মাহমুদউল্লাহ-ফাহিমের ব্যাটে ১৯৮ তাড়া করে জিতল বরিশাল
ছবি: ফরচুন বরিশালের জয়ের নায়ক ফাহিম আশরাফ (বামে) ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (ডানে), ক্রিকফ্রেঞ্জি
শাহীন আফ্রিদি ফেরার পর রানের গতি কমে তাদের। ফাহিম আশরাফ ব্যাটিংয়ে এসে যেন খাপ খাইয়ে নিতে পারছিলেন না। তবে কয়েকটা ডেলিভারি খেলার পরই যেন জড়তা কাটিয়ে উঠলেন পাকিস্তানের এই অলরাউন্ডার। ৭ ছক্কায় ২১ বলে খেললেন অপরাজিত ৫৪ রানের ইনিংস। আরেক ব্যাটার মাহমুদউল্লাহ ৪ ছক্কা ও ৫ চারে ২৬ বলে করেছেন ৫৬ রান। দুর্বার রাজশাহীকে ৪ উইকেটে হারিয়ে বিপিএলের একাদশ আসর শুরু করল বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বরিশাল।
বড় লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুতেই বিপর্যয়ে পড়ে বরিশাল। ১২ রানেই তারা হারিয়ে ফেলে দুই ওপেনার শান্ত ও তামিমের উইকেট। শান্তকে রানের খাতা খোলার আগেই ফিরিয়েছেন জিসান আলম। ইনিংসের প্রথম বলে টসড আপ ডেলিভারিতে পা বাড়িয়ে খেলতে গিয়ে এলবিডব্লিউ হন শান্ত। আর তামিম শিকার হয়েছেন তাসকিন আহমেদের। এই পেসারকে ফ্লিক করতে গিয়ে বলের লাইন মিস করে এলবিডব্লিউ হন তিনি। ফিরতি ওভারে তাসকিন ফিরিয়েছেন ৬ রান করা মেয়ার্সকেও। তিনি পুল করতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ দেন রায়ান বার্লের হাতে।
ব্যাট হাতে ব্যর্থ হয়েছেন অভিজ্ঞ মুশফিকুরও। তিনি মুরাদের বলে সুইপ করতে গিয়ে এজ হয়ে ক্যাচ দেন ডিপ ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে লাহিরু সামারাকুনের হাতে। ভালো শুরু পেলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি আরেক ব্যাটার হৃদয়। তিনিও শিকার হন মুরাদের। লেংথ বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে শর্ট থার্ড ম্যানে সেই সামারাকুনের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন তিনি। আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করছিলেন শাহীন আফ্রিদি। তবে তাকে ইনিংস বড় করতে দেননি তাসকিন।
ডিপ ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগ দিয়ে উড়িয়ে মেরেছিলেন শাহীন। সীমানায় তার ক্যাচ নিয়েছেন তানভির ইসলাম। ফলে ১৭ বলে ২৭ রানে শেষ হয়েছে আফ্রিদির ইনিংসে। তার ইনিংস জুড়ে ছিল ৩টি ছক্কা ও একটি চারের মার। একপ্রান্ত আগলে রেখে খেলতে থাকা মাহমুদউল্লাহ ২৩ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন। তিনি অপরাজিত থাকেন ৫৬ রানে। তার ইনিংস জুড়ে ৪টি ছক্কার সঙ্গে ছিল ৫টি চারও। ঝড়ো ব্যাটিং করেছেন ফাহিমও তিনি অপরাজিত ছিলেন ৫৪ রান নিয়ে। ৭টি ছক্কায় ও একটি চারে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন তিনি। এই দুজনের ব্যাটে ১১ বল হাতে রেখে জয় তুলে নেয় বরিশাল।
এর আগে এই ম্যাচে টসে জিতে আগে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বরিশাল অধিনায়ক তামিম ইকবাল। টসে হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা একেবারেই ভালো হয়নি দুর্বার রাজশাহীর। দ্বিতীয় ওভারেই আউট হয়েছেন দলটির ওপেনার জিসান আলম। তিনি কাইল মেয়ার্সের বলে বোল্ড হয়ে ফিরেছেন শূন্য রানে। এরপর ১৩ রান করা মোহাম্মদ হারিস আউট হয়েছেন মেয়ার্সের বলেই তাকে ক্যাচ দিয়ে। মেয়ার্স করেছিলেন স্লোয়ার বল সেই বল সোজা ব্যাটে খেলতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দিয়েছেন তিনি বোলারের। এরপর দলটির হাল ধরেন অধিনায়ক এনামুল হক বিজয় ও ইয়াসির আলী।
এই দুজনের জুটি ছাড়িয়ে যায় পঞ্চাশ। ফাহিমকে মিড অফ দিয়ে চার মেরে ৪২ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন বিজয়। খানিক বাদে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন ইয়াসিরও। অবশ্য বেশিদূর এগোতে পারেননি বিজয়। তিনি ফাহিমের লাফিয়ে ওঠা বলে উইকেটের পেছনে মুশফিককে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন তিনি ব্যক্তিগত ৬৫ রানে। এর ফলে ইয়াসিরের সঙ্গে তার জুটি ভেঙেছে ১৪০ রানে। এরপর রায়ান বার্লকে নিয়ে রাজশাহীর রান বাড়াতে থাকেন ইয়াসির। অল্পের জন্য সেঞ্চুরির দেখা পাননি তিনি। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ৯৪ রানে। শেষ পর্যন্ত বার্ল অপরাজিত থাকেন ৮ রানে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
দুর্বার রাজশাহী- ১৯৭/৩ (২০ ওভার) (হারিস ১৩, বিজয় ৬৫, ইয়াসির ৯৪*; মেয়ার্স ২/১৩, ফাহিম ১/৪২)
ফরচুন বরিশাল- ২০০/৬ (১৮.১ ওভার) (শান্ত ০, তামিম ৭, হৃদয় ৩২, মেয়ার্স ৬, মুশফিক ৬, আফ্রিদি ২৭, মাহমুদউল্লাহ ৫৬*, ফাহিম ৫৪*) (মুরাদ ২/৪২, তাসকিন ৩/২১)