আইপিএলের সাজানো ফরম্যাটে ২০১২ সালে বিপিএল চালু করে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। টুর্নামেন্টের প্রথম আসরে অংশ নিয়েছিল ছয়টি দল। সেবার দুরন্ত রাজশাহী, খুলনা রয়্যাল বেঙ্গলস, ঢাকা গ্লাডিয়েটর্স, বরিশাল বার্নাস, চিটাগং কিংসের সঙ্গে ছিল সিলেট রয়্যালস। পরের বছর নতুন করে যুক্ত হয় রংপুর রাইডার্স। তখন দলের সংখ্যা ছয় থেকে বেড়ে দাঁড়ায় সাতে। তবে মোহাম্মদ আশরাফুল ও গ্লাডিয়েটর্সের ফিক্সিং কাণ্ডে ২০১৪ সালে হয়নি বিপিএল।
এক বছর বিরতি দিয়ে ২০১৫ সালে আবারও মাঠে গড়ায় ২০ ওভারের ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টটি। চিটাগং কিংস সরে যাওয়ায় চিটাগং ভাইকিংস নামে বিপিএলে অংশ নেয় বন্দর নগরী। সেই আসরে খুলনা অংশগ্রহণ না করলেও সেবার নতুন করে যুক্ত হয় নাফিসা কামালের কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। ঢাকা গ্লাডিয়েটর্স নিষিদ্ধ হওয়ায় ‘জিতবে ঢাকা দেখবে দেশ’ এমন স্লোগান নিয়ে নতুন মালিকানায় দেশের টুর্নামেন্টে যুক্ত হয় ঢাকা ডায়নামাইটস।
২০১৬ সালে চতুর্থ আসরে খুলনা বিভাগ বিপিএলে ফেরে জেমকন গ্রুপের অধীনে খুলনা টাইটান্স নামে। সেই আসরে অবশ্য অংশগ্রহণ করেনি সিলেটের কোনো দল। ২০১৭ সালে সিলেট সিক্সার্স ফিরলেও বাদ যায় বরিশালের ফ্র্যাঞ্চাইজি। ২০১৮-১৯ মৌসুমে সাতটি, ২০১৯-২০ বঙ্গবন্ধু বিপিএলে সাতটি, ২০২১-২২ মৌসুমে ছয়টি ফ্র্যাঞ্চাইজি অংশ নেয়। বিরতি দিয়ে ২০২৩ সালে বিপিএলে ফেরে বসুন্ধরা গ্রুপের রংপুর রাইডার্স।
সবশেষ তিনটি মৌসুম হয়েছে সাতটি দল নিয়ে। তবে প্রতি বছরই একটি কিংবা দুটি ফ্র্যাঞ্চাইজি পরিবর্তন হতে দেখা যায়। ঢাকা ডায়নামাইটস সরে যাওয়ার পর খেলতে দেখা গেছে ঢাকা প্লাটুন, ঢাকা ডমিনেটর্স, দুর্দান্ত ঢাকা এবং ঢাকা ক্যাপিটালসের মতো ফ্র্যাঞ্চাইজিদের। যাদের বেশিরভাগই টুর্নামেন্টের মান বাড়ানোর চেয়ে কমিয়ে গেছেন। গত বিপিএলে দুর্বার রাজশাহীও একই কাজ করেছে। যে কারণ ফ্র্যাঞ্চাইজি কমানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন তামিম ইকবাল।
ডিসেম্বর-জানুয়ারি উইন্ডোতে খুব বেশি সময় না পাওয়ায় ৫ দলের বিপিএল আয়োজনে আগ্রহী হয়েছে বিসিবি। ২০২৬ বিপিএলের জন্য ফ্র্যাঞ্চাইজি চেয়ে ১২ অক্টোবর ইওআই দেবে। যেখানে ১০টি অঞ্চলের নাম উল্লেখ করা হবে। যদিও মাত্র পাঁচটি অঞ্চলকে বেছে নিয়ে ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিকানা নিতে হবে।
বিপিএলের দল নিয়ে ইফতেখার রহমান মিঠু বলেন, ‘আপনারা জানেন এটা নতুনভাবে শুরু হচ্ছে কারণ আগে যত দলের সাথে চুক্তি ছিল এসব শেষ হয়েছে। কালকেই আমাদের ইওআই কাগজটা আসবে। ইওআইতে আমরা ১০ অঞ্চলের নাম বলেছি। এখান থেকে আমাদের যে উইন্ডোটা আছে...এবছর যেহেতু অল্প সময় এজন্য আমরা ৫ দলের বিপিএল করতে চাই। তাই বলে ৬-৭টা হবে না সেটা বলছি না। কিন্তু এক মাসের উইন্ডোতে ৫ দল নিয়ে করতে আগ্রহী। আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার হচ্ছে ৫টা দল।’
বিপিএলের সদস্য সচিব নিশ্চিত করেছেন পাঁচ বছরের জন্য ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিকানা দেয়া হবে। এ প্রসঙ্গে ইফতেখার মিঠু বলেন, ‘পাঁচ বছরের জন্য ফ্র্যাঞ্চাইজি দেয়া হচ্ছে। ক্রাইটেরিয়া হচ্ছে..দেখুন ৬, ৭ কিংবা ৮ দলে তো কোনো বাঁধা নেই। কিন্তু আমাদের একটাই বাঁধা উইন্ডো। এক হচ্ছে বিশ্বকাপ, দ্বিতীয় নির্বাচন।’
সবশেষ কয়েক বিপিএলে তারকাবহুল দল সাজিয়ে আলোচনায় এসেছে ফরচুন বরিশাল। বিদেশি তারকা ক্রিকেটারের পাশাপাশি বাংলাদেশের সাকিব আল হাসান, তামিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মুশফিকুর রহমান, নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহীদ হৃদয় ও রিশাদ হোসেনের মতো ক্রিকেটাররা তাদের হয়ে খেলেছেন। এখন পর্যন্ত দুইবার চ্যাম্পিয়ন শিরোপাও ঘরে তুলেছে তারা। তবে গুঞ্জন আছে আগামী বিপিএলে দল নিতে আগ্রহী নয় বরিশাল।
এ প্রসঙ্গে ইফতেখার মিঠু বলেন, ‘দেখুন, এখানে তো আপনি কাউকে জোর করে আনতে পারবেন না। আমরা সবাইকে স্বাগত জানাই। উনারা (ফরচুন বরিশাল) খুব ভালোভাবে দল চালিয়েছে। আমরা কোনোদিন অভিযোগ পাইনি। আমরা সবসময় চাই এরকম ভালো ম্যানেজমেন্টের দল আসুক। উনি (মিজানুর রহমান) যে কষ্টটা করেছে, বরিশালের ফলোয়ার তৈরিতে। আমার অনুরোধ উনি আসলে ভালো হয়।’
ভেন্যু বাড়ানো নিয়ে তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমরা একটা ভেন্যু বাড়ানোর চিন্তা করেছি। এমনকি মিডিয়া, লজিস্টিক, মার্কেটিং আমাদের গভর্নিং কাউন্সিল ওইখান পরিচালক কালকে আমরা সবাই রাজশাহী ভেন্যু পরিদর্শনে যাচ্ছি। এত অল্প সময়ে আমরা একটা ভেন্যু বাড়াতে পারব। এটার পর বরিশাল পরিদর্শনে যাব। তখন ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটের সাথে যেকোনো একটা ভেন্যু যোগ হবে।’