বিজয়-লিটনদের ব্যর্থতায় বাংলাদেশের হতাশার দিন

ছবি: ক্রিকফ্রেঞ্জি

স্কোয়াডে সাদমান ও বিজয়ের বাইরে ব্যাকআপ ওপেনার না থাকায় এক প্রকার বাধ্য হয়েই খেলাতে হয়েছে তাকে। গলে যেভাবে শেষ করেছিলেন কলম্বোতেও বিজয় শুরু করলেন সেভাবেই। মানে, ধুঁকতে ধুঁকতে নিজের উইকেট বিলিয়ে দিয়ে। উইকেটে থাকা বেশিরভাগ সময়ই হাঁসফাঁস করছিলেন বাংলাদেশের ওপেনার। ১০ বলে ফিরলেন আরও একবার রানের খাতা না খুলেই। বিজয়ের মতো দিনটা খারাপ গেছে বাংলাদেশের ব্যাটিং ইউনিটেরই। ক’জন ভালো শুরু পেলেও লিটন দাস, মুশফিকুর রহিম, মুমিনুল হকরা কেউই ইনিংস বড় করতে পারেননি। যার ফলে বাংলাদেশের প্রথম দিনটা শেষ হয়েছে ৮ উইকেটে ২২০ রান তুলে।
প্রথম ইনিংসে ২৭০-২৮০ রান চায় বাংলাদেশ
২ ঘন্টা আগে
কলম্বোর সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠে টস জিতে শুরুটা ভালো করতে পারেনি বাংলাদেশ। গল টেস্টে ব্যর্থ হওয়া এনামুল হক বিজয় ইনিংসের শুরু থেকেই ব্যাট হাতে ধুঁকছিলেন। স্বাচ্ছন্দ্যে খেলতে না পেরে শেষ পর্যন্ত নিজের উইকেট দিয়ে গেছেন বাংলাদেশের এই ওপেনার। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে আসিথা ফার্নান্দোর লেংথ ডেলিভারিতে ইনসাইজ হয়ে বোল্ড হয়েছেন বিজয়। ১০ বল খেলেও রানের খাতা খুলতে পারেননি তিনি। যদিও তৃতীয় ওভারেই ফিরতে পারতেন ডানহাতি এই ওপেনার। আসিথার বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিলেও সেটা লুফে নিতে পারেননি কুশল মেন্ডিস।
বিজয়কে হারানোর পর শুরুর ধাক্কা সামাল দেয়ার চেষ্টা করেন সাদমান ইসলাম ও মুমিনুল হক। তারা দুজনেই সাবধানী ব্যাটিং করতে থাকেন। ইনিংসের ১১তম ওভারে অবশ্য ফিরতে পারতেন তারা দুজনই। থারিন্দু রত্নায়েকের বলে রান বাড়ানোর চেষ্টায় জীবন পেয়েছেন বাংলাদেশের দুই ব্যাটার। একটু পরই অবশ্য মুমিনুলকে ফিরিয়েছেন ধনঞ্জয়া ডি সিলভা। শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক বল হাতে নিয়েই বাঁহাতি ব্যাটারের উইকেট তুলে নেন। ধনঞ্জয়ার অফ স্টাম্পের বাইরের ঝুলিয়ে দেয়া ডেলিভারিতে কভারের উপর দিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন মুমিনুল।
ফিল্ডারের সোজাসুজি যাওয়ায় পবন রত্নায়েকের ক্যাচে ফিরতে হয় ৩৯ বলে ২১ রান করা অভিজ্ঞ ব্যাটারকে। আউট হওয়ার আগেই অবশ্য সাকিব আল হাসানকে ছাড়িয়ে গেছেন তিনি। ৪ হাজার ৬১২ রান নিয়ে টেস্টে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি রান সংগ্রাহকের তালিকায় মুশফিকুর রহিম ও তামিম ইকবালের পরেই আছেন মুমিনুল। আর কোন উইকেট না হারিয়ে প্রথম সেশনের খেলা শেষ করেন সাদমান ও শান্ত। লাঞ্চ থেকে ফিরেই আউট হয়েছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক। বিশ্ব ফার্নান্দোর অফ স্টাম্পের বাইরের বলে এজ হয়ে উইকেটকিপার মেন্ডিসকে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি।

১৫ বছরেও কলম্বোতে এমন উইকেট দেখেননি লঙ্কান ব্যাটিং কোচ
৩ ঘন্টা আগে
গলের দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরি করা শান্ত কলম্বোতে প্রথম ইনিংসে আউট হয়েছেন মাত্র ৮ রানে। দারুণ ছন্দে থাকা সাদমান ফিরেছেন হাফ সেঞ্চুরির আগেই। থারিন্দুর অফ স্টাম্পের বাইরের বলে চড়াও হতে গিয়ে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি। মেন্ডিসের গ্লাভসে বল প্রথম স্লিপে গেলে দারুণ ক্যাচ নেন ধনঞ্জয়া। ৯৩ বলে ৪৬ রান করেছেন সাদমান। একশর আগেই বাংলাদেশ ৪ উইকেট হারালে কলম্বোতে হানা দেয় বৃষ্টি। প্রায় দেড় ঘণ্টা খেলা বন্ধ থাকার পর আবারও ব্যাটিংয়ে নামেন মুশফিক ও লিটন। ৭৬ রানে ৪ উইকেট বাংলাদেশের হাল ধরেন তারা দুজন।
যদিও মুশফিক ফিরতে পারতেন বৃষ্টি শেষে খেলা শুরু হওয়ার ৮ বলের মাথায়। থারিন্দুর চতুর্থ বলে স্লগ সুইপ করে চার মারতে চেয়েছিলেন তিনি। ডিপ স্কয়ার লেগে ফিল্ডার থাকলেও লাহিরু উদারা সীমানা থেকে একটু সামনে এগিয়ে ছিলেন। যার ফলে মাথার উপর দিয়ে যাওয়া ক্যাচ নিতে পারেননি উদারা, চার পেয়ে যান মুশফিক। জীবন পাওয়ার পর দেখেশুনেই খেলছিলেন তিনি। জীবন পান আরেক ব্যাটার লিটনও। প্রবাথ জয়াসুরিয়ার বলে ক্যাচ তুলে দিলেও সেটা লুফে নিতে পারেননি তিনি। যদিও পরের ওভারেই আউট হয়েছেন ডানহাতি এই ব্যাটার।
সোনাল দিনুশার অফ স্টাম্পের বাইরের বলে কাট করতে গিয়ে চা-বিরতির আউট হয়েছেন লিটন। উইকেটকিপার মেন্ডিস কয়েক দফায় চেষ্টার পর ক্যাচ নিলে লিটনকে ফিরতে ৫৬ বলে ৩৪ রান করে। ডানহাতি ব্যাটারের বিদায়ে ভেঙেছে মুশফিকের সঙ্গে ৬৭ রানের জুটি। চা-বিরতির পর দ্রুতই আউট হয়েছেন মুশফিকও। যেই স্লগ সুইপে জীবন পেয়েছেন সেই শটেই ফিরেছেন তিনি। দিনুশার বলে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে ফার্নান্দোর হাতে ক্যাচ দিয়েছেন ৭৫ বলে ৩৫ রান করা মুশফিক।
জুটি গড়ার চেষ্টা করলেও দলের রান দুইশ হওয়ার আগেই ফিরেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। বিশ্ব ফার্নান্দোর অফ স্টাম্পের বাইরের গুড লেংথ ডেলিভারিতে জায়গায় দাঁড়িয়ে ড্রাইভ করার চেষ্টায় এজ হয়ে স্লিপে কামিন্দু মেন্ডিসকে ক্যাচ দিয়েছেন। অসুস্থতা শেষে একাদশে ফেরা মিরাজ আউট হয়েছেন ৩১ রানে। বাংলাদেশের রান বাড়ানোর চেষ্টায় থাকা নাঈমকে ২৫ রানে বোল্ড করেছেন আসিথা। পরবর্তীতে তাইজুল ইসলাম ও ইবাদত হোসেন মিলে দিনের খেলা শেষ করেছেন। শ্রীলঙ্কার হয়ে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন দিনুশা, আসিথা ও বিশ্ব ফার্নান্দো।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ (প্রথম ইনিংস)— ২২০/৮ (৭১ ওভার) (সাদমান ৪৬, বিজয় ০, মুমিনুল ২১, শান্ত ৮, মুশফিক ৩৫, লিটন ৩৪, মিরাজ ৩১, নাঈম ২৫; দিনুশা ২/২২, বিশ্ব ফার্নান্দো ২/৩৫, আসিথা ২/৪৩)