নাঈমের ৫ উইকেট, বাংলাদেশের লিড দুইশ ছুঁইছুঁই

তৃতীয় দিনে হাফ সেঞ্চুরিয়ান দীনেশ চান্দিমালকে ফিরিয়ে শুরু করেছিলেন। বাংলাদেশের প্রয়োজনে নাঈম আউট করেছেন কামিন্দু মেন্ডিস, ধনঞ্জয়া ডি সিলভা, থারিন্দু রত্নায়েকে এবং আসিথা ফার্নান্দোকে। ৪৩.২ ওভারে ১২১ রানে নিয়েছেন ৫ উইকেট। নাঈমের ওমন বোলিংয়েই শ্রীলঙ্কাকে ৪৮৫ রানে আটকে দিয়ে প্রথম ইনিংসে ১০ রানের লিড নেয় বাংলাদেশ। লিড নেয়ার পর ব্যাটিংয়ে দাপট দেখিয়েছেন সাদমান ইসলাম ও নাজমুল হোসেন শান্ত। তাদের দুজনের ব্যাটেই চতুর্থ দিন শেষে ৩ উইকেটে ১৭৭ রান তুলেছে সফরকারীরা। শ্রীলঙ্কার চেয়ে ১৮৭ রানে এগিয়ে থেকে শেষ দিনে ব্যাটিংয়ে নামবেন শান্ত ও মুশফিকুর রহিম।

আরো পড়ুন

বাংলাদেশের জেতার জন্য যাওয়ার সুযোগ আছে, মনে করেন নাঈম

১ ঘন্টা আগে

গলের উইকেটে ব্যাটারদের জন্য বাড়তি সুবিধা থাকায় প্রথম তিন দিনে মুশফিক, শান্ত, লিটন দাস, পাথুম নিশাঙ্কা, কামিন্দুরা সবাই বড় রানের দেখা পেয়েছেন। তবে সেই ইনিংসে ১০ বলে খেলেও রানের খাতা খুলতে পারেননি এনামুল হক বিজয়। প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও হাসেনি বিজয়ের ব্যাট। প্রবাথ জয়াসুরিয়ার অফ স্টাম্পে পড়ে টার্ন করে বেরিয়ে যাওয়া ডেলিভারিতে খোঁচা মেরে নিজের উইকেট বিলিয়ে দিয়েছেন তিনি।

ঘরোয়া ক্রিকেটে রানের বন্যা বইয়ে দিলেও জাতীয় দলে ফিরে এখন পর্যন্ত বলার মতো কিছু করতে পারেননি বিজয়। প্রথম ইনিংসের মতো এদিনও ভালো শুরুই পেয়েছিলেন মুমিনুল হক। তবে বাংলাদেশের অভিজ্ঞ ব্যাটারকে বেশিক্ষণ টিকতে দেননি থারিন্দু রত্নায়েকে। ডানহাতি অফ স্পিনারের বলে সুইপ করতে গিয়ে টপ এজ হয়ে শর্ট পয়েন্টে থাকা লাহিরু উদারাকে ক্যাচ দিয়েছেন। মুমিনুলের ব্যাট থেকে এসেছে ৪০ বলে ১৪ রান। একটু পর চা বিরতি থেকে ফিরে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন সাদমান।

থারিন্দুর বলে ডিপ কভারে ঠেলে সিঙ্গেল নিয়ে ৭০ বলে পঞ্চাশ ছুঁয়েছেন বাঁহাতি এই ওপেনার। তাকে দারুণভাবে সঙ্গ দিয়েছেন শান্ত। দারুণ ব্যাটিংয়ে সেঞ্চুরির পথেই ছিলেন সাদমান। তবে শেষ বিকেলে সাদমানকে সেঞ্চুরি বঞ্চিত করে জুটি ভাঙেন মিলান রত্নায়েকে। ডানহাতি পেসারের ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিতে লেগ বিফোর উইকেট হয়েছেন ১২৬ বলে ৭৬ রানের ইনিংস খেলে। দিনের খেলা শেষের আগে ১০৬ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেন শান্ত। দিন শেষে অপরাজিত ৫৬ রানে। মুশফিক ব্যাটিংয়ে নামবেন ২২ রান নিয়ে।

এর আগে ৪ উইকেটে ৩৬৮ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে নেমে দিনের শুরুতেই উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। ইনিংসের ৯৬তম ওভারে নাঈমের লেগ স্টাম্পের বাইরে দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া বলে খোঁচা মেরে উইকেটকিপার লিটনকে ক্যাচ দিয়েছেন ধনঞ্জয়া। শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক ফেরেন ৩৬ বলে ১৯ রান করে। ধনঞ্জয়ার বিদায়ে ভাঙে কামিন্দু মেন্ডিসের সঙ্গে ৪৬ রানের জুটি। একটু পর আউট হয়েছেন কুশল মেন্ডিসও। লঙ্কান উইকেটকিপার ব্যাটারকে সুবিধা করতে দেননি হাসান মাহমুদ।

আরো পড়ুন

সকালে বাংলাদেশকে অল আউট করে ‍দুই সেশনে জিততে চায় শ্রীলঙ্কা

৪ মিনিট আগে

ডানহাতি পেসারের লেগ স্টাম্পের বাইরে দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া ডেলিভারিতে ফাইন লেগ দিয়ে খেলার চেষ্টা করলেন মেন্ডিস। তবে ব্যাটের কানা ছুঁয়ে বল যখন বেরিয়ে যাচ্ছিল তখন বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে দুর্দান্ত এক ক্যাচ নেন লিটন। ১৭ বল খেলা ডানহাতি ব্যাটারকে ফিরতে হয় মাত্র ৫ রানে। সকালের শুরুতে দ্রুত দুই উইকেট হারানোর পর হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন কামিন্দু। ৮৬ বলে পঞ্চাশ ছোঁয়া বাঁহাতি ব্যাটার মিলান রত্নায়েকে সঙ্গে নিয়ে শ্রীলঙ্কার রান বাড়াতে থাকেন। প্রথম সেশনের বাকি সময় অনায়সে পার করেছেন তারা দুজন।

লাঞ্চ থেকে ফেরার পর বাংলাদেশকে সাফল্য এনে দেন হাসান। ডানহাতি পেসারের খানিকটা নিচু হওয়ায় লেংথ ডেলিভারিতে পুল করতে গিয়ে বলের লাইন মিস করে বোল্ড হয়েছেন মিলান। ৩৮ রান করা বাঁহাতি ব্যাটারকে ফিরিয়ে ভাঙেন কামিন্দুর সঙ্গে ৮৪ রানের জুটি। দারুণ ব্যাটিংয়ে সেঞ্চুরির পথেই ছিলেন কামিন্দু। তবে অফ স্পিনার নাঈম লঙ্কান ব্যাটারকে সেঞ্চুরি করতে দেননি। ডানহাতি স্পিনারের অফ স্টাম্পে পড়ে বেরিয়ে যাওয়া ডেলিভারিতে এজ হয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি। উইকেটকিপার লিটনও দারুণ এক ক্যাচ নিতে ভুল করেননি।

সেঞ্চুরির আশায় ব্যাটিং করতে থাকা কামিন্দু ফেরেন ১৪৮ বলে ৮৭ রানের ইনিংস খেলে। রানের খাতা খোলার আগে আউট হয়েছেন থারিন্দুও। লাঞ্চ শেষে ১০ বলের মধ্যে ৩ উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচের লাগাম টেনে ধরে বাংলাদেশ। শেষ ব্যাটার হিসেবে আসিথাকে বোল্ড করে শ্রীলঙ্কাকে ৪৮৫ রানে থামিয়ে দেয় সফরকারীরা। আসিথাকে ফিরিয়ে ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়েছেন নাঈম। ক্যারিয়ারে চতুর্থ এবং শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দ্বিতীয়বারের মতো ৫ উইকেট পেয়েছেন তিনি। নাঈমের ওমন বোলিংয়েই প্রথম ইনিংসে ১০ রানের লিড পায় বাংলাদেশ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর—

বাংলাদেশ (প্রথম ইনিংস)— ৪৯৫/১০ (১৫৩.৪ ওভার) (শান্ত ১৪৮, মুশফিক ১৬৩, লিটন ৯০; আসিথা ৪/৮৬, মিলান ৩/৩৯)

শ্রীলঙ্কা (প্রথম ইনিংস)— ৪৮৫/১০ (১৩১.২ ওভার) (নিশাঙ্কা ১৮৭, উদারা ২৯, চান্দিমাল ৫৪, ম্যাথিউস ৩৯, ধনঞ্জয়া ১৯, কামিন্দু ৮৭, মিলান ৩৯; নাঈম ১২১/৫)

বাংলাদেশ (দ্বিতীয় ইনিংস)— ১৭৭/৩ (৫৭ ওভার) (বিজয় ৪, সাদমান ৭৬, শান্ত ৫৬*, মুমিনুল ১৪, মুশফিক ২২*)