সেখানেই বক্তব্য দেয়ার সময় এক পর্যায়ে আসিফ জানান, গোটা দেশে ফুটবলারদের কারণে ক্রিকেট খেলা যাচ্ছে না এবং জেলা স্টেডিয়ামগুলো ফুটবল দখল করে আছে। এজন্য ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) মারপিট করতে হলেও নিজেদের অধিকার আদায় করতে চান তিনি।
আসিফের এমন বক্তব্য ভালোভাবে নেননি জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলাররা। তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র প্রক্রিয়া জানান। আসিফের বক্তব্যে এবার ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনও (বাফুফে)। বাফুফে সভাপতি তাবিথ আওয়াল গত সোমবার বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল বরাবর একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন।
এবার সেই চিঠির জবাব দিয়েছেন বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল। তিনি জানিয়েছেন আসিফ জেলা ক্রীড়া সংস্থার পক্ষ থেকে এমন মন্তব্য করেছেন। এটা একান্তই তার ব্যক্তিগত। তবে এই বিভ্রান্তির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন বুলবুল। জানিয়েছেন দেশের ফুটবল ও ক্রিকেটের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা, সৌহার্দ্য ও সহযোগিতার পরিবেশ বজায় রাখতে চান তারা।
বিসিবির পাঠানো চিঠি হুবহু তুলে ধরা হলো ক্রিকফ্রেঞ্জির পাঠকদের জন্য-
বর্ণিত বিষয় ও সূত্রে উল্লেখিত পত্রের আলোকে আপনার সদয় অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড-এর গেইম ডেভেলপমেন্ট কমিটি কর্তৃক সম্প্রতি আয়োজিত দুই দিনব্যাপী বাংলাদেশ ক্রিকেট কনফারেন্স ২০২৫ ছিল কেবলমাত্র ক্রিকেট বিষয়ক একটি আয়োজন, যেখানে দেশের ক্রিকেটের উন্নয়ন, বিকেন্দ্রীকরণ ও জেলা পর্যায়ে ক্রিকেট কার্যক্রম শক্তিশালী করার বিষয়ে আলোচনা হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে জেলা ও বিভাগের বিসিবি কাউন্সিলর, জেলা ক্রীড়া কর্মকর্তা, মহিলা উদ্যোক্তা এবং জেলা ও বিভাগীয় ক্রিকেট কোচবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ ক্রিকেট কনফারেন্স ২০২৫ অনুষ্ঠানে যে তথাকথিত বক্তব্যটি নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে, সেই বক্তব্যটি তিনি প্রদান করেছিলেন জেলা প্রতিনিধিত্বকারী কাউন্সিলর হিসেবে, একজন বোর্ড পরিচালক হিসেবে নয়। আমার জানা মতে, তিনি তাঁর নিজ জেলার ক্রিকেট কার্যক্রম ও মাঠ ব্যবহার সংক্রান্ত কিছু দীর্ঘদিনের হতাশা ও জটিলতা থেকে ব্যক্তিগত ক্ষোভের প্রেক্ষিতে সম্ভবত উক্ত বক্তব্য প্রদান করেছেন।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে, কোনো ব্যক্তির ব্যক্তিগত মতামত কখনোই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের অবস্থানকে প্রতিফলিত করে না। আপনার অবগতির জন্য আমি সুদৃঢ়ভাবে আরো জানাতে চাই যে, বাংলাদেশ ক্রিকেট কনফারেন্স ২০২৫-এ প্রদানকৃত বক্তব্যটি ছিল সম্পূর্ণ তাঁর ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি এবং সেটিকে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের বক্তব্য হিসেবে বিবেচনা করা সঙ্গত হবে না। যদি উক্ত বক্তব্যের কারণে ফুটবল পরিবার বা ভক্তদের মনে কোনো ধরনের আঘাত বা বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়ে থাকে, তার জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি।
বাংলাদেশে ক্রিকেট ও ফুটবল-উভয় খেলাই জাতির গর্বের প্রতীক। দেশের ক্রীড়া উন্নয়নে ফুটবলের অবদান অনস্বীকার্য, এবং আমরা ক্রিকেট বোর্ড হিসেবে সবসময়ই চাই, বাংলাদেশের সকল খেলাধুলা পারস্পরিক সম্মান, সহযোগিতা ও ঐক্যের মাধ্যমে এগিয়ে যাক। এছাড়াও, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড সবসময়ই বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন এবং দেশের ফুটবল খেলোয়াড়দের উন্নয়নে পূর্ণ সমর্থন দিয়ে এসেছে, এবং ভবিষ্যতেও তাহা অব্যাহত থাকবে।
আমরা বিশ্বাস করি, খেলাধুলা একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বিতা নয়, বরং ঐক্যের মাধ্যম। সেই বিশ্বাসেই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড দেশের সকল ক্রীড়া সংস্থার সঙ্গে পারস্পরিক শ্রদ্ধা, সৌহার্দ্য ও সহযোগিতার পরিবেশ বজায় রাখতে অঙ্গীকারাবদ্ধ।
