও। আমার ম্যানেজার লিন ম্যাকগোল্ডরিকের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা। তার কাজ সবসময়ই ছিল পর্দার অন্তরালে।’
২০১৪ সালে উপস্থাপিকা ও স্পোর্টস রিপোর্টার লরা ম্যাকগোল্ডরিককে বিয়ে করেন গাপটিল। তাদের দুই সন্তান লরা হার্লি লুইস গাপটিল ২০১৭ সালে এবং টেডোর জেমস গাপটিল ২০২১ সালে জন্মগ্রহণ করেন। পরিবারের তিন সদস্যের পাশাপাশি পুরো বিশ্ব জুড়ে থাকা তাঁর সমর্থকদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন ৩৮ বছর বয়সী গাপটিল।
এ প্রসঙ্গে নিউজিল্যান্ডের এই ব্যাটার বলেন, ‘আমার স্ত্রী লরা এবং আমাদের সন্তান হার্লি এবং টেডি- তোমাদের ধন্যবাদ। আমাদের পরিবার ও আমার জন্য নিজের সবটা বিলিয়ে দেয়া ত্যাগের জন্য তোমাকে ধন্যবাদ লরা। প্রতিটি উত্থান-পতনে তুমি আমার সবচেয়ে বড় সমর্থক, মূল্যবান রত্ন ও পরামর্শক হয়ে ছিলে। আমি চিরকৃতজ্ঞ। সবশেষে নিউজিল্যান্ডের এবং পুরো বিশ্ব জুড়ে থাকা ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা আমার সমর্থককে ধন্যবাদ দিতে চাই, যারা পুরো ক্যারিয়ারে আমাকে সমর্থন দিয়ে গেছে।’
২০০৯ সালের জানুয়ারিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যাত্রা শুরু করেন গাপটিল। কয়েক মাসের ব্যবধানে ওয়ানডের পাশাপাশি টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টিতেও কিউইদের হয়ে খেলেছেন। ১৫ বছরের ক্যারিয়ারে নিউজিল্যান্ডের হয়ে ৪৭ টেস্ট, ১৯৮ ওয়ানডে ও ১২২ টি-টোয়েন্টি খেলেছেন গাপটিল। তিন সংস্কর মিলে নিউজিল্যান্ডের পঞ্চম সর্বোচ্চ ১৩ হাজার ৩৬৩ রান করেছেন তিনি।
যেখানে ৪৭ টেস্টে ৩ সেঞ্চুরি, ১৭ হাফ সেঞ্চুরিতে ২ হাজার ৫৮৬ রান করেছেন গাপটিল। ১৯৮ ওয়ানডেতে ৪১.৭৩ গড়ে ডানহাতি ব্যাটারের রান ৭ হাজার ৩৪৬। কিউইদের হয়ে ৫০ ওভারের ক্রিকেটে ১৮ সেঞ্চুরি ও ৩৯ হাফ সেঞ্চুরি করেছেন। ২ সেঞ্চুরিতে টি-টোয়েন্টিতে ১২২ ম্যাচে গাপটিল করেছেন ৩ হাজার ৫৩১ রান। টি-টোয়েন্টিতে গাপটিলের চেয়ে বেশি রান আছে কেবল রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি, বাবর আজম এবং পল স্টার্লিংয়ের।