‘জাতীয় দলে খেলা সবারই স্বপ্ন, আমারও আছে’

ঘরোয়া
‘জাতীয় দলে খেলা সবারই স্বপ্ন, আমারও আছে’
এনসিএল টি-টোয়েন্টির সেরা ক্রিকেটারের পুরস্কার হাতে আকবর আলী, ক্রিকফ্রেঞ্জি
Author photo
ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
· ১ মিনিট পড়া
সাউথ আফ্রিকার পচেফস্ট্রুমে ভারতের বিপক্ষে ফাইনালে সেদিন নার্ভ ধরে রেখে ধীরস্থির ও চৌকস ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশকে প্রথম বৈশ্বিক শিরোপা এনে দিয়েছিলেন আকবর আলী। অধিনায়কত্বের সঙ্গে ঠাণ্ডা মাথার ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশকে জেতানোয় সবার কাছে পরিচিত হয়ে উঠেছিলেন ‘আকবর দ্য গ্রেট’ নামে। আকবরের সঙ্গে যুব বিশ্বকাপ জেতা অনেকে বাংলাদেশ জাতীয় দলের জার্সি গায়ে চাপিয়েছেন। তবে ডানহাতি ব্যাটার এখনো সেই ঘরোয়া ক্রিকেটেই পড়ে আছেন। যুব বিশ্বকাপজয়ী সতীর্থদের চেয়ে খানিকটা পিছিয়ে পড়লেও খুব বেশি আক্ষেপ নেই আকবরের। তবে রংপুরকে আরেকটি শিরোপা জেতানো অধিনায়ক আকবর জানালেন, অন্যদের মতো তিনিও স্বপ্ন দেখেন জাতীয় দলের হয়ে খেলার।

২০২০ সালে যুব বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটারদের নিয়ে দেশের মানুষের স্বপ্নটা ছিল অনেক। সেটা ক্রমশই একটু একটু ছুঁতে শুরু করেছে। এখনো কেউই সেভাবে বড় তারকা হয়ে উঠতে না পারলেও সিনিয়রদের বিদায়ের পর দেশের ক্রিকেটের হাল ধরেছেন। সেই বিশ্বকাপ দল থেকে সবার আগে জাতীয় দলে জায়গা হয় শরিফুল ইসলামের। ২০২১ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অভিষেক হওয়া বাঁহাতি পেসার তিন সংস্করণেই বাংলাদেশের হয়ে খেলেছেন, খেলছেন।

পরবর্তী সময়ে পারভেজ হোসেন ইমন, তানজিদ হাসান তামিম, তাওহীদ হৃদয়, শামীম পাটোয়ারি, মাহমুদুল হাসান জয়, তানজিম হাসান সাকিবরাও জাতীয় দলের জার্সি গায়ে জড়িয়েছেন। ফরম্যাট ভেদে সবাই দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। তাদের অধিনায়ক হয়েও এখনো জাতীয় দলের হয়ে খেলা হয়নি আকবরের। ২০২১ পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে ডাক পেয়েছিলেন। তবে অভিষেক হয়নি ডানহাতি উইকেটকিপার ব্যাটারের।

একসময়ের সতীর্থরা জাতীয় দলে খেলছে কিন্তু নিজে খেলতে পারছেন না এমনটা ভেবে খারাপ লাগে কিনা এমনটা জানতে হয় আকবরের কাছে। এমন প্রশ্নের জবাবে রংপুরের অধিনায়ক বলেন, ‘একজন পেশাদার খেলোয়াড় হিসেবে এটা কখনো কাজ করে না। হ্যাঁ, ভালো লাগা বা খারাপ লাগাটা কাজ কীভাবে কাজ করে আমি ভালো খেলছি, ভালো অনুভূতি হচ্ছে। আবার যখন খারাপ করি তখন খারাপ অনুভূতি হয়। কিন্তু এরকম না ওরা খেলতেছে আমি নাই। এই জিনিসটা খারাপ লাগে না।

‘খারাপ লাগে যখন নিজে খারাপ করি। তখন আসলে বেশি খারাপ লাগে। আমি আসলে এগুলো নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করি না। যেখানে সুযোগ থাকে, যেখানে ম্যাচ খেলার সুযোগ পাই ওইখানে ভালো করার চেষ্টা করি।’ ক্রিকফ্রেঞ্জির সঙ্গে আলাপকালে নাইম ইসলাম জানান, আকবরকে জাতীয় দলের হয়েও শিরোপা জিততে দেখতে চান। আকবর জানান, অন্যদের মতো তিনিও জাতীয় দলে খেলার স্বপ্ন দেখেন। তিনি বলেন, ‘ অবশ্যই, সবারই একটা স্বপ্ন (জাতীয় দলে খেলা) আছে—আমারও স্বপ্ন আছে।’

জাতীয় দলে সুযোগ না এলেও ঘরোয়া ক্রিকেটে অধিনায়ক হিসেবে বাজিমাত করেছেন আকবর। চারদিনের এনসিএলে রংপুরকে শিরোপা জিতিয়েছেন, ওয়ানডে বিসিএলে উত্তরাঞ্চল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে তাঁর নেতৃত্ব। সবশেষ এনসিএল টি-টোয়েন্টির দুই আসরেই অধিনায়ক হিসেবে রংপুরকে শিরোপা এনে দিয়েছেন তিনি। সদ্য সমাপ্ত টুর্নামেন্টে নেতৃত্ব দেয়ার পাশাপাশি ব্যাট হাতেও সফল হয়েছেন ডানহাতি এই ব্যাটার।

রংপুরের হয়ে ৯ ইনিংসে ৩১.৭১ গড় ও ১৪৭.০২ স্ট্রাইক রেটে ২২২ রান করেছেন। আকবরের চেয়ে বেশি রান করেছেন কেবল চট্টগ্রামের মাহমুদুল জয়। এনসিএল টি-টোয়েন্টির শেষের দিকে এসে বেশ কয়েকটি ঝড়ো ইনিংসে দলের জয়ে বড় অবদান রেখে জিতেছেন টুর্নামেন্টের সেরা ক্রিকেটারের পুরস্কার। বেশিরভাগ সময়ই আকবরের উইকেটকিপার ব্যাটার পরিচয় আড়াল হয়ে যায় দুর্দান্ত নেতৃত্বগুণের জন্য। তিনিও কী ক্যাপ্টেন কুল হিসেবেই পরিচিত হতে চান? যদিও আকবর জানান, তাঁর কাছে খেলোয়াড় পরিচয়ই আগে।

এ প্রসঙ্গে আকবর বলেন, ‘আমার মনে হয় এরকম (অধিনায়ক হিসেবে পরিচিত হতে চান) না ব্যাপারটা। প্রত্যেকটা খেলোয়াড় আগে ব্যাটার, বোলার, ফিল্ডার তারপর আসলে অধিনায়কত্ব। এটা আসলে বাড়তি একটা দায়িত্ব। এটা এমন কোনো গ্রান্টেড জিনিস না। কিন্তু আমি ব্যাটার, কিপার এটা আমার গ্রান্টেড। আমার সাথে সবসময় থাকবে। কিন্তু আমি সব জায়গায় অধিনায়ক থাকব না। আমি বলব খেলোয়াড়ই আগে।’

আরো পড়ুন: আকবর আলী