অলরাউন্ডার মাশরাফিতে আবাহনীর দাপুটে জয়

ছবি:

ঢাকা প্রিমিয়ার লীগ (ডিপিএল) আসরের নবম ম্যাচে কলাবাগান ক্রীড়া চক্রকে ৩৬ রানে হারিয়েছে আবাহনী লিমিটেড। বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে আজ ডিপিএলের দ্বিতীয় রাউন্ডে মুখোমুখি হয়েছিলো দুই দল।
এদিন শুরুতে ব্যাটিং করে ৪৯.৫ ওভারে ২১৭ রানে অলআউট হয়ে যায় আবাহনী। এরপর ২১৮ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে আবাহনীর বোলারদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে মাত্র ১৮১ রানেই অলআউট হয়ে যায় কলাবাগান। ফলে দারুণ একটি জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে আবাহনী।
এই ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ঢাকা টেস্ট থেকে বাদ পড়া অলরাউন্ডার মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত আবাহনীর হয়ে অসাধারণ খেলেছেন। দলের বিপর্যয়ে ব্যাট হাতে ৪১ রানের একটি কার্যকরী ইনিংস খেলেন তিনি। মোসাদ্দেক ছাড়াও অসাধারণ খেলেছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজাও।
ব্যাট হাতে মাত্র ৫৪ বলে ৬৭ রান করেছেন তিনি। তরুণ ব্যাটসম্যান নাজমুল হাসান শান্তও পেয়েছেন অর্ধশতকের দেখা। তবে এই তিন ব্যাটসম্যানের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ের পরও অল্পতেই গুঁটিয়ে যেতে হয় আবাহনীকে। কেননা মোসাদ্দেক, মাশরাফি এবং শান্ত দারুণ ব্যাটিং করলেও বাকি ব্যাটসম্যানেরা ছিলেন অনেকটাই নিষ্প্রভ।
তবে ২১৮ রানের মামুলি লক্ষ্যে খেলতে নেমে বড় বিপদে পড়ে কলাবাগানও। ৩৩ রান তুলতেই ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা। তবে এরপর মোহাম্মদ আশরাফুল এবং তাইবুর রহমানের ব্যাটে কিছুটা স্বস্তি ফিরে পায় দলটি।
এই দুই ব্যাটসম্যানের ৪৭ রানের জুটিতে ৩ উইকেটেই ৮০ রান সংগ্রহ করে কলাবাগান। কিন্তু এরপর আশরাফুলকে নাসির হোসেনের হাতে ক্যাচ বানিয়ে সাজঘরে ফেরত পাঠান আবাহনীর স্পিনার সাকলাইন সজীব।

২৫ রান করে আশরাফুল ফিরলেও ব্যাটিংয়ে ২৩ রান নিয়ে অপরাজিত ছিলেন তাইবুর। কিন্তু তিনিও আর বেশীক্ষণ টিকতে পারেননি। দলীয় ১০৪ রানের মাথায় মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের বলে বোল্ড হয়ে ফিরতে হয়েছে তাঁকে (২৬)।
এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে হয়েছে কলাবাগানকে। শেষ পর্যন্ত ১৮১ রানেই গুঁটিয়ে যেতে হয় তাদের। আর এর পেছনে সবথেকে বড় অবদান রেখেছেন জাতীয় দলের দুই পেসার মাশরাফি বিন মর্তুজা এবং তাসকিন আহমেদ।
মাশরাফি মাত্র ৩৬ রানে নিয়েছেন ৪টি উইকেট। অপরদিকে তাসকিন ৩০ রানে শিকার করেছেন ৩ উইকেট। এছাড়াও একটি করে উইকেট নিয়েছেন মোসাদ্দেক হোসেন এবং সাকলাইন সজীব। কলাবাগানের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪০ রান করতে পেরেছেন মুক্তার আলি। এছাড়াও মাহমুদুল হাসান ৩৮, তাইবুর রহমান ২৬ এবং মোহাম্মদ আশরাফুল ২৫ রান করেন।
এর আগে দিনের শুরুতে আবাহনীকে অল্প রানে অলআউট করার মূল কৃতিত্ব ছিলো কলাবাগানের বোলারদের। কারণ এদিন টসে হেরে আবাহনী ব্যাটিং করতে নামার পর শুরু থেকেই দলটির ব্যাটসম্যানদের ওপর চড়াও হয়েছিলেন কলাবাগানের বোলাররা।
মাত্র ৪ রানের মাথায় সাইফ হাসান (০) ফিরে গেলে আনামুল হক বিজয় এবং নাজমুল হাসান শান্তর ব্যাটে কিছুদূর এগিয়ে যায় আবাহনী। কিন্তু দলীয় ৩৭ রানের সময় বিজয়কে ফিরিয়ে দিয়ে আবারো আবাহনীকে বিপদে ফেলেন শাহাদাত হোসেন। এরপর দলের রান একশত এর কোটা পার হওয়ার আগেই ৫ উইকেট হারিয়ে বসে নাসির হোসেনের দলটি।
১০৬ রানে আরেকটি উইকেট পতনের পর দলের হাল ধরেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত এবং জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। এই দুই ব্যাটসম্যান দারুণ ব্যাটিং করে জুটি গড়েন ৯৮ রানের। তবে দলকে দুইশত রানের কোটা পার করিয়ে ২০৩ রানে রান আউটের শিকার হয়ে ফিরতে হয় সৈকতকে।
সৈকত ফিরলে টিকতে পারেননি মাশরাফিও। যতিন সাক্সেনার বলে আউট হওয়ার আগে ৬৭ রানের দারুণ একটি ইনিংস খেলেন তিনি। এরপর আর বেশিদূর এগোতে পারেনি আবাহনী। শেষ পর্যন্ত ৪৯.৫ ওভারে ২১৭ রানে অলআউট হয়ে গেছে তারা।
কলাবাগানের পক্ষে ৯.৫ ওভার বোলিং করে ৪৭ রানে ৩ উইকেট শিকার করেন মুক্তার আলি। এছাড়াও ২টি করে উইকেট নিয়েছেন আবু হায়দার রনি, শাহাদাত হোসেন এবং ভারতীয় রিক্রুট যতিন সাক্সেনা।
আবাহনী লিমিটেড একাদশ-
আনামুল হক বিজয়, সাইফ হাসান, নাজমুল হাসান শান্ত, নাসির হোসেন, মোহাম্মদ মিথুন, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, শচীন রানা, মাশরাফি বিন মর্তুজা, সানজামুল ইসলাম, সাকলাইন সজীব, তাসকিন আহমেদ।
কলাবাগান ক্রীড়া চক্র একাদশ-
মোহাম্মদ আশরাফুল, তাসামুল হক, নাবিল সামাদ, আবুল হাসান, তাইবুর রহমান, জসীমউদ্দিন, সঞ্জিত সাহা, মাহমুদুল হাসান, শাহাদাত হোসেন, যতিন সাক্সেনা, মুক্তার আলি