মোহামেডানকে হারিয়ে দুইয়ে বিজয়ের গাজী ক্রিকেটার্স

ছবি: অপরাজিত ১৪৯ রানের ইনিংস খেলে গাজী ক্রিকেটার্সের জয়ের নায়ক এনামুল হক বিজয়, ক্রিকফ্রেঞ্জি

গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের বিপক্ষে ৩৩৭ রানের লক্ষ্য তাড়ায় শুরুতেই জীবন পেয়েছিলেন তামিম ইকবাল। শেখ পারভেজ জীবনের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে ডাউন দ্য উইকেটে এসে খেলতে চাইলেও ব্যাটে-বলে করতে পারেননি বাঁহাতি এই ওপেনার। তবে বল লুফে নিতে না পারায় সুযোগ পেয়েও তামিমকে স্টাম্পিং করতে পারেননি বিজয়। জীবন পেয়ে আক্রমণাত্বক ব্যাটিং করতে থাকেন তামিম। চার-ছক্কায় ছিলেন হাফ সেঞ্চুরির পথেও।
১৮৩ রান করেও ৯৪ রানে জিতলেন বিজয়রা
১৫ মার্চ ২৫
যদিও মোহামেডানের অধিনায়ককে পঞ্চাশ ছুঁতে দেননি আবু হাশিম। বাঁহাতি স্পিনারের লেংথ ডেলিভারিতে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে লেগ বিফোর উইকেট হয়েছেন ৪৮ রান করা তামিম। তিনে নামা মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। হাশিমের বলে ওয়াসি সিদ্দিকীর হাতে ক্যাচ দিয়েছেন ৩ রান করা এই ব্যাটার। ৮০ রানে ২ উইকেট হারানোর পর জুটি গড়ে তোলেন রনি তালুকদার ও তাওহীদ হৃদয়।
তারা দুজনে মিলে ৮০ রানের জুটি গড়লেও প্রত্যাশা মিটিয়ে রান তুলতে পারেননি। দেখেশুনে ব্যাটিং করে ৬৩ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন রনি। সেঞ্চুরির পথে থাকলেও লিওন ইসলামকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে লং অনে ক্যাচ দিয়েছেন ৭৪ রানের ইনিংস খেলা ডানহাতি এই ওপেনার। একটু পর আব্দুল গাফফার সাকলাইনের দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড হয়েছেন হৃদয়। ৫২ বল খেলা হৃদয়ের ব্যাট থেকে এসেছে ৩৬ রান।
আরিফুল ইসলাম, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, মেহেদী হাসান মিরাজরা কেউই ব্যাট হাতে সুবিধা করতে পারেননি। শেষের দিকে মুশফিকুর রহিমের ৪৬ বলে ৪৯ রানের ইনিংস কেবল হারের ব্যবধান কমিয়েছে। মোহামেডান অল আউট হয়েছে ২৭১ রানে। গাজী ক্রিকেটার্সের হয়ে চার উইকেট নিয়েছেন পেসার আব্দুল গাফফার। এ ছাড়া স্পিনার হাশিম নিয়েছেন দুটি উইকেট।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে বিজয় ও সাদিকুরের ব্যাটে প্রত্যাশিত শুরুই পায় গাজী ক্রিকেটার্স। তাসকিন আহমেদ, নাসুম আহমেদ ও তাইজুল ইসলামদের দারুণভাবে সামলে পাওয়ার প্লেতে বিনা উইকেটে ৬৮ রান তোলেন তারা দুজন। দারুণ ছন্দে থাকা বিজয় সাবলীল ব্যাটিংয়ে ৫৪ বলে হাফ সেঞ্চুরি পেয়েছেন বিজয়। গাজী ক্রিকেটার্সের অধিনায়কের মতো পঞ্চাশ ছুঁয়েছেন সাদিকুরও। খানিকটা ধীরগতির ব্যাটিংয়ে ৬৫ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেছেন তিনি।

হাফ সেঞ্চুরির পর অবশ্য বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি সাদিকুর। ৭৫ বলে ৬০ রান করা ওপেনারকে ফিরিয়ে মোহামেডানকে প্রথম উইকেট এনে দেন তাসকিন আহমেদ। সাদিকুরের বিদায়ে ভেঙেছে ১৪১ রানের উদ্বোধনী জুটি। তিনে নেমে সুবিধা করতে পারেননি শোভন মোড়ল। পরবর্তীতে শামসুর রহমান শুভকে সঙ্গে নিয়ে দলের রান বাড়াতে থাকেন বিজয়। তাদের জুটিও ভেঙেছেন তাসকিন। ডানহাতি এই পেসারের দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড হয়েছেন ৩২ রান করা শামসুর।
অনাকাঙ্খিত সেঞ্চুরিতে তাসকিনের বিব্রতকর রেকর্ড
৮ ঘন্টা আগে
ডানহাতি ব্যাটার ফেরার একটু পর সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন বিজয়। তাসকিনের ফুলটস ডেলিভারিতে লং অনে ঠেলে দিয়ে ১২২ বলে সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন তিনি। চলমান ডিপিএলে এটি তার প্রথম সেঞ্চুরি। একশ ছোঁয়ার পর আক্রমণাত্বক ব্যাটিং করতে থাকেন বিজয়। তাকে দারুণভাবে সঙ্গ দেয়ার পাশাপাশি মোহামেডানের বোলারদের উপর তাণ্ডব চালাতে থাকেন তোফায়েল। তাসকিন, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনরা যেন বল ফেলার জায়গা খুঁজে পাচ্ছিলেন না।
বিকেএসপিতে চার-ছক্কায় মাত্র ২৪ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেছেন তোফায়েল। হাফ সেঞ্চুরির পর আরও বেশি আক্রমণাত্বক হতে গিয়ে তাসকিনের স্লোয়ার ডেলিভারিতে মিড অফের উপর দিয়ে খেলতে গিয়ে অঙ্কনকে ক্যাচ দিয়েছেন ২৯ বলে ৬৩ রান করা তোফায়েল। তবে সেঞ্চুরি করেও ১৪৯ রানে অপরাজিত ছিলেন বিজয়। অধিনায়কের সেঞ্চুরি, সাদিকুর ও তোফায়েলের হাফ সেঞ্চুরিতে ৩৩৬ রানের পুঁজি পায় গাজী ক্রিকেটার্স। মোহামেডানের হয়ে তিনটি উইকেট নিয়েছেন তাসকিন।
যদিও দিনটা ভুলে যেতে চাইবেন ডানহাতি এই পেসার। বিজয়দের বিপক্ষে ১০ ওভারে ৩ উইকেট নিতে ১০৭ রান খরচ করেছেন তাসকিন। ডিপিএলের লিস্ট ‘এ’ ভার্সন ও দেশের ক্রিকেটে সবচেয়ে খরুচে বোলিংয়ের রেকর্ড গড়েছেন তিনি। পেছনে ফেলেছেন ২০২৪ সালে ৯ ওভারে ১০৪ রান দেয়া ইকবাল হোসেনকে। ডিপিএলে তারা দুজনই কেবল একশর বেশি রান দিয়েছেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স- ৩৩৬/৫ (৫০ ওভার) (সাদিকুর ৬০, বিজয় ১৪৯*, তোফায়েল ৬৩; তাসকিন ৩/১০৭)
মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব- ৯৫/২ (১৭ ওভার) (তামিম ৪৮, রনি ৭৪, মুশফিক ৪৯; আব্দুল গাফফার ৪/৫৯)