ইনিংস ব্যবধানে জয়ের সুবাস পাচ্ছে বাংলাদেশ, দরকার ৫ উইকেট

বাংলাদেশ
ইনিংস ব্যবধানে জয়ের সুবাস পাচ্ছে বাংলাদেশ, দরকার ৫ উইকেট
বাংলাদেশ দল, ক্রিকফ্রেঞ্জি
Author photo
ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
· ১ মিনিট পড়া
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ইনিংস ব্যবধানে জেতার অপেক্ষায় বাংলাদেশ দল। ম্যাচ জিততে শেষ দুই দিনে টাইগারদের দরকার ছয় উইকেট। মাহমুদুল হাসান জয় এবং মুমিনুল হকরা ডাবল সেঞ্চুরি এবং সেঞ্চুরি মিস করলেও ম্যাজিকাল ফিগারটি ঠিকই স্পর্শ করেন নাজমুল হোসেন শান্ত। সঙ্গে লিটন দাসের ওয়ানডে মেজাজে খেলা হাফ সেঞ্চুরিতে আট উইকেটে ৫৮৭ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে পাঁচ উইকেটে ৮৬ রান করেছে আয়ারল্যান্ড। ইনিংস পরাজয় এড়াতে এখনো ২১৫ রান দরকার তাদের।

তৃতীয় দিনের সকালটা অসাধারণভাবে শুরু করেছে আয়ারল্যান্ড। দ্বিতীয় ওভারেই জয়কে সাজঘরে ফেরায় তারা। অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইনের করা ওভারের তৃতীয় বলে উইকেটরক্ষক লরকান টাকারকে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন জয়। তার অফ স্টাম্পের বাইরে তাক করা শর্ট লেংথের লাফিয়ে ওঠা ডেলিভারিটি ব্যাটের কানায় লাগে জয়ের। ফেরার আগে ২৮৬ বলে ১৭১ রানের ইনিংস খেলেন জয়। ইনিংসটি ১৪টি চার ও চারটি ছক্কায় সাজানো ছিল। তার বিদায়ে ২৭২ বলে করা ১৭৩ রানের জুটিটি ভাঙে।

জয়ের পেছন পেছন সাজঘরে ফিরে যান মুমিনুল হকও। ম্যাকব্রাইনের পরের ওভারের প্রথম বলে স্লিপে অ্যান্ডি বালবির্নিকে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান মুমিনুল। মুমিনুলের ইনিংসটি সাজানো ছিল পাঁচটি চার আর দুটি ছক্কায়। ১৩২ বলে ৮২ রান করেন তিনি। ৩৪৬ রানের মধ্যে তিন উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ৮৯.৪ ওভারে সাড়ে তিনশর গণ্ডি পার করে দলটি।

জয়-মুমিনুলের বিদায়ের পর বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের হাল ধরেন শান্ত এবং মুশফিকুর রহিম। দুজনেই দেখেশুনে খেলে দলের রান বাড়াতে থাকেন। শান্ত কিছুটা ওয়ানডে মেজাজে ব্যাট চালালেও বরাবরের মতই টেস্ট মেজাজে ব্যাটিং করে গেছেন মুশফিক। বরাবর ১০০তম ওভারে জুটির হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করে শান্ত-মুশফিক। ১০০.৪ ওভারে মুশফিকের চারে বাংলাদেশ চারশ রানের গণ্ডি স্পর্শ করে। ৫৩ বলে নিজের হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন শান্ত। ১০৬তম ওভারে মুশফিকুর রহিমের উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

ম্যাথু হামফ্রিসের বলে ফিরে যান তিনি। তার টার্ন করা ডেলিভারি ভুল লাইনে ডিফেন্স করেছিলেন মুশফিক। গালি অঞ্চলের কাছাকাছি ক্যাচ উঠে গেলে তা লুফে নেন অ্যান্ডি বালবির্নি। ফিরতে হয়ে মুশফিককে। ৫২ বলে তিনটি চারে ২৩ রান করেন এই ব্যাটার। মুশফিক ফেরায় শান্তর সঙ্গে তার ১০৩ বলে ৭৯ রানের জুটিটি ভাঙে। ১১৪.৪ ওভারে ৫৫ বলে জুটির পঞ্চাশ রান পূরণ করেন শান্ত ও লিটন। মুশফিক ধীরে সুস্থে খেলে ফিরে গেলেও উইকেটে এসে দ্রুত রান তোলেন লিটন। ১১৭.৩ ওভারে দলীয় পাঁচশ রান স্পর্শ করে বাংলাদেশ।

দলীয় পাঁচশ রানের একটু পরই ১৯তম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন লিটন। তিনি ফিরে যান ৬৬ বলে ৬০ রান করে। হামফ্রিসের টসড আপ ডেলিভারিতে উড়িয়ে মারতে গিয়ে লং অনে হ্যারি টেক্টরের মুঠোয় ধরা পড়েন লিটন। বলটি 'নো ম্যানস ল্যান্ডে' পরতো, যদিও দৌড়ে দিয়ে লাফিয়ে দারুণ একটি ক্যাচ নেন টেক্টর। লিটনের বিদায়ে ভাঙে ১০৭ বলে ৯৮ রানের জুটি। ৫২৩ রানে পঞ্চম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। অসাধারণ খেলতে থাকা শান্ত টেস্ট ক্যারিয়ারের অষ্টম সেঞ্চুরি তুলে নেন তখন। ১১২ বলে আসে তার এই সেঞ্চুরি।

সেঞ্চুরি করেই ফিরে যান শান্ত। অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইনের গুড লেংথে করা ডেলিভারি দারুণভাবে স্কিড করে। সেটি ফ্লিক করতে গিয়ে লাইন মিস করেন শান্ত। বল তার প্যাডে লাগে, আম্পায়ার আউট দেন। রিভিউ নিয়েও উইকেট বাঁচাতে পারেননি বাংলাদেশের অধিনায়ক। লেগ বিফোর উইকেটের শিকার হওয়ার আগে ১১৪ বলে ১০০ রান করেন তিনি। ইনিংসটি সাজানো ছিল ১৪টি চারে। ৫৪৫ রানে শান্তর উইকেট হারায় বাংলাদেশ। শেষপর্যন্ত ৫৮৭ রানে থামে বাংলাদেশ।

ব্যাটিংয়ে নেমে সুবিধা করতে পারেনি আইরিশরা। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে নাহিদ রানার গুড লেংথ ডেলিভারিতে বোল্ড হন ক্যাডে কারমাইকেল। আট বলে পাঁচ রান করেছেন তিনি। তাইজুলের বলে লিটন স্টাম্পিংয়ের সুযোগ হারান, সেই বলে স্টার্লিংকে রান আউট করে বাংলাদেশ। স্লিপে থাকা শান্ত বল ছুঁড়ে দিলে উইকেট ভাঙেন লিটন। স্টার্লিংয়ের ব্যাট লাইনের ওপর থাকায় টিভি আম্পায়ার আউট ঘোষণা করেন।

৬১ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় আয়ারল্যান্ড। স্টার্লিং করেন ৫৯ বলে ৪৩ রান। ইনিংসে ছিল সাতটি চার। ধৈর্য নিয়ে খেলতে থাকা টেক্টরকে ফেরালেন তাইজুল। হ্যারি টেক্টরকে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে ফেলেন তাইজুল। ফেরার আগে রিভিউ নষ্ট করেন টেক্টর। ৬৮ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় আয়ারল্যান্ড। টেক্টর ফিরে যান ১৮ রান করে। শেষ বিকেলে পাঁচ রান করা কার্টিস ক্যাম্ফার এবং ৯ রান করা টাকারকে ফেরান মুরাদ। টাকারকে এলবিডব্লিউ করেন তিনি, এক্সট্রা কাভারে ক্যাচ দেন ক্যাম্ফার। আয়ারল্যান্ড করে ২৯ ওভারে পাঁচ উইকেটে ৮৬ রান।

আরো পড়ুন: বাংলাদেশ