বোলিং পরীক্ষায় আবারও ফেল সাকিব
ছবি: দুঃসময় পার করছেন সাকিব আল হাসান, ফাইল ফটো
আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী, অবৈধ বোলিং অ্যাকশনের ক্ষেত্রে টানা দুটি পরীক্ষায় অ্যাকশন ত্রুটিযুক্ত প্রমাণিত হলে সেই বোলারের পরের এক বছর কোনো পর্যায়ের ক্রিকেটেই আর বোলিং করতে পারার কথা নয়। সাকিব যেহেতু চেন্নাইয়েও ফেল করেছেন, সেক্ষেত্রে পরের এক বছর পর্যন্ত যেকোনো পর্যায়ের ক্রিকেটে তার বোলিং করতে পারার কথা নয়।
যদিও বিসিবির একটি সূত্র প্রথম আলোকে ভিন্ন একটি ব্যাখ্যাও দিয়েছে। সেটি হচ্ছে সাকিব আপাতত বোলিং করতে না পারলেও বোলিং অ্যাকশন ত্রুটিমুক্ত করতে কাজ চালিয়ে যেতে পারবেন। যে মুহূর্তে তার মনে হবে যে তিনি 'পরীক্ষা' দিতে প্রস্তুত, ঠিক সেই সময়ে আইসিসি অনুমোদিত কোনো সেন্টারে অ্যাকশনের পরীক্ষা দিতে পারবেন তিনি।
এক্ষেত্রে অ্যাকশনে ত্রুটি ধরা পড়লে পরের এক বছর বোলিং করতে পারবেন না এবং সেই সময়ে আর পরীক্ষাও দিতে পারবেন না। আরেকটি সূত্র বিসিবি থেকে জানিয়েছে, চেন্নাইয়ের পরীক্ষায় আসা ফেলের খবরটি সঠিক নাও হতে পারে। সেটি ‘টেকনিক্যাল এরর’ বা কারিগরি ত্রুটি থেকে হতে পারে। এমনটা হলে এই পরীক্ষার ফলাফল গণনা করা হবে না। তখন সাকিব আবারও ‘দ্বিতীয়’ পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ পাবেন।
গত আগস্টে পাকিস্তান সফর শেষ করে বাংলাদেশে না ফিরে সারের হয়ে একটি ম্যাচ খেলতে ইংল্যান্ডে গিয়েছিলেন সাকিব। কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপের ডিভিশন-ওয়ানের ম্যাচে সমারসেটের বিপক্ষে খেলে ভারত সফরের প্রস্তুতি নিয়েছিলেন তিনি। ২০১১-১২ মৌসুমের পর কাউন্টি ক্রিকেটে ফিরেই বল হাতে আলো ছড়িয়েছিলেন বাঁহাতি এই স্পিনার। প্রথম ইনিংসে ৪ উইকেট নেয়া সাকিব দ্বিতীয় ইনিংসে নিয়েছিলেন ৪ উইকেট।
ব্যাটিংয়ে ব্যর্থ হলেও সবমিলিয়ে ম্যাচে ১৯৩ রানে ৯ উইকেট নিয়ে ভারত সফরের প্রস্তুতিটা বেশ ভালোভাবেই নিয়েছিলেন তিনি। তবে ম্যাচ শেষের পরই দুঃসংবাদ পেতে হয় তাকে। ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো অবৈধ বোলিং অ্যাকশনের অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। ইংল্যান্ডের কাউন্টি, দ্য হান্ড্রেড কিংবা ইসিবির অধীনে যেকোন ম্যাচ খেলার ছাড়পত্র পেতে তাকে বোলিং অ্যাকশনের পরীক্ষা দিতে বলা হয়।
গত ডিসেম্বরের শুরুর দিকে ইংল্যান্ডের বার্মিংহামের অদূরের লাফবরো ইউনিভার্সিটির মেডিকেল বিভাগের কাছে পরীক্ষা দেন সাকিব। যেখানে বেশ কয়েক ওভার বোলিং করেছিলেন বাঁহাতি স্পিনার। শুরুর দিকে একটু জোরের উপর বোলিং করলেও পরবর্তীতে গতি কমিয়ে দেন তিনি। তবে সেখানকার পরীক্ষায় পাশ করতে পারেননি বাংলাদেশের এই অলরাউন্ডারের। এরপর গত ২১ ডিসেম্বর চেন্নাইয়ে দেওয়া বোলিং অ্যাকশন পরীক্ষায়ও পাশ করেননি তিনি।
বাঁহাতি এই স্পিনারের খারাপ সময় যেন পিছুই ছাড়ছে না। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন কিনে সবশেষ জাতীয় নির্বাচনে সংসদ সদস্য হয়েছিলেন তিনি। তবে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশে ফিরতে পারছেন না সাকিব। মিরপুরে সাউথ আফ্রিকা সিরিজের প্রথম টেস্ট খেলতে চাইলেও সরকার তাকে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতে রাজি হয়নি।
মূলত সাকিব যাতে দেশের হয়ে খেলতে না পারেন এবং দেশে ফিরতে না পারেন এমন দাবি তুলে আন্দোলন করেছিলেন ছাত্র-জনতা। মিরপুরে এমন আন্দোলনের পর থেকে জাতীয় দলের জার্সিতে দেখা যাচ্ছে না তাকে। এরপর থেকে বিদেশের বিভিন্ন বেনামি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ খেলেই দিন কাটছে তার। চলমান বিপিএলেও খেলা হচ্ছে না তার।