এই নারী ক্রিকেটের দাবি অসংখ্যবার বিসিবিকে এসব যৌন হয়রানির কথা অভিযোগ আকারে জানিয়েছেন তিনি। কিন্তু কোন প্রতিকার পাননি। এবার জাহানারার সাক্ষাৎকারটি নজরে এসেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি)। তারা এই ঘটনার তদন্তে একটি কমিটি গঠন করছে এবং সেই কমিটি আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে নিজেদের চূড়ান্ত তদন্ত রিপোর্ট জমা দেবে। এমনটাই জানানো হয়েছে বিসিবির এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে।
যদিও বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবালের চাওয়া জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ বা সরকারী পর্যায়ে তদন্ত হোক এই ঘটনার। যেখানে থাকবেন না বিসিবি সংশ্লিষ্ট কেউ। এর ফলে পক্ষপাতের কোনো সুযোগ থাকবে না বলে মনে করেন তিনি। এর আগে নিগার সুলতানা জ্যোতির বিরুদ্ধে ক্রিকেটারদের মারধরের অভিযোগ করেছিলেন জাহানারা। তবে সেই বিষয়টি তদন্ত ছাড়াই উড়িয়ে দিয়েছিল বিসিবি। তামিম সেই ঘটনারও তদন্ত চান।
তামিম ইকবালের পুরো স্ট্যাটাসটি তুলে ধরা হলো-
জাহানারা আলম যে অভিযোগগুলো তুলেছেন, সবগুলোই গুরুতর এবং সেসব সত্যি হলে তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়ার মতো নয়। শুধু একজন জাতীয় ক্রিকেটার বা সাবেক অধিনায়ক বলেই নয়, যে কোনো পর্যায়ের ক্রিকেটার হোক বা যে কোনো খেলার ক্রীড়াবিদ কিংবা যে কোনো নারী, কারো প্রতিই এমন আচরণ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
বিসিবি একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বটে। তবে আমি মনে করি, এসব অভিযোগ খতিয়ে দেখতে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ কিংবা সরকারী পর্যায়ে একটি স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন করা উচিত, যেখানে বিসিবি সংশ্লিষ্ট কেউ থাকবেন না, যাতে বিন্দুমাত্র পক্ষপাতের সুযোগ না থাকে। যত দ্রুত সম্ভব এই কমিটি গঠন করা উচিত ও সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ব্যাপারটিকে দেখা উচিত। দ্রুততার সঙ্গে তদন্ত শেষ করে দোষী যে-ই হোক, যার যতটুকু দায় থাকুক, উপযুক্ত ও দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
কয়েকদিন আগে জাতীয় দলের পরিবেশ নিয়েও জাহানারা কিছু অভিযোগ করেছেন, যা বিসিবি পরে উড়িয়ে দিয়েছে। একজন ক্রিকেটার যখন দল নিয়ে এত গুরুতর অভিযোগ করেন, সেসব অবশ্যই খতিয়ে দেখা উচিত। কিন্তু যাচাই না করেই বিসিবি যেভাবে অতি দ্রুত উড়িয়ে দিয়েছে, কখনোই তা কাম্য নয়।
জাহানারার অভিযাগের পর আরও বেশ কিছু ঘটনার কথা জানতে পারছি নানা মাধ্যমে। আমি প্রতিটি নারী ক্রিকেটারকে অনুরোধ করব, যারা নানা সময়ে এসব ঘটনার শিকার হয়েছেন, সেটা সরাসরি হোক বা আকারে-ইঙ্গিতে, যে কোনোভাবে হেনস্তার শিকার হয়েছে, সবাই মুখ খুলবেন এবং সাহস নিয়ে এগিয়ে আসবেন। দেশের ক্রিকেট তথা ক্রীড়াঙ্গনের স্বার্থে, বর্তমান আর ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বার্থে এটা প্রয়োজন। কথা দিচ্ছি, আমাকে ও আমাদেরকে আপনাদের পাশে পাবেন।
জাহানারার অভিযোগগুলোর প্রেক্ষিতে যথাযথ ব্যবস্থা যদি না নেওয়া যায়, যদি ন্যায়বিচার নিশ্চিত না করা যায়, তাহলে ভবিষ্যতে কোনো মেয়ে ক্রিকেট বা যে কোনো খেলায় আসতে ভয় পাবে, খেলাকে পেশা হিসেবে বেছে নিতে পিছপা হবে। আমরা সেটা হতে দিতে পারি না।