বিপিএলের রাজা বনে গেলেন মাশরাফিরা

ছবি:

ম্যাচের প্রথমার্ধে ক্রিস গেইল বুঝিয়ে দিয়েছিলেন কেন তিনি টি-টুয়েন্টি ক্রিকেটের রাজা। দ্বিতীয়ার্ধে মাশরাফি বিন মুর্তজা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন তিনিই বিপিএলের রাজা। বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নামা ঢাকাকে ভালো শুরু করতেই হতো।মাশরাফি সেটা হতে দিলেন না।
বল হাতে উইকেট নেয়ার পর ক্যাচ লুফে নিয়েছেন ঢাকার ট্রাম্প কার্ড এভিন লুইসের ক্যাচ। অন্যদিকে প্রতিপক্ষ দলের কাপ্তান সাকিব হাতছাড়া করেছেন ম্যাচ সেরা ক্রিস গেইলের সহজ ক্যাচ। ম্যাচের বাঁক সেখানেই বদলে গিয়েছিল। যা রংপুরকে প্রথমবারের মত এবং মাশরাফিকে চতুর্থবারের মত বিপিএল শিরোপা এনে দেয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল।
কঠিন পুঁজি সামনে নিয়ে খেলতে নামা ঢাকা ইনিংসের প্রথম ওভারেই মেহেদি মারুফকে হারিয়ে বসে। লেন্থ বলে লেগ বিফরের ফাঁদে ফেলেন মাশরাফি। পরের ওভারে বড় ধাক্কা খায় রংপুর। সোহাগ গাজির অফ স্পিনে ০ রানে সাজঘরে ফিরে যান জো ডেনলি। টানা দুই উইকেট পতনে দলের হাল ধরে ক্রিজে আসেন সাকিব আল হাসান।
তবে রংপুরের ভয়ের কারন ছিলেন এভিন লুইস। বাউন্ডারি হাঁকিয়ে বড় ইনিংসের হুমকি দিচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু চতুর্থ ওভারে গাজির বোলিংয়ে বাউন্ডারির হাঁকানোর নেশায় টাইমিংয়ে গড়বড় করে বসেন লুইস। লং অন থেকে পেছনে দৌড়ে এসে অবিশ্বাস্য ক্যাচ ধরে বসেন মাশরাফি। লুইসকে সাজঘরে ফিরিয়ে পুরো মিরপুর স্টেডিয়ামের সাথে উল্লাসে মাতেন মাশরাফিরা।
উল্লাসের মাত্রা আরেক ধাপ বাড়িয়ে দেন রুবেল হোসাইন। ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার আগে কাইরন পোলার্ডকে বাউন্সারে পরাস্ত করেন তিনি। ৩৩ রানেই চার উইকেট দলে পরিনত হওয়া ঢাকাকে পথে ফেরানোর চেস্টা করে যান সাকিব ও নতুন ব্যাটসম্যান জহুরুল। তবে ভাগ্য সহায় হয়নি সাকিবের। নাজমুলের বাঁহাতি স্পিনকে স্কুপ করতে গিয়ে বোল্ড হন তিনি।

আউট হওয়ার আগে ২৬ রানের সম্ভাবনাময় ইনিংস খেলেন তিনি। বাড়ন্ত রান রেটের চাপে দ্রুত সাজঘরে ফিরে যান মোসাদ্দেক ও আফ্রিদিও। উইকেট হারিয়ে ঢাকার ব্যাটিং অর্ডার তখন রীতিমত কোণঠাসা। ঢাকার ইনিংসের মাঝ পথেই জয়ের সুবাস পেতে থাকে রংপুর। তবে ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়েও ফিফটি পূর্ণ করেন ঢাকার মিডেল অর্ডার ব্যাটসম্যান জহুরুল।
৫০ রানের ইনিংসটি শুধু পরাজয়ের ব্যবধানই কমাতে পেরেছে। শেষ পর্যন্ত ১৪৯/৯ রান তুলতে সক্ষম হয়েছে ঢাকা। ৫৭ রানের বড় ব্যবধানের জয় নিয়েই মাঠ ছেড়েছে টম মুডি ও মাশরাফির দল রংপুর।
এর আগে বিপিএলের ফাইনালের লড়াইয়ে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে ২০ ওভারে ২০৬/১ সালের বড় পুঁজি গড়ে রংপুর। শুরুতে দেখেশুনে খেললেও শেষের দিকে গেইল ও ম্যাককালামের দেড়শ রানের জুটিতে দুইশ ছাড়ানো স্কোর পায় মাশরাফিরা। এক ক্রিস গেইলের ব্যাট থেকেই এসেছে অপরাজিত ১৪৬ রানের অবিশ্বাস্য ইনিংস। ৫১ রানে অপরাজিত ছিলেন ম্যাককালাম।
ঢাকা ডাইনামাইটস একাদশ-
মেহেদী মারুফ, এভিন লুইস, জো ডেনলি, কাইরন পোলার্ড, সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), শহীদ আফ্রিদি, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, সুনীল নারীন, জহুরুল ইসলাম (উইকেট রক্ষক), আবু হায়দার রনি, খালেদ আহমেদ।
রংপুর রাইডার্স একাদশ-
জনসন চার্লস, ক্রিস গেইল, ব্র্যান্ডন ম্যাককালাম, রবি বোপারা, মাশরাফি বিন মর্তুজা (অধিনায়ক), মোহাম্মদ মিথুন, নাহিদুল ইসলাম, সোহাগ গাজী, রুবেল হোসেন, নাজমুল ইসলাম, ইসুরু উদানা।