আফগানিস্তানকে হারিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জিতল বাংলাদেশ

আফগানিস্তান-বাংলাদেশ সিরিজ
নুরুল হাসান সোহান, ক্রিকফ্রেঞ্জি
নুরুল হাসান সোহান, ক্রিকফ্রেঞ্জি
ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে আফগানিস্তানকে দুই উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এই জয়ে তিন ম্যাচ সিরিজে একটি ম্যাচ বাকি থাকতেই জিতে নিয়েছে জাকের আলী অনিকের দল। প্রথম ম্যাচের মতো এই ম্যাচেও লক্ষ্য তাড়ায় হারের শঙ্কা তৈরি হয়েছিল বাংলাদেশের। আর এই ম্যাচেও স্নায়ুর চাপ সামলে টেল এন্ডারদের সহায়তায় বাংলাদেশকে ম্যাচ জেতান নুরুল হাসান সোহান।

লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি বাংলাদেশের। দুই ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম ও পারভেজ হোসেন ইমন দুজনই ফিরে যান এক অঙ্কের রান করে। দ্বিতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলেই ফিরে যান তানজিদ। আগের দিনের হাফ সেঞ্চুরিয়ানকে ফেরান আজমতউল্লাহ ওপরজাই।

তার পঞ্চম স্টাম্প তাক করা শর্ট লেংথ ডেলিভারিতে মিড অফে ক্যাচ দেন তানজিদ। ডাইভ দিয়ে তা লুফে নেন রশিদ খান। সাত বলে দুই রান করে ফিরেন তানজিদ। চতুর্থ ওভারের প্রথম বলেই ফের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ওমরজাইয়ের দারুণ এক গুড লেংথের বলে লেগ বিফোর উইকেটের শিকার হন ইমন। আগের ম্যাচের হাফ সেঞ্চুরিয়ানের ব্যাটে আসে পাঁচ বলে তিন রান।

পঞ্চম ওভারে ইনফর্ম সাইফ হাসানের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। মুজিবের বলে এক্সট্রা কাভারে উড়িয়ে মারতে গিয়ে সেদিকউল্লাহ আতালের মুঠোয় ধরা পড়েন সাইফ। ১৪ বলে ১৮ রান আসে তার ব্যাটে। পাওয়ার প্লে'তে তিন উইকেট হারানো বাংলাদেশ ছয় ওভারে তোলে ৩৭ রান।

দ্রুত ৩ উইকেট হারালেও জাকের আলী অনিক এবং শামীম পাটোয়ারির ব্যাটে জয়ের স্বপ্ন দেখে বাংলাদেশ। দশ ওভার শেষে তিন উইকেটে ৭৪ রান করে দলটি। যদিও ৮০ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। রশিদের বলে লেগ বিফোর উইকেটের শিকার হন জাকের।

তার গুগলি বুঝতে পারেননি বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক। ফেরার আগে ২৫ বলে ৩২ রান করেন জাকের। ইনিংসে ছিল দুটি ছক্কা এবং দুটি চারের মার। শামীমের সঙ্গে তার জুটিটি ছিল ৫৬ রানের। ১৩.৫ ওভারে দলীয় শতক পূরণ করে বাংলাদেশ। তারপর ১৫তম ওভারের দ্বিতীয় বলে ফিরে যান শামীম। নুর আহমেদের বলে কাভারে ধরা পড়েন শামীম। ২২ বলে তিনটি চার ও দুটি ছক্কায় ৩৩ রান করে বিদায় নেন তিনি।

১০২ রানে পাঁচ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ। সোহানকে গুরুত্বপূর্ণ সঙ্গ দিয়ে ফিরে গিয়ে সেই বিপদ বাড়ান নাসুম। ১৭তম ওভারে রশিদের শেষ বলে বোল্ড হন ১১ বলে একটি ছক্কায় ১০ রান করা এই ব্যাটার। ১৮তম ওভারে সাইফউদ্দিন (৪) ও রিশাদের (২) উইকেট হারায় বাংলাদেশ। দুজনকেই ফেরান ওমরজাই। সাইফউদ্দিন উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন, রিশাদ হন বোল্ড।

শেষ ২ ওভারে বাংলাদেশের দরকার ছিল ১৯ রান। ১৯তম ওভারের নুর আহমেদকে ছক্কা হাঁকান সোহান। সেই ওভারে শরিফুল ইসলামও চার হাঁকান। মোট ১৭ রান আসে সেই ওভারেই। পরের ওভারের প্রথম বলে ওমরজাইকে চার হাঁকিয়ে দলকে জয় এনে দেন শরিফুল। ছয় বলে দুটি চারে ১১ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। সঙ্গে সোহান অপরাজিত থাকেন ২১ বলে একটি চার ও তিনটি ছক্কায় ৩১ রান করে।

এই ম্যাচে টস জিতে আগে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক জাকের আলী। ব্যাট করতে নেমে রান তুলতে হাঁসফাঁস করছিলেন দুই আফগান ওপেনার সেদিকউল্লাহ অতল ও ইব্রাহীম জাদরান। পাওয়ার প্লেতে তারা উইকেট না হারালেও তুলতে পারে কেবল ৩৫ রান।

অষ্টম ওভারে সেদিকউল্লাহকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে প্রথম উইকেট এনে দেন রিশাদ হোসেন। আফগান এই ওপেনারের ব্যাট থেকে আসে ১৯ বলে ২৩ রান। এরপর ইব্রাহীমও ফিরে যান ৩৭ বলে ৩৮ রান করে। তিনি হন নাসুম আহমেদের শিকার।

এরপর দ্রুত আউট হন ওয়াফিউল্লাহ তারাখাইল। থিতু হতে পারেননি দারউইশ রাসুলী। শেষদিকে আজমতউল্লাহ ওমরজাই ও মোহাম্মদ নবি মিলে অবিচ্ছিন্ন ২৯ রানের জুটি গরে আফগানদের সংগ্রহ দেড়শর কাছে নিয়ে যান। নবি ১২ বলে ২০ ও ওমরজাই ১৭ বলে ১৯ রান করে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন।

বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে নাসুম ও রিশাদ নেন দুটি করে উইকেট। আর একটি উইকেট পান শরিফুল ইসলাম। মুস্তাফিজুর রহমান দারুণ বোলিং করলেও এদিন ছিলেন উইকেটশূন্য। তার বলে লং অফে ওমরজাইয়ের ক্যাচ ছাড়েন ইমন। নাহলে একটি উইকেট পেতে পারতেন তিনি।